রাজধানীতে প্রায়ই ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। দিনে-রাতের যেকোন সময়ই ছোটবড় দুর্ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। তবে অন্য সময়ের তুলনায় রাতেই সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে বলে এক জরিপে উঠে এসেছে। গতকাল রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
তথ্য অনুযায়ী চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত রাজধানীতে ১১৪ সড়ক দুর্ঘটনায় ১১৯ জন নিহত হয়েছেন।
এর মধ্যে পথচারী ৬২ জন, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ৩৩ জন এবং অন্যান্য যানবাহনের (বাস, রেকার, প্যাডেল রিকশা, প্যাডেল ভ্যান, অটোভ্যান, ঠ্যালাগাড়ি ইত্যাদি) যাত্রী ও আরোহী ২৪ জন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্ঘটনাগুলো ঘটেছে ভোরে ২৩টি, সকালে ২১টি, দুপুরে ১১টি, বিকেলে ১৬টি, সন্ধ্যায় চারটি ও রাতে ৩৯টি।
এসব দুর্ঘটনায় ১৭২টি যানবাহন সম্পৃক্ত বলেও জানানো হয় এ প্রতিবেদনে। এরমধ্যে ট্রাক ৩৭টি, বাস ৪২টি, মোটরসাইকেল ৩৩টি, কাভার্ডভ্যান ৪টি, পিকআপ ১৫টি, সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী ট্রাক চারটি, অটোরিকশা আটটি, লরি দুটি, লেগুনা চারটি, জিপ দুটি, রিকশা ছয়টি, ট্রেন একটি, রেকার দুটি, প্রাইভেটকার সাতটি, ঠেলাগাড়ি একটি এবং অটোভ্যান চারটি।
দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে অপরিকল্পিত নারায়ণ ও অপ্রতুল সড়ক, একই সড়কে অযান্ত্রিক-যান্ত্রিক, স্বল্প ও দ্রুতগতির যানবাহনের চলাচল এবং দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, সড়ক ব্যবহারকারীদের মধ্যে সচেতনতার অভাব, যথাস্থানে ফুটওভার ব্রিজ ও আন্ডারপাস না থাকা এবং থাকলেও সেগুলো ব্যবহার উপযোগী না থাকাসহ ফুটপাত হকারদের দখলে থাকা, রাজধানীর যাত্রীবাহী বাস টার্গেটভিত্তিক চালানোর ফলে চালক-শ্রমিকরা পথে পথে যাত্রী উঠানোর জন্য বেপরোয়া প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হওয়া, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতালসহ নির্দিষ্ট স্থানে বাস-বে ও বাস স্টপেজ না থাকা, ঢাকা শহরের পাশ দিয়ে বাইপাস না থাকার ফলে রাত ১০টা থেকে সকাল পর্যন্ত পণ্যবাহী যানবাহন রাজধানীর ভেতরে বেপরোয়াভাবে চলাচল করা এবং রাজধানীতে অধিক পরিমাণে মোটরসাইকেলের চলাচলকে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া দুর্ঘটনার আরও কারণ হচ্ছে- দীর্ঘসময় যানজটে আটকে থাকার পর ট্রাফিক সিগনাল ছাড়লে সবধরনের যানবাহন একযোগে বেপরোয়া গতিতে ছোটা, অসহনীয় যানজটের কারণে সড়ক ব্যবহারকারীদের আচরণে অসহিষ্ণুতা ও অস্থিরতা তৈরি হওয়া, গণপরিবহন মানসম্মত ও সহজলভ্য না হওয়ার কারণে রিকশার ব্যবহার ব্যাপকহারে বেড়েছে, যা দ্রুতগতির যানবাহন চলাচলকারী সড়কে খুবই ঝুঁকিপূর্ণসহ, ফ্লাইওভারগুলোতে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ ও মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকা