কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গরু চুরি বেড়েই চলেছে। ভূক্তভোগী সহ স্থানীয়রা প্রশাসনের উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন।
গেলো মাসের ৬ মে দিবাগত রাত ১টার পর উপজেলার ধলা ইউনিয়নের আজবপুর গ্রামের কাছুম আলী ভূঁইয়ার ছেলে কৃষক আবদুল আহাদের গোয়াল ঘর থেকে কে বা কারা ৪টি দেশি জাতের গাভী চুরি করে নিয়ে যায়। ভোররাতে সাড়ে ৫টার দিকে আহাদ নিজ গোয়ালে গরু দেখতে না পেয়ে চিৎকার শুরু করেন।
আশেপাশের বাড়িঘরের লোকজন আহাদের ডাক চিৎকারে গরু খুঁজতে বেরিয়ে পড়লে বাড়ীর আদুরে খোলা মাঠে ১টি গরু পাওয়া গেলেও বাকি ৩টি গরুর কোনও হদিস না পাচ্ছিলেন না। এ ব্যাপারে আবুল আহাদ বাদী হয়ে পার্শ্ববর্তী কলুমা গ্রামের আবদুল বারিকের ছেলে নজরুল ইসলামকে (৪০)সহ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামী করে বিগত ১৪ মে তাড়াইল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।তাড়াইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জয়নাল আবেদীন অভিযোগটি আমলে নিয়ে মামলাটি তদন্তের জন্য উপ-পরিদর্শক জিল্লুর রহমানকে নির্দেশ প্রদান করে গত ১৪ মে এফআইআর করেন।যাহার নম্বর ০৯।ধারা ৪৫৭/৩৮০ পেনাল কোড।
ওই অভিযোগ থেকে জানা গেছে,আবদুল আহাদের চুরি যাওয়া গরু টাকার বিনিময়ে সন্ধান ও ফেরত দেয়ার জন্য ভূক্তভোগী আবদুল আহাদের ভাগিনা নাজমুলের সাথে মোবাইলে কথা বলে। টাকা দিতে স্থান ও সময় নির্ধারণ করার পর নাজমুল গোপনে তাড়াইল থানার তদন্ত কর্মকর্তা জিল্লুর রহমানকে সাথে নিয়ে উপজেলার জাওয়ার বাজারে নজরুলকে টাকা দেয়ার সময় হাতেনাতে আটক করে।
নজরুলকে চুরির অভিযোগে আটকের পর আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।বিগত ২৬ মে তাড়াইল থানা পুলিশ নাজরুলকে ১ দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে তার সহযোগী হিসেবে আরও ৮জনের নাম উল্লেখ করলে তাড়াইল থানা পুলিশ আজবপুর গ্রামের আবদুর রশিদ ভূইয়ার ছেলে মুর্শিদ মিয়া (৩৫) কে আটক করলেও বাকিরা গা ঢাকা দেয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে এলাকায় খবর নিতে গেলে ভূক্তভোগী আহাদ নিজে এবং স্থানীয়রা অবিযোগ করেন,ঘটনা ভিন্নখাতে নেয়ার জন্য এলাকার বৃদ্ধ প্রতিবন্ধী ও সমাজে ভালোমানুষ নামে পরিচিত ৩জনের বিরুদ্ধে তদন্ত সুরু করছেন ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।অথচ বাদী আহাদ তাদের নামে কোনও অবিযোগ দেয়নি এমনকি রিমান্ডে আনা নজরুল নিজেও তাদের নাম বলেনি।
দ্রুত চুর ধরে আইনের আওতায় আনা এবং গরু উদ্ধার করে আহাদকে ফেরত প্রদানের জন্য এলাকাবাসী মিছিল করেন।
এ ব্যাপারে তাড়াইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জয়নাল আবেদীন জানান,দ্রুত আসামীদের ধরে আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে এবং চুরি যাওয়া গরুগুলি যেভাবেই হোক আমরা উদ্ধার করার ব্যাবস্থা করছি।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২মে) দুপুরে মুঠোফোনে এএসপি সার্কেল(করিমগঞ্জ) ইফতেখারুজ্জামানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন,ঘটনাটা আমি শুনেছি এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।আশা করি অচিরেই গরু উদ্ধারসহ বাকি আসামীরা ধরা পড়বে।