শিবগঞ্জ উপজেলার উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রেগুলিতে সরকারি নিয়মের কোন বালাই নেই। নিযম অনুসারে আসেন না সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, দেন না ঠিকমত কোন ঔষধ। দেখেন না কোন রোগী। সরাকারি নিয়ম অনুসারে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অফিস চলার কথা থাকলেও তারা আসেন সকাল ১০ টার পরে এবং যান ১২৩টার আগেই এভাবেই ফাঁকি দিযে চলছে গ্রাম অঞ্চলের উপস্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রগুলি। এতে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কেন্দ্রেগুলোর চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্চে রোগীরা।
সম্প্রতি জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, গেটে ঝুলছে তালা। রোগীও নেই চিকিৎসকও নেই। সাড়ে ৯ টার কিছুক্ষণ পরে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এসে তালা খুললেন অফিস সহায়ক ফিয়ারুল আলী। তবে তখনও খোঁজ নেই কর্মকর্তাদের। বেলা সাড়ে ১০ টা বাজার কিছুক্ষণ পরে অফিসে আসলেন এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপ-সহকারী মেডিকেলের অফিসার নাজমুল হাসান নাহিদ। এত দেরিতে কেন অফিসে আসলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এই প্রশ্নের জবাব আপনাকে দিতে বাধ্য নই। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পাশের চিমঠ্যপাড়া গ্রামের সুকতারা বেগম বলেন, এই স্বাস্থ্য কেন্দ্র কখন খোলে কখন বন্ধ থাকে কেউ জানে না। কর্মকর্তাদের ইচ্ছে মত খোলে, ফের বন্ধ করে চলে যায়। এখন সাড়ে ১০ টা বাজে তবুও চিকিৎসক আসেনি। আর বেশিরভাগ দিন সকাল ১০ টায় খুলে ১২ টায় বন্ধ করে চলে যায় তারা। এই হাসপাতাল থেকে আমাদের কোন উপকার হচ্ছে না।
শ্যামপুর ইউনিয়নের ৪,৫,৬ ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের সাবেক মহিলা ইউপি সদস্য শাহনাজ বলেন, স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনে আমি সকাল সাড়ে ৯ টা থেকেই অবস্থান করছি। এখন ১০ টা পার হলেও চিকিৎসকের কোন খোঁজ নেই। এখানকার কর্মকর্তারা নিজ ইচ্ছে মতই অফিস করে। যে রোগীগুলো আসে সবাই জানে যে এখানে চিকিৎসক পাওয়া যায়না। আর চিকিৎসক পাওয়া গেলেও ১১ টা থেকে সাড়ে ১১ টার পরে। এই হাসপাতাল থেকে কোন উপকার হচ্ছেনা। আর বাগানের মধ্যে করা হয়েছে এই স্বাস্থ কেন্দ্র । যেখানে কোন রাস্তা নেই। তাই গাড়ি আসিতে পারেনা।তিনি আরও বলেন, এখানে চিকিৎসা পাওয়া যায়না। তাই কেউ চিকিৎসা নিতেও আসেনা। আপনি তো দেখেছেন সকাল ১০ টা পার হয়ে গেছে এখন পর্যন্ত কোন রোগী আসলো না। তাই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সকাল ১০ টায় এসে দুপুর ১ টায় বন্ধ করে চলে যায়।স্থানীয় আলামিন নামে এক কলেজ ছাত্র বলেন, একমাসে ১০ দিনও এই হাসপাতালে ওষুধ থাকেনা। বলে সামনে সামনে মাসে আসলে দিব। আর তারা কখন স্বাস্থ্য কেন্দ্র খুলে ঠিক নাই। তাদের ইচ্ছে মত চলে এই স্বাস্থ্য কেন্দ্র।
শ্যামপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, এখানে একটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র রয়েছে। তবে সারারণ মানুষ চিকিৎসা পায় কিনা তা জানা নেই। আমি খোঁজ নিয়ে দেখব। জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যলয়ের সহকারী পরিচালক মো. মাকিন বলেন, সরকারি অফিস সকাল ৯ টায়। এ সময়ে এসেই তাদের অফিস করতে হবে। আমি এখনি খোঁজ নিয়ে ব্যাবস্থা নিচ্ছি। এসময় এই প্রতিবেদকের কাছে ওই স্বাস্থ কেন্দের উপ-সহকারী মেডিকেলের অফিসার নাজমুল হাসান নাহিদের ঠিকানাও নেন তিনি।