প্রতিবছর অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে নভেম্বরের প্রায় শেষ পর্যন্ত ভোরবেলা সূর্যের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই উত্তর-পশ্চিম দিকে দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা। সূর্যের কোমল আলোর ছোঁয়ায় সোনালি রং ভেসে আসে এই পর্বতশৃঙ্গে। কয়েক ঘণ্টা পর আবার হাওয়ায় মিলিয়ে যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা। তবে এবার পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় গিয়ে পর্যটকেরা যে কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপ উপভোগ করেছেন, তা এখন ঠাকুরগাঁওয়ের মাটিতে দাঁড়িয়েও দেখা যাচ্ছে।
গত কয়েকদিন ধরে ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন জায়গা থেকে স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃঙ্গ। অনেকেই ফেসবুকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পাওয়ার ছবি পোস্ট করছেন। তা দেখে বালিয়াডাঙ্গী সড়কে ছুটে যান শহরের যুবক তাহসিন হাসান। উপভোগ করেন কাঞ্চনজঙ্ঘার সৌন্দর্য।
ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন জায়গা থেকে সূর্যোদয়ের পর থেকে দিনভর স্পষ্ট দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা। সকাল ৯টার দিকে ঠাকুরগাঁও-বালিয়াডাঙ্গী সড়কের দাসপাড়া এলাকার উত্তর-পশ্চিমের নীল আকাশে ভেসে উঠে ঝকঝকে সাদা রঙের কাঞ্চনজঙ্ঘা। সেই পথ ধরে বালিয়াডাঙ্গী যেতে যেতে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠে কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপ।
বালিয়াডাঙ্গীর একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক খসিউর রহমান বলেন, প্রতিবছর এই সময় এখান থেকে কমবেশি সাদা বরফে আচ্ছাদিত কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়। কিন্তু এই বছরের মতো এত দীর্ঘ সময় ধরে পরিষ্কারভাবে দেখা যায়নি।
ঠাকুরগাঁওয়ে ভেলাজানে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন ঢাকার বাসিন্দা সুরাইয়া জেসমিন। তিনি বলেন, ‘প্রথমবারের মতো এখানে এসে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পেয়ে মুগ্ধ হয়েছি। মনে হয়েছে একটু এগিয়ে গেলেই পর্বতশৃঙ্গটি ছোঁয়া যাবে। এই অনুভূতি সহজে ভুলবার নয়।’
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইএসডিওর প্রধান কার্যালয়ের ছাদ থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা আরও স্পষ্টভাবে দেখা যায়। প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক মুহম্মদ শহীদ উজ জামান বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় কাঞ্চনজঙ্ঘা একটি দর্শনীয় স্থান। আমরা নিজের জায়গা থেকে সেই কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপ স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি, এটা ভিন্ন একটা অনুভূতি। খুব কাছ থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। কিন্তু এখান থেকে ভোরবেলা কাঞ্চনজঙ্ঘার যে সৌন্দর্যের দেখা মেলে, তা কাছ থেকে দেখাকেও হার মানায়।’