নারীরা সর্বজয়া,আবারো তা মনে করিয়ে দিয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের আতাহার রাধুনিডাঙ্গা এলাকার ইতি খাতুন। স্বামী মামলায় জড়িয়ে বেশ কিছুদিন থেকে জেলে, সংসারের দায়িত্ব পড়েছে ইতির উপরই। ছোট ছোট দুই মেয়েসহ পরিবারের সদস্যদের দুবেলা খাবার তুলে দিতে, নিজেই চালাচ্ছেন অটোরিকশা। শখের বসে অটো রিকশা চালানো শিখেছিলেন, সেই শিক্ষায় এ বিপদের দিনে সবচেয়ে বড় অবলম্বন হয়ে দাঁড়িয়েছে ইতির কাছে। সকালে ঘরের কাজ শেষ করে দেড় বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে বের হন ইতি। এরপর যাত্রীর জন্য অপেক্ষা। যাত্রী পেলে ছুটে চলেন গন্তব্যে। অটো চালানোর সময় তার পাশে বসে বাচ্চাকে সামলায় ইতিরই এক ছোট বোন। সন্ধ্যায় অটোরিকশা চালানো শেষে বাড়ি ফিরে যান ইতি। সংগ্রামী ইতির প্রতিদিনের রুটিন এখন এমনই। সংসার চালানোর পাশাপাশি, ঋণে কেনা অটো রিকশার কিন্তি পরিশোধ, জেলখানায় থাকা স্বামীর মুক্তির চেষ্টা সবই করতে হচ্ছে তাকে বলছেন স্থানীয়রা।
আতাহার এলাকার মফিজুল ইসলাম বলেন, মেয়েটা সংসারের জন্য অটো নিয়ে বের হয়েছে, কষ্ট হচ্ছে তবে কারো কাছে হাত না পেতে নিজে কর্ম করছে এটা ভালো সিদ্ধান্ত তার। ইতি খাতুন বলেন, যদি অটো কিনার ঋণের কিস্তি না থাকতো তাহলে অটোটা ভাড়া দিতাম, কিন্তু ভাড়া দিয়ে দেড়শো থেকে দুইশো পাব, ওই দিয়ে কি করে কিস্তি দিব, আর কি করে সংসার চালাব। অটোর ব্যাটারির ২০ হাজার টাকাও ধার আছে, সেটাও শোধ করতে হবে। তাই বাধ্য হয়েই অটো নিয়ে বের হয়েছি। কোন কাজই ছোট নয়, সৎ ভাবে অটো চালিয়ে সংসার চালাতে পারছি এটায় আমার কাছে দিন শেষে প্রাপ্তি। পরিবারের প্রতি দায়িত্ববোধের উদাহরণ হয়ে রইবে ইতির এমন মনোবল।