শিবগঞ্জে স্ট্রবেরী ফলের জমিতে মাকড় পোকার আক্রমণে শত শত বিঘা জমির স্ট্রবেরী গাছ ও ফল সয়লাব। সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগের উদাসীনতায় চাষীরা হতাশ। তবে সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ বলছে, চাষীরা কৃষি অফিসারদের সাথে পরমর্শ না করে কীটনাশক কোম্পানী ও দোকানদারদের সাথে পরামর্শ করে কীটনাশক প্রয়োগ করায় এ ধরণের ঘটনা কিছুটা ঘটেছে। সরেজমিনে শিবগঞ্জ উপজেলার খোন্দা মাঠে শিবগঞ্জের প্রথম স্ট্রবেরী চাষকারী বিনোদপুর মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক মাওলানা ইকবাল হোসেনের কথা হয় এ প্রতিবেদকের।
তিনি জানান, এ মৌসুমের শুরুতে এ মাঠে বিঘা জমি বাৎসরিক ৩০ হাজার টাকা বিঘা দরে ১০ বিঘা জমি বর্গা নিযে নভেম্বর মাসের দিকে রাজশাহী থেকে ১৮ টাকা দরে ১০/১২ হাজার চারা কিনে এনে ও নিজস্ব উৎপাদিত চারা রোপন করেছি। প্রথম দিকে স্ট্রবেরী গাছের অবস্থা ভাল থাকলেও কিছু দিন পর রাজশাহী থাকা আনা লাগানো চারাগুলো মাকড় পোকা দ্বারা আক্্রান্ত হযে মারা যাচ্ছে। স্ট্রবেরী ফলের গাছগুলি মাকড় দ্বারা আক্্রমণের লক্ষণ হলো গাছের পাতাগুলো হঠাৎ করে শুকিয়ে যাচ্ছে। ফল ধরলেও তাও শুকিয়ে যাবে। পাতাগুলি কুঁড়ি-মুকড়ি ধরে যাবে। গাছের জড়গুলো নষ্ট হয়ে যাবে। পাতাগুলো অনেকটা লাল হয়ে যাবে। তবে আমাদের নিজস্ব উৎপাদিত চারা গুলো মাকড় পোকার দ্বারা আক্রমণের শিকার হয়নি। শুধু রাজশাহী থেকে ক্রয় করা চারাগুলো মাকড় দ্বারা আক্রমণের শিকার হচ্ছে। তা থেকে স্পষ্ট য়ে রাজশাহীর চারাগুলো আগে থেকে মাকড় পোকা দ্বারা আক্রমণের শিকার হয়েছিল। আমার মতই শিবগঞ্জের প্রায় ৪শ স্ট্রবেরী ফলের চাষীদের বেশীর ভাগই রাজশাহী থেকে লাখ লাখ চারা কিনে এনেছিল যে গুলো প্রায় সবই মাকড় দ্বারা আক্রান্ত তবে ক্রয় করার সময বুঝা যায়নি। আক্রান্ত গাছগুলির পাশের গাছগুলিও আস্তে আস্তে আক্রমণের শিকার হচ্ছে।
তিনি জানান এব্যাপাে গত ২৫ জানুয়ারী দুর্লভপুর ইউনিয়নে পনের-রশিয়া মাঠে মাঠ দিবসের সভায় মাকড় পোকার আক্রএু সহ অন্যান্য অসুবিধার কথা জানালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল হাযাত আশ্বাস দিয়েছিলেন যে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অফিসারগণ সরাসরি মাঠ পরিদর্শন করে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন কৃষি অফিসার আমার জমিতে পরিদর্শনে আসেননি। তিনি আরো জানান বিভিন্ন কৃষি অনুষ্ঠান দেখে ও বিভিন্ন জনের পরামর্শ করে স্ট্রবেরী গাছ ও ফলকে নিরাপত্তার সাথে সেচ ও আগাছা থেকে রক্ষা পেযে কম খরচে বেশী লাভবান হওয়ার জন্য বিঘা প্রতি ১২হাজার টাকা খরচ করে মালজিং পেপার ব্যবহার করে যথেষ্ট ফলপ্রসু হলেও মাকড় পোকার আক্রমনের কারণে লক্ষ্যমাত্রায পৌঁছতে হিমশিম খাচ্ছি।
তিনি আরো জানান এ মৌসুমে ১০ বিঘা জমিতে চাষ করে এপর্যন্ত খরচ হয়েছে নয় লাখ টাকা,আরো দুই লাখ টাকা খরছ হবে। এপর্যন্ত স্ট্রবেরী ফল বিক্রী করেছি প্রায় ১৫ লাখ টাকা। লাভ হযেছে চার লাখ টাকা। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছিল মোট ২৫ লাখ টাকার ফল বিক্রী হবে। কিন্তু মাকড় পোকার আক্রমণে প্রতিকারে , আশানুরুপ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহায়তা না পাওযায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে আমি কিছুটা হতাশ। শুুধু মাওলানা ইকবাল হোসেনই নয়, শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর, দূর্লভপুর, পাকা, ছত্রাজিতপুর, ঘোড়াপাখিযা সহ বিভিন্ন ইউনিয়নেরর স্ট্রবেরীর ক্ষেত ঘুরে প্রায শ‘ খানেক কৃষকের একই মন্ত্রব্য পাওয়া গেছে। তিনি আরো বলেন, সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহযোগিতার মাধ্যমে , মাকড় পোকার আক্রমণল রোধ, বিদেশ হতে স্ট্রবেরী ফল আমদানী বন্ধ ও স্ট্রবেরী ফ ফলকে স্থায়ী করনের ব্যবস্থা করা হলে আমরা স্ট্রবেরী চাষীরা আরো বেশী লাভবান হতাম এবং স্ট্রবেরী চাষে আরো বিপ্লব ঘটতো।

তিনি বলেন গত ২০০৯সালে আমি প্রথম ৫পাঁচ কাঠা জমিতে স্ট্রবেরী ফলের চাষ করে খরচ বাদে প্রায এক লাখ টাকা আয় করেছিলাম। তথন থেকে আামি স্ট্রবেরীর চাষ করে আসছি।আমার স্বপ্ন শিবগঞ্জ উপজলায বেকার যুব সম্প্রদাযকে উদ্বুদ্ধ করে স্ট্রবেরী চাষে বিপ্লব ঘটাবো। এব্যাপারে তিনি মাকড় পোকার আক্রমণসহ সমস্ত প্রতিবন্ধন রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ শরিফুল ইসলাম মাওলানা ইকবাল হোসেনের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মাকড় পোকার আক্রমণ রোধে সঠিক মাত্রায ও সঠিক সময়ে কীটনাশক ভাটিমেক ও অনপযেন্ট সহ বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। কিন্তু চাষীরা সে মাত্রায প্রয়োগ না করায মাকড় রোধ হচ্ছে না।
তিনি আরো জানান কৃষকরা কৃষি অফিসারদের গুরুত্ব না দিযে কীটনাশক ও দোকানদাররের পরামর্শ করে কীট নাশক প্রয়োগ করায় সঠিক ফলাফল পাচ্ছে না। এক্ষেত্রে কৃষককেই সচেতন হতে হবে। তার ভাষ্যমতে মাকড় পোকার আক্রমন তেমন কোন প্রক্রিযা পড়েনি। এ মৌসুমে প্রায চার শ‘ কৃষক এক শ‘ হেক্টর জমিতে স্ট্রবেরী ফলের চাষ করেছে।এখন পর্যৃন্ত ফলাফল হচ্ছে। এবছরে স্ট্রেবেরী ফলের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হযেছে প্রায ১২শ‘ মেট্রিকটন। যার মূল্য প্রায ৭২ কোটি টাকা। সামনে মৌসুমে চাষ আারো বৃদ্ধি পাবে। লক্ষ্য মাত্রা দ্বিগুন হতে পারে। স্ট্রবেরী গাছে ও ফলে মাকড় আক্রমন প্রসংগে ইতিমধ্যে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের রাজশাহী বিভাগীয় অতিরিক্ত পরিচালক শামসুল ওদুদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক ড.পলাশ সরকার. জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার আতিকুল ইসলাম ও শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল হাযাত সহ আমাদের শিবগঞ্জ কৃষি সম্প্ররারণ বিভাগের সকল অফিসার সকল স্ট্রবেরীর জমি পরিদর্শন করেছেন। মাকড়ের আত্রমণ, বিদেশ থেকে স্ট্রবেরী আমদানী বন্ধ, এলাাকয় জুস ও জেলী তৈরীর জন্য শিল্পকারখানা তৈরী ও সংরক্ষনের জন্য তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা হয়েছে। তারা । তারা বলেছেন বানিজ্য মন্ত্রণালযের সাথে আলোচনা করে বিদেশ থেকে স্ট্রবেরী ফল আমদানী বন্ধের উদ্যোগ নেয়া হবে। ।