এই চিত্রটি হলো রাজধানী ঢাকার ফুলবাড়িয়ায় অবস্থিত সরকারি কর্মজীবী হাসপাতালের নীচ তলার একমাত্র কমন বাথরুমের চিত্র।
হাসপাতালটিতে মাত্র দুটি টয়লেট থাকলেও একইভাবে চরম অস্বাস্থ্যকর ও বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে তাতে। এতে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, হাসপাতালটির টয়লেট দুটির মধ্যে একটিতে হাই কমোড ও অন্যটি লো কমোডের। হাইকমোডের টয়লেটে ঢুকলেই যে কারোর বমি আসার অবস্থা হয়ে যেতে পারে। কারণ দীর্ঘদিনের পুরানো কমোডটি কতদিন আগে পরিষ্কার করা হয়ে তা প্রশ্নের বিষয়। কারণ কমোডটিতে সবসময় মলমূত্র লেগে সাদা কমোড অনেকটা লালচে হয়ে গেছে। আর দুর্গন্ধতো আছেই। আরও উল্লেখের বিষয় হলো কমোডের পেছন পাশের জানালায় টিস্যু ও অন্যান্য সামগ্রী জমে স্তুপ হয়ে আছে। মেঝেতেও একই অবস্থা। সব মিলিয়ে টয়লেটটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে আছে।
অন্যদিকে লোকমোডের টয়লেটটির সমস্যার অন্য নেই। সেখানে পানির কোন ব্যবস্হা নেই। দুটি বেসিন আছে কিন্ত তা অকেজো হয়ে পড়ে আছে। নেই পানির কোন অস্তিত্ব।
সরকারি এ হাসপাতালের টয়লেট দুটির এই করুন চিত্র সেখানকার প্রশাসনিক অবস্থ্যাপনাই ফুটে উঠেছে বলে মনে করেন ভুক্তভোগীরা। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন তারা।
উল্লেখ্য, ঢাকার ফুলবাড়িয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ রেলওয়ে হাসপাতালটি ১৯৭৮ সালে সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে রূপান্তরিত হয়। স্বল্প পরিসরের এ হাসপাতালে গণকর্মচারীদের আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত না হওয়ায় আধুনিক উন্নত সকল সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন একটি হাসপাতাল তৈরির জন্য সরকারি কর্মচারীদের পক্ষ থেকে জোর দাবী উত্থাপিত হয়। ১৯৯৬-২০০১ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় থাকাকালে আধুনিক ও মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকল্পে এ হাসপাতালটিকে আধুনিকায়নসহ ৫০ শয্যা থেকে ১৫০ শয্যায় উন্নীতকরণের প্রতিশ্রুতি দেন। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর তা বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী পুনরায় নির্দেশনা প্রদান করেন। তার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ সরকারের নিজ অর্থায়নে ২.০৩ একর জমির উপর ৪৬৭৬.৪৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১৫০ শয্যা বিশিষ্ট উন্নত আধুনিক সকল সুবিধা সম্বলিত সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে।
সরকারি কর্মচারী হাসপাতালটি সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ ও তাদের পোষ্যদের আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত উন্নততর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গত ৪ আগষ্ট ২০১৩ তারিখে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় হতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব হস্তান্তর করা হয় এবং ২৮ আগষ্ট ২০১৩ তারিখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি কর্মচারী হাসপাতালটি শুভ উদ্বোধন করেন। সে প্রেক্ষিতে বর্তমানে হাসপাতালটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সার্বিক পরিচালিত হচ্ছে।
গত ১২ মার্চ ২০১৯ এ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ECNEC এর সভায় সরকারি কর্মচারী হাসপাতালকে ৪ তলা থেকে ১৬ তলা এবং ১৫০ শয্যা থেকে ৫০০ শয্যায় উন্নীতকরনের প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন। ৫০০ শয্যায় উন্নীতকরণের প্রকল্পের কাজ চলমান।