শিরোনাম
  • ফের যে আসন থেকে নির্বাচনের সম্ভাবনা রয়েছে খালেদা জিয়ার আন্তর্জাতিক ফুটবলে যে সমস্যার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ইসরায়েল কে এই নতুন মেসি-ইয়ামাল? ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে যা বললেন ড. মুহাম্মদ ইউনুস সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন কাঠামোতে যে নতুন নির্দেশনা দিলেন প্রধান উপদেষ্টা আলুর দাম নিয়ে যে দুঃসংবাদ শোনালেন বাণিজ্য উপদেষ্টা হাইকোর্টের রায়ের স্থগিতাদেশ নিয়ে যা জানালেন আইনজীবী শিশির মনির নির্বাচন নিয়ে নতুন যে বিবৃতি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার সরকার নির্বাচন নিয়ে চাপ দিলে পদত্যাগ করবো: সিইসি শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার করলে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
  • ১৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

    ভাষা সৈনিক অধ্যক্ষ কামরুজ্জামানের স্মৃতিচারণে লাঙ্গলবাঁধ সাংবাদিক ফোরাম

    শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি

    ১৬ ডিসেম্বর, ২০২১ ০৯:৪৮ পূর্বাহ্ন

    ভাষা সৈনিক অধ্যক্ষ কামরুজ্জামানের স্মৃতিচারণে লাঙ্গলবাঁধ সাংবাদিক ফোরাম
    ফাইল ফটো

    শৈলকুপার কৃতি সন্তান, ভাষা সৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের অগ্রসেনানী, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি, একুশে ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত গুণীজন অধ্যক্ষ মুহাম্মদ কামরুজ্জামানের ১৩ তম মৃত্যু দিবস আজ ২৫ সেপ্টেম্বর। মহান এই মানুষটির মৃত্যুদিবসে শৈলকুপা উপজেলার লাঙ্গলবাঁধ সাংবাদিক ফোরামের  পক্ষ থেকে বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করছে।

    অধ্যক্ষ মুহাম্মদ কামরুজ্জামান ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার পুরাতন বাখরবা গ্রামে ১৯২০ সালের ২০ মার্চ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম শামছুদ্দিন আহমেদ এবং মাতার নাম করিমন নেছা। পাঁচ ভায়ের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়।

    মুহাম্মদ কামরুজ্জামানের ছিলো এক দীর্ঘ, বর্ণাঢ্য, কর্মময় ও রাজনৈতিক জীবন। ছাত্র জীবন থেকেই তিনি রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। কুষ্টিয়া কলেজে অধ্যয়নরত ছাত্রনেতা হিসেবে তিনি ভাষা আন্দোলনে যোগদান করেন। ১৯৫২-৫৩ এর আন্দোলনের বিক্ষুব্ধ দিনে তিনি ছিলেন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সভাপতি। ছাত্রলীগের সভাপতি থাকাকালেই  তিনি ১৯৫৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে  যুক্তফ্রন্টের মনোনয়নে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। শৈলকুপা ও হরিণাকুন্ডু থানা নিয়ে গঠিত তখনকার যশোর-১ আসনে ক্ষমতাসীন  মুসলিম লীগের প্রভাবশালী প্রার্থী পরবর্তী সময়ে মোনেম খানের মন্ত্রী বশির উদ্দীন মাজমাদারসহ সাতজন প্রার্থীকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে তিনি নির্বাচিত হন।

    পূর্ব পাকিস্তান আইন পরিষদে সম্ভবত তিনিই ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ সদস্য। ছাত্র রাজনীতি এবং আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কাজে তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর। ঐ সময়ে তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর সান্নিধ্য লাভ করেন। ৫৪ এর নির্বাচনে ঐদুইজন নেতাই পৃথক পৃথকভাবে তার নির্বাচনী এলাকায় বিভিন্ন জনসভায় ভাষণ দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও তাঁর নির্বাচনী জনসভায় যোগদান করেছিলেন এবং তাঁর গ্রামের বাড়ি বাখরবা গ্রামে রাত কাটিয়েছিলেন।  ১৯৫৫ সালে তিনি বিশ্বশান্তি সম্মেলনে পাকিস্তান প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে স্টকহোম যান এবং ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ সফর করেন। দেশে ফেরার পর তিনি বামপন্থি যুব সংগঠন পূর্বপাকিস্তান যুবলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।  পঞ্চাশ দশকের মাঝামাঝি তিনি বাংলাবাজার এলাকার কিশোরীলাল জুবিলী হাইস্কুলে শিক্ষকতার চাকুরী গ্রহণ করেন। তিনি শুধু নিজ বিদ্যালয়েই নয় সারাদেশের শিক্ষকদের দুঃখ দুর্দশা বুঝতে পেরে  তৎকালিন পূর্ব পাকিস্তান শিক্ষক সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং শিক্ষক সমাজের অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।

    পরবর্তীতে ১৯৭০ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ঝিনাইদহ -১ আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন।  একাত্তর এর মুক্তিযুদ্ধে তিনি মুজিবনগর সরকারের শিক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৮৬ সালে তিনি পুনরায় ঝিনাইদহ -১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি  ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের  ৫ ম ও সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে বিএনপি প্রার্থী আবদুল ওহাবের নিকট পরাজয় বরণ করেন। শিক্ষকতা থেকে ১৯৯৮ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন এবং আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হন। পরে তিনি মরোক্কোতে রাষ্ট্রদূত নির্বাচিত হয়েছিলেন।

    ব্যক্তি জীবনে তিনি অত্যন্ত সৎ ও নিষ্ঠাবান রাজনৈতিক নেতা ছিলেন। বিত্ত বৈভবের প্রতি তাঁর কোনো  লোভ বা লালসা ছিলোনা। তিনি দুই পুত্র দুই কন্যা সন্তানের জনক। বড় ছেলে পারভেজ জামান নিউজিল্যান্ড প্রবাসী, ছোটছেলে তানভীর জামান আমেরিকা প্রবাসী। বড় মেয়ে বিলকিস জামান ও ছোটো মেয়ে পারভীন জামান উভয়ই জুবিলী স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক ছিলেন। ছোটো মেয়ে পারভীন জামান কল্পনা বর্তমানে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।

    ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের অগ্রসেনানী অধ্যক্ষ মুহাম্মদ কামরুজ্জামান ২০০৮ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। সরকার ২০১৩ সালে তাঁকে মরোনোত্তর  স্বাধীনতা পদক ও ২০১৪ সালে একুশে পদকে সম্মানীত করে। শৈলকুপার এই কৃতি সন্তানের জন্য শৈলকুপাবাসী গর্বিত। কিন্তু পরিতাপের বিষয় তাঁর জন্ম-মৃত্যুদিবসটিও নিজ জন্মভূমিতে পালন করা হয়না। তাঁর মতো গুণী মানুষের জন্ম-মৃত্যুদিবসে কিছু কার্যক্রম গ্রহণ বা তাঁর নামে নিজ এলাকায় কোনো প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা গেলে আগামী প্রজন্ম মহান এই নেতাকে স্মরণ করার সুযোগ পেত।

    আজ তাঁর ১৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী । আজকের এই দিনে  লাঙ্গলবাঁধ সাংবাদিক ফোরামের পক্ষ থেকে তাঁকে বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করছে।




    সাতদিনের সেরা খবর

    বিবিধ - এর আরো খবর

    আট বিভাগেই বৃষ্টির আভাস

    আট বিভাগেই বৃষ্টির আভাস

    ১৬ ডিসেম্বর, ২০২১ ০৯:৪৮ পূর্বাহ্ন