এবারের বেগম রোকেয়া দিবসে নারীর ক্ষমতায়ন ও অগ্রগতিতে ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে দেশের পাঁচ নারী পেলেন বেগম রোকেয়া পদক।
আজ বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) রোকেয়া দিবসের অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই পদক বিতরণ করেন।
ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী যুক্ত হন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে। তার পক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা পদক তুলে দেন।
পদকপ্রাপ্তদের চার লাখ টাকার চেক, রেপ্লিকাসহ একটি ১৮ ক্যারেট মানের ২৫ গ্রাম ওজনের স্বর্ণ পদক এবং সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়।
সূত্রমতে, এবার নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখায় কুমিল্লা জেলার শামসুন্নাহার রহমান পরাণ এবার মরোণোত্তর রোকেয়া পদক পেয়েছেন। নারী শিক্ষায় অধ্যাপক হাসিনা জাকারিয়া বেলা এবং নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় ভূমিকার জন্য যশোর জেলার অর্চনা বিশ্বাস পেয়েছেন এ পদক।
সাহিত্য ও সংস্কৃতির মাধ্যমে নারী জাগরণে ভূমিকার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও রোকেয়া হলের প্রভোস্ট জিনাত হুদা এবং পল্লী উন্নয়নে ভূমিকার জন্য কুষ্টিয়ার গবেষক সারিয়া সুলতানাকে রোকেয়া পদক প্রদান করা হয়েছে।
রোকেয়া দিবস ও পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার সাখাওয়াত হোসনের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকীতে তার অবদান স্মরণ করে প্রতিবছর এ পুরস্কার দেয় বাংলাদেশ সরকার। বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের ১৩৬তম জন্ম ও ৮৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। প্রতিবছর দিনটি বেগম রোকেয়া দিবস হিসেবে পালন করা হয়। সমাজের অন্ধ গোঁড়ামি থেকে নারীকে মুক্ত করতে সংগ্রাম করেছেন তিনি। আজকের এই দিনটিতে তাঁকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাণী দিয়েছেন।
১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বেগম রোকেয়া। ১৯৩২ সালের একই দিনে কলকাতার সোদপুরে তার মৃত্যু হয়।
উইকিপিডিয়া সূত্রমতে, রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন সাধারণত বেগমরোকেয়া নামে অধিক পরিচিত। বেগম রোকেয়া হলেন একজন বাঙালি চিন্তাবিদ, প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, সাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারক। তিনি বাঙালি মুসলিম নারী জাগরণের অগ্রদূত এবং প্রথম বাঙালি নারীবাদী। ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে বিবিসি বাংলার 'সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি' জরিপে ষষ্ঠ নির্বাচিত হয়েছিলেন বেগম রোকেয়া। ছোটগল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস, বিজ্ঞান কল্পকাহিনী ও শ্লেষাত্মক রচনায় রোকেয়ার স্টাইল ছিল স্বকীয় বৈশিষ্ট্যমন্ডিত। উদ্ভাবনা, যুক্তিবাদিতা এবং কৌতুকপ্রিয়তা তার রচনার সহজাত বৈশিষ্ট্য। তার প্রবন্ধের বিষয় ছিল ব্যাপক ও বিস্তৃত। বিজ্ঞান সম্পর্কেও তার অনুসন্ধিৎসার পরিচয় পাওয়া যায় বিভিন্ন রচনায়।
মতিচূর প্রবন্ধগ্রন্থে রোকেয়া নারী-পুরুষের সমকক্ষতার যুক্তি দিয়ে নারীদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক স্বাবলম্বিতা অর্জন করে সম-অধিকার প্রতিষ্ঠায় আহ্বান জানিয়েছেন এবং শিক্ষার অভাবকে নারীপশ্চাৎপদতার কারণ বলেছেন। তার সুলতানার স্বপ্ন নারীবাদী ইউটোপিয়ান সাহিত্যের ক্লাসিক নিদর্শন বলে বিবেচিত। পদ্মরাগ তার রচিত উপন্যাস। অবরোধ-বাসিনীতে তিনি অবরোধপ্রথাকে বিদ্রূপবাণে জর্জরিত করেছেন।