শিবগঞ্জে সৌদি আরবের খেজুর চাষ করে বছরে ৫০ লাখ টাকা উপার্জনের স্বপ্ন দেখছেন এক যুবক। কিছুটা সফলও হয়েছেন। সে যুবক হলো উপাজেলার দাইপুখুরিয়া ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের মৃত ইনসান আলির ছেলে মোশারফ হোসেন(৩০)সরজমিনে গিয়ে মোশারফে সাথে কথা হয় এ প্রতিবেদকের।তিনি জানান মোবাইলে ইউটিউবে খেজুর বাগান সম্পর্কে জেনে আমার মনে আগ্রহ জাগলে প্রথমে বিভি স্থান থেকে আজুযা,মরিয়ম সহ বিভিন্ন জাতের কেজি প্রতি পাঁচ ও ছয় হাজার টাকা দরে চার হাজার সৌদি খেজুরের বীজ সংগ্রহ করে নার্সারী তৈরী করেছিলাম। তারপর গ্রামের একজনের নিকট হতে বিঘা প্রতি বছরে ১৪ হাজার দরে ্এক বিঘা ১২জমি বর্গা নিয়ে সেখান সেখান থেকে ৩৪শ টি চারা লাগিয়ে ১৩৫০ টি চারা টিকেছিল। তাতে ১৮ মাস পর ১৩৫০গাছের মধ্যে ২০০টিতে ফল এসেছিল এক থেকে ১১টি পর্যন্ত। কিন্তু সে বছর এসিড বৃষ্টি হওয়ায় সমস্ত ফল নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। মাত্র ২৯টি খেজুর ফল পেয়েছিল। এভাবে ২০১৯ ২৫ সেপ্টেম্বর সৌদি খেজুরের বাগান তৈরীর কাজ শুরু করে এখ পর্যন্ত বাগানের পরিধি করে যাচ্ছি। বর্তমানে ১০ বিঘা জমির ওপর পাঁচ হাজার খেজুর গাছ আছে। বর্তমানে তার বাগানে থোকায় থোকায় ঝুলছে বিখ্যাত আজোয়া, মরিয়ম, দাবাস, বারিহী, চেগিসহ অন্তত ১০ জাতের খেজুর।
তিনি ২০২২ সালে প্রায় ২০০ কেজি খেজুর পেয়েছিলেন যা গড়ে ১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রী করে দুই লাখ টাকা পেয়েছিলেন।গত পেয়েছিলেন প্রায় সাড়ে পাঁচ শ কেজি খেজুর।যা এক হাজার টাকা দরে বিক্রী করে পেয়েছি প্রায় চার লাখ টাক এবং প্রায় এক হাজার খেজুর মানুষের মাঝে বিতরণ করেছেন। আমের রাজধানী শিবগঞ্জে খেজুরের বাগান করতে গিয়ে প্রথমে অনেকে ঠাট্টা তামাশা করলে বর্তমানে ফলন দেখে সবার ধারণা পাল্টে গেছে। জেলা ও জেলা বাহির থেকে অনেক ব্যক্তি তার নিকট হতে বিভিন্ন জাতের খেজুরের চারা কিনে নিয়ে যাচ্ছে। চারা গুলি নিম্নে পাঁচ শ টাকা থেকে উর্দ্ধে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
মোশারফ হোসেন জানান, আমার নিজ হাতে তৈরী করা শুধু চারা বিক্রি করে বাগানের যাবতীর খরচ চলে। এ পর্যন্ত প্রায় ৩০ লাখ খরচ করেছি। তিনি বলেন খেজুর পচন শীর নয়। তাই অনেকদিন রেখেও বিক্রী করা যায়। এ ক্ষেত্রে আমি আমার বিদেশী বন্ধু ও কৃষি অফিসারদের সাথে পরামর্শ করি। মোশারফের স্বপ্ন আগামী ছয় বছর পর আমার খেজুর বাগান থেকে প্রতিবছর ৫০ লাখ উপার্জন হবে। তিনি বলেন আমি প্রথমে লোকসান করলেও হতাশ হয়নি। কারণ আমি জানি খেজুরের বাগানে দেরীতেই সুফল পাওয়া যায়। তিনি আরো জানান,বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ হলেও এবং আমি নতুন করে জেলায় প্রথম খেজুর চাষ করলে এপর্যন্ত কোন কৃষি প্রণোদনা পাইন। তবে, একটি ক্রেস্ট ও একটি সনদ পেয়েছি। কৃষি অফিসারগণ মাঝে মাঝে আমাকে পরামর্শ দেন। জেলা ও উপজেলা কৃষি অফিসারগণ আমার বাগান প রিদর্শন করেছেন। আমার বাগানে পাঁচ জন লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে এবং ভবিষ্যতে আারো বেশী লোকের সংস্থান হবে। এলাকার লোকজন জানান আমরা প্রথমে মোশারফকে ঠাট্টা করলে বর্তমানে তিনি একজন সফল খেজুর চাষী। মোশারফ আমাদের এলাকার গর্ব।
এ বিষযে শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার সুনাইন বিন জাম্মান বলেন,মোশারফ হোসেন বৃহত্তর রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় প্রথম খেজুর চাষী। বর্তমানে একজন সফল খেজুর চাষী। তিনি ভবিষ্যতে সফল হতে পারেন। তিনি আরো জানান খেজুর চাষে কোন ধরনের কৃষি প্রনোদণা দেয়ার নিযম নাই। তবে কৃষি বিভাগের জেলা ও বিভাগীয় উর্দ্ধতন কর্তৃ পক্ষ মোসারফের খেজুর বাগান পরিদর্শন করেছেন। যদি পুরাপুরি খেজুর চাষে সফল হতে পারে এবং চাষীর সংখ্যা বাড়ে তবে প্রণোদনা দেয়ার চেষ্টা করা হবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক ড. পলাশ সরকার বলেন, সৌদি খেজুর চাঁপাইনবাবগঞ্জ সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে চাষাবাদ করা সম্ভব তা প্রমান হয়েছে খেজুর চাষী মোশারফের মাধ্যমে। তবে খেজুর চাষ একটু কষ্টকর। বাষের পুর্বে ভালভাবে জমি চাষ করতে হয়। মাটিকে বেলে মাটিতে রুপান্তর করতে হয়।