প্রায় এক কোটি টাকার সহায়তা নিয়ে ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়িয়েছে জাতীয় সেবা সংস্থা ‘হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি অব বাংলাদেশ’ (টিম এইচ সি এস বি)। বাংলাদেশ থেকে এবারই প্রথম কোনো জাতীয় সংস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে সহায়তা নিয়ে ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ালো।
জানা যায়, গত ১৯ নভেম্বর মঙ্গলবার মিশর সফরে গেছেন সংস্থাটির ছয় সদস্যের একটি টিম। এই টিমে আছেন সংস্থার পরিচালক নওমুসলিম মুহাম্মদ রাজ, নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি ডক্টর মশিউর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ইবরাহিম খলিল, স্বাস্থ্য বিষয়ক সহ পরিচালক মাওলানা ইমরান নাফিস এবং ঢাকা পল্টন সেগুনবাগিচা ইমাম খতিব পরিষদের কার্য নির্বাহী সভাপতি মুফতী তাওহিদুল ইসলাম।
ছয় দিনের এই সফরে মিশরের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়া ফিলিস্তিনিদের সহায়তা দেয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সেবা সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে গাযা ও খান ইউনিসেও সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছেন তাঁরা।
কায়রোতে ফিলিস্তিন ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাত
মিশর সফরে বিশাল কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২১ নভেম্বর কায়রোতে অবস্থিত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত জনাব দিয়াব আল্লু স্যারের সঙ্গে দেখা করেন হাফেজ্জী চ্যারিটেবলের দায়িত্বশীলরা। রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দীর্ঘ তিন ঘণ্টার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সাক্ষাতে তাঁরা বাংলাদেশের তরফ থেকে ফিলিস্তিনের নিপীড়িত মানুষের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রদূত জানান, ২০২৩ সনের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ১ লক্ষ ২০ হাজার ফিলিস্তিনি মিশরের শরণার্থী হিসাবে আশ্রয় নেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই আহত। অনেকেই ক্যান্সারে আক্রান্ত। মিশরে সীমাহীন কষ্টে দিনাতিপাত করছেন তারা।
এরপর হাফেজ্জী চ্যারিটেবলের দায়িত্বশীলরা দেখা করেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জনাবা শামিমা নাজ এর সঙ্গে। তিনি তাদের মিশরে সেবা কার্যক্রমে সব রকমের সহযোগিতাসহ এই মহতি কার্যক্রমে তাদের সঙ্গে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
গাযা ও খান ইউনিসে ২০ হাজার ডলারের সহযোগিতা!
মাজলুমদের মাঝে বাজার, খাদ্য সামগ্রী ও পানি বিতরণের জন্য ২০ হাজার ডলার সহযোগিতা মিশর থেকে পাঠানো হয়েছে। সেখানকার কার্যক্রমের আদ্যোপান্ত আপডেট ভিডিও আকারে তারা তাদের পেইজ ও ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবেন।
শরণার্থীদের ১০ লাখ টাকার সহায়তা
হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি অব বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিন এম্বেসি ও তাদের টিমের সহায়তায় ২০০ ফিলিস্তিনি শরনার্থীর মাঝে নগদ ১২ লাখ টাকা প্রদান করেন তারা। এরপর ধাপে ধাপে মিশরে ফিলিস্তিনি মাজলুমদের সহযোগিতা মূলক কার্যক্রমসহ গাযা ও খান ইউনিসে চলমান থাকবে।
অন্যান্য কার্যক্রম
হাফেজ্জী চ্যারিটেবলের এই সহায়তা নতুন কিছু নয়। আরও আগেই মিশরের ‘রেট ক্রিসেন্ট হাসপাতাল’ এবং ‘মাহাদ নাসির হাসপাতালে’ বহু রোগীকে চিকিৎসা সহায়তা দিয়েছে হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি। এই সফরে নগদ অর্থ বিতরণের পাশাপাশি আহত ও রোগীদের লক্ষ লক্ষ টাকার চিকিৎসা সহায়তা, আল আজহারের ফিলিস্তিনী শিক্ষার্থীদের তিন লাখ টাকা, দারিদ্র বিমোচনে ১০ লক্ষ টাকার সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
এছাড়াও মিশরের শরণার্থী শিবিরে পাঁচ লাখ টাকার খাবার ও পানি বিতরণ করা হচ্ছে এবং পাঁচ লাখ টাকা ব্যয়ে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে।
চলমান থাকবে সহায়তা কার্যক্রম
ফিলিস্তিনের যে সঙ্কট, তাতে এই কার্যক্রম নিতান্তই সামান্য। সঙ্কট যতদিন না কাটছে, ততদিন অব্যাহত থাকবে হাফেজ্জী চ্যারিটেবলের সহায়তা কার্যক্রম।
উল্লেখ্য, হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (টিম এইচ সি এস বি) সরকারী নিবন্ধনভূক্ত (নিবন্ধন নং- S13879/22) একটি অলাভজনক এবং অরাজনৈতিক সেবা সংস্থা।