দীর্ঘ প্রায় তিন বছর বন্ধ থাকার পর খুলতে যাচ্ছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। এ বিষয়ে স্থানীয় সময় রোববার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় পুত্রজায়ায় বাংলাদেশের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) সই হওয়ার কথা রয়েছে।
এই সমঝোতা চুক্তি সই করতে রোববার ভোর ৫টায় মালয়েশিয়ায় পৌঁছেছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। তাকে স্বাগত জানাতে মালয়েশিয়া বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার, শ্রম কাউন্সিলর মো. জহিরুল ইসলাম, শ্রম কাউন্সিলর (দ্বিতীয়) মো. হেদায়েতুল ইসলাম মন্ডল ও মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগের ও কমিউনিটি নেতারা।
এ সময় মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ওহিদুর রহমান ওহিদ, কামরুজ্জামান কামাল, রাশেদ বাদল, মনিরুজ্জামান মনির, এ কামাল চৌধূরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, মালয়েশিয়ার পক্ষে দেশটির মানবসম্পদমন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারাভানান এবং বাংলাদেশের পক্ষে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ চুক্তিতে সই করবেন।
গত ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে অনুমোদন দেয় মালয়েশিয়া। দেশটির সব সেক্টরে কর্মী নেওয়ার অনুমোদন দেয় মালয়েশিয়ার মন্ত্রিপরিষদ। বিশেষ করে গৃহকর্মী, বাগান, কৃষি, উৎপাদন, পরিষেবা, খনি ও খনন এবং নির্মাণ খাতে বাংলাদেশি কর্মী নেবে দেশটি।
গত শুক্রবার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি মালয়েশিয়ার সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে পুরো ডিটেইলস এখন জানা যাবে না। একটা বিষয় আছে যে, ডকুমেন্ট স্বাক্ষর না হওয়া পর্যন্ত এটার ডিটেইলগুলো কিন্তু জানানোর কথা নয়। আমি যা বলব, ভাসা ভাসা বলব। স্বাক্ষর করার পর জিজ্ঞাসা করলে ডকুমেন্টে কী আছে, তা আমি বলব। কারণ, দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা, এখানে কিন্তু কনফিডেন্সিয়ালিটির একটা বিষয় আছে।
রিক্রুটিং এজেন্সি, দালালের প্রতারণা ও সিন্ডিকেট বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা জানি, অতীতে অনেক কিছু হয়েছে। মন্ত্রিত্ব পাওয়ার পর থেকে এই অতীতকে দূর করার চেষ্টা করে এসেছি। আমি কিন্তু কোনো সিন্ডিকেটের পক্ষপাতী নই। এর মধ্যেই আমাদের কানে চলে আসে যে আমরা কত কিছু করছি। কে পয়সা কোথায় খাচ্ছে, কে দুবাইতে গিয়ে পয়সা খাচ্ছে। এর মধ্যে আমার নামও আসছে। এ ধরনের রিউমার পুরো প্রক্রিয়াকে বিতর্কিত করার জন্য করা হয়। কোনো ধরনের গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানান ইমরান আহমদ।
মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পর নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান বদলানো যাবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, যেই দেশ মানুষ নেবে, সেই দেশের আইন মোতাবেক চলতে হবে। ওরা অনুমতি দেবে কি না- সেটা ওদের ব্যাপার। যদি অনুমতি না দেয়, আমার যদি পছন্দ না হয়, তাহলে আমি যাব না। মালয়েশিয়ায় যাওয়ার খরচ এখনও নির্ধারণ করা হয়নি- জানিয়ে তিনি বলেন, আগে যা লাগত, তার চেয়ে অনেক কম খরচ নেওয়া হবে। ওমানসহ কয়েকটি দেশে শ্রমিকদের পাসপোর্ট নবায়ন না হওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে এ বিষয়ে সরাসরি লিখিত অভিযোগ করতে ভুক্তভোগীদের পরামর্শ দেন প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী।
মালয়েশিয়ার বাজার চালু হলে বিএমইটির ডাটাব্যাংক থেকে কর্মী পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন। তিনি বলেন, শুধু মালয়েশিয়া না, অদূর ভবিষ্যতে সব কর্মী ডাটাব্যাংক থেকে যাবে। মালয়েশিয়া দিয়ে সেটা শুরু হবে বলে আশা করছি।