রাজধানীর খিলক্ষেতে আশিয়ান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় নবজাতক ও মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। সিজারের পর তাদেরকে মৃত ঘোষণা করে চিকিৎসকরা। এ বিষয়ে খিলক্ষেত থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার।
মৃত মা শিখা আক্তারের ছোট ভাই শিপন হোসাইন শুক্রবার বোন হারানোর শোক প্রকাশ করে গণমাধ্যমকে জানান, সন্তান জন্মদানের উদ্দেশ্যে গত বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় আমার গর্ভবতী বোন শিখা আক্তারকে। আমার বোনের কোনো সমস্যা ছিল না। গর্ভবতী নারীদের স্বাভাবিক যে সমস্যাগুলো থাকে এমনই ছিল। চিকিৎসকও বলেছিলেন তেমন কোনো জটিলতা নেই। নরমালে বাবু হবে। পরে হঠাৎ তাঁরা (চিকিৎসক) সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে সিজারের কথা জানায়। অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার সময় আমার বোনটা কান্না করে সবার কাছে মাফ চাচ্ছিলেন। তখনো বুঝতে পারি নাই তাঁকে একেবারে নিয়ে যাচ্ছে। পরে সিজারের দীর্ঘ সময় পর পরিবারকে জানানো হয় মা ও নবজাতক দুজনই মারা গেছেন। এটি কোনো স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। চিকিৎসকের অবহেলার কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে।
শিখার স্বামী ওসমান বলেন, হাসপাতালে নেওয়ার পর কোনো ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই তাঁরা শুরুতে বলেছিলেন নরমাল ডেলিভারি হবে। পরে হঠাৎ করে আবার বলে সিজার করা লাগবে। তখন একটা ইনজেকশন দিয়ে দেয়। অপারেশন করার প্রস্তুতি নিলেও তাঁরা এক ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থাও করতে বলেনি। পরে বলে রক্ত ছিল না, এটা সেটা নানান কথা বলে। এসব মিথ্যা। তাদের ভুল চিকিৎসায় আমার স্ত্রী-সন্তান মারা গেছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
শিখার ছোট ভাই শিপন হোসাইন বলেন, আমরা পূর্বাচল ২৬ নম্বর সেক্টরে থাকি। আমার বোনকে পাশেই ১২ নম্বর সেক্টরে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। বুধবার তার প্রথম বাবু হবে শুনে অনেক আনন্দ নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। কিন্তু বোনকে এভাবে মেরে ফেলা হবে ভাবতে পারিনি।
তিনি বলেন, আপুকে ডাক্তার ফারহানা ম্যাডাম দেখছিলেন। তিনি বলেছিলেন কোনো সমস্যা নাই। পরে এমনটা হলো। এর সঠিক বিচার আমরা চাই।
এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোন বক্তব্য গণমাধ্যম জানতে পারেনি। তবে খিলক্ষেত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুন্সি সাব্বির আহমেদ বলেন, এই ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা নেওয়া হয়েছে। তদন্ত চলছে। পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বজলুর রহমান বলেন, ‘আমি শুক্রবার হাসপাতালে গিয়েছিলাম। কিন্তু মালিক পর্যায়ের কাউকে পাইনি। আগামীকাল (শনিবার) আবার যাব।