আজ (৫ ডিসেম্বর) বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে সরকারিভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘মাটিকে সজীব রাখুন, মাটির জীববৈচিত্র্য রক্ষা করুন’। বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, পৃথিবীর জীববৈচিত্র্যের প্রায় এক-চতুর্থাংশের আবাসস্থল হচ্ছে মাটি। সুস্থ মাটির একটি অপরিহার্য উপাদান হচ্ছে মাটির জীববৈচিত্র্য। বিজ্ঞানের ভাষায় মাটির জীববৈচিত্র্য হলো মাটিতে বসবাসকারী উদ্ভিদ, প্রাণী ও অণুজীবসহ জীবসম্ভার এবং সেগুলোর সমন্বয় গঠিত বাস্তুতন্ত্র। মাটিতে বসবাসকারী অসংখ্য অণুজীব, ছত্রাক, প্রটোজোয়া ইত্যাদি মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
বর্তমান সময়ে মাটির জীববৈচিত্র্যতা হ্রাস একটি উদ্বেগের বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতে মাটির উর্বরতা শক্তিও হ্রাস পাচ্ছে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা পূরণে নিবিড় চাষাবাদ, অপরিকল্পিতভাবে কৃষিজমি ব্যবহার, শিল্প-কলকারখানার সম্প্রসারণ, নগরায়ন ইত্যাদি কারণে মাটির জীববৈচিত্র্য দিনদিন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই আসুন, আমরা সবাই মিলে মাটিকে ভালোবেসে মাটির যত্ন করি, মাটির জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করি। আমি আশা করি, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট দেশের ক্রমহ্রাসমান ভূমি ও মৃত্তিকা সম্পদের যৌক্তিক ও লাভজনক ব্যবহার নিশ্চিতকরণে নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে আরও সক্রিয় হবে।
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, মাটির স্বাস্থ্যের সঙ্গে মানবস্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিবিড়। নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের জন্য প্রয়োজন টেকসই মৃত্তিকা ব্যবস্থাপনা। বাংলাদেশের কৃষি এখন খরপোশ কৃষি থেকে বাণিজ্যিক কৃষিতে উত্তরণের ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি উৎপাদিত কৃষি পণ্যের গুণাগুণ বজায় রাখতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, মাটির জীববৈচিত্র্য রক্ষা করে এর উর্বরতা বজায় রাখা দেশের ভবিষ্যৎ কৃষি উৎপাদনের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ। পরিবর্তিত বৈশ্বিক জলবায়ু পরিস্থিতিতে টেকসই কৃষি উৎপাদনের ধারা অব্যাহত রাখা ও মাটির জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস উপলক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে 'সেমিনার, শোকেসিং, সয়েল কেয়ার অ্যাওয়ার্ড-২০২১, সয়েল অলিম্পিয়াড ও বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস পুরস্কার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
সকাল ১০ টায় হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপি ছাড়াও বিশেষ অতিথি থাকবেনপরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী।
সূত্রমতে, উদ্ভিদের জন্ম-বৃদ্ধিতে ও মানবকল্যাণে মৃত্তিকার গুরুত্বকে স্বীকৃতি দিতেই বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস নির্ধারণ করা হয়েছে। মৃত্তিকার সঠিক পরিচর্যার গুরুত্ব বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য মৃত্তিকা বিজ্ঞানের আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন (আইইউএসএস) ২০০২ সালে বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস পালনের প্রস্তাব উত্থাপন করে। পরে এটি জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য সংস্থার অনুমোদন লাভের পর প্রতিবছর ৫ ডিসেম্বর বিশ্বব্যাপী দিবসটি উদযাপিত হয়।