হায়রে আমাদের দূর্ভাগ্য যে লাভের আশায় এনজিওতে এফডিআর খুলে ৪ লাখ ৩০ হাজার জমা দিয়ে লাভতো দূরের কথা মূল টাকা চাইতে গিয়ে আমি সহ ৭ জন সাজানো নারী নির্যাতনের মামলায় দীর্ঘদিন যাবত হয়রানি হচ্ছি। অন্যান্য আসামীরা হলেন- আফতাব উদ্দিন মাস্টার, সামায়নতুল্লাহ, হাবিবুর রহমান,ফরজুন আলি,আলকেশ আলি,মিজানুর রহমান, মন্টু। কথাগুলো কান্নাজড়িত কন্ঠে বললেন মনাকষা আনক কামিল মাদ্রাসার পিয়ন ও খড়িয়াল গ্রামের বাসিন্দা সাইফুদ্দিন।
তিনি বলেন, কয়েক মাস আগে আমাদের ১৩০জন এফডিআর গ্রাহকের প্রায় ২ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায় শাখা ব্যবস্থাপক সোহেলের সহযোগিতায় ডোভা (আগে দেশ নামে ছিল) এনজিও পরিচালক জাইরুল ইসলাম। এ টাকা চাইতে গেলে পরিচালক জাইরুলের সাথে আতাঁত করে সোহেল আমাদের ওপর পাল্টা মামলা করে হয়রানী করছে। গ্রাহক সাইফুদ্দিন জানান, ডোভায় আমি ৪ লাখ ৩০ হাজার লাখ প্রতি লাখে মাসিক ১৫ শ টাকা হরে এফডিআর করলে তারা প্রথম মাস লাভের টাকা আমাকে দিয়েছে। পরে তারা অফিস ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
শুধু সাইফুদ্দিনই নয়, এলাকার আব্দুর রশিদের স্ত্রী রেহেনা বেগমের ৫০ হাজার টাকা, পারচৌকা গ্রামের একরামের ছেলে গোলাবের ৬ লাখ টাকা, খড়িয়াল গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে তোফিকুল ইসলামের ২লাখ ৮০ হাজার টাকা, মনাকষার গৌতম নাপিতের ৫লাখ টাকা, পারচৌকা গ্রারেম মালেকের স্ত্রীর ১১লাখ টাকা সহ মোট ১৩০জন এফডিআর গ্রাহকের প্রায় ২ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে বলে তারা জানাই। তারা আরো জানায় প্রায় ৬শ জন সাধারণ গ্রাহকের ২০/২৫লাখ টাকা নিয়ে উধার হয়েছে। তবে তাদের লোন ছাড়া আছে প্রায় ১৫০জন সদস্যের কাছে প্রায় ৬৫লাখ। যে গুলো তারা গোপনে আদায় করছে। ঘটনাটি জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা বাজারের।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক কয়েকটি সূত্র জানায়, শুধূ মনাকষা নয়, ডোভার প্রায় ১৪টি শাখা মধ্যে বেশীর ভাগ শাখা গুটিয়ে নিয়ে এভাবেই গ্রাহকের প্রায় ২৫/৩০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে আছে। ন্যদিকে অফিসের জন্য ভাড়া দেয়া ঘরের মালিক মাহবুব আলম অফিস হিসাবে ভাড়া দেয়া ঘরের মালিক মাহবুব আলম এম জানান ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারী মাস থেকে এ এনজিওটি পলাতক রযেছে। তখন থেকে আমাকে ঘরের ভাড়া ও বিদ্যুৎবিল কিছুই দেয়নি। এমনকি অফিসও ছাড়েনি।
তিনি জানান, ২০১৭সালে ১৮ শ টাকা মাসিক ভাড়ার চুক্তিকে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে অফিসের কাজ শুরু করে। ২০১৯সালে আরো ১টি ঘর সহ মাসিক ৩৩শ টাকা ভাড়া চুক্তি করে ১লাখ টাকা জমানত দেয়। বর্তমানে শাখা ব্যবস্থাপক সোহেলের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন আমি চাকুরী ছেড়ে দিয়েছি। আমার কোন দায়দায়িত্ব নেই। তাই নিরুপায় হয়ে আমি ইউপি চেয়ারম্যানের পরামর্শে ১জন ইউপি সদস্যের উপস্থিতিতে তাদের মালামালগুলো অন্যঘরে গুছিয়ে রেখে অন্য ১ জনকে ঘর দুটি ভাড়া দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এব্যাপারে শাখা ব্যবস্থাপক সোহেল বলেন, আমি চাকরি ছেড়ে দিয়েছি। তাই আমার কোন দায়দায়িত্ব নেই। তবে তিনি স্বীকার করেন যে প্রথমে দেশ ও ডোভা নামে এনজিও পরিচালক জাইরুল ইসলাম মনাকষা শাখার ১৩০জন এফডিআর ও ৬শ জন সাধারণ গ্রাহকের প্রায় ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে।
এব্যাপারে পরিচালক জাইরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগকরার জন্য তার ০১৭৯৬১২০১০৯ নম্বর মুঠোফোনে বার বার চেষ্টা করেও ফোন রিসিভ না করায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
অভিযোগ অস্বীকার করে সোহেল রানা আরও বলেন, "দেশ" নামক এনজিও তে প্রায় চার বছর চাকরি করেছি (বর্তমানে নেই) । চাকরি করাকালীন সময়ে আমি কোন এফ ডি আর গ্রাহকের টাকাই তো নিজ হাতে গ্রহণ করি নাই। গ্রাহকগণ তাদের এফ ডি আর এর টাকা সংস্থার এমভি মোঃ জাইরুল হকের হাতে জমা করে যা তাদের পাশ বইয়ে উল্লেখ আছে। আমার সাথে জাইরুল হকের যোগাযোগ আছে মর্মে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমার সাথে জাইরুল হকের অর্থ আত্মসাতের ব্যাপারে দুরতম কোন সম্পর্ক ছিল না এমনকি বর্তমানেও তার সাথে কোন যোগাযোগ নেই।
অপরদিকে জাইরুল হকের সাথে ঐসকল গ্রাহকদের (যারা আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট, এবং বাড়ির মহিলাদের শ্লীলতাহানি করে) সাথে যথেষ্ট যোগাযোগ আছে বলে তাদের কর্মকাণ্ডে প্রতীয়মান হয়। বর্তমানে এমডি জাইরুল হকের স্বাক্ষরিত ৫৭টি ফাঁকা ব্যাংক চেক গ্রাহকদের কাছে আছে। এই চেকগুলো নিয়ে তারা বানিজ্য করার হীন প্রচেষ্টায় লিপ্ত। তাদের নামে যে মামলা হয়েছে তা তাদের অপকর্মের বিচারের দাবিতে, যে ব্যাপারে আদালত সিদ্ধান্ত নিবে। তারা যেহেতু এলাকায় দুর্ধর্ষ তাদের সাথে আমরা পেরে উঠবো না তাই আমরা আদালতের দারস্ত হয়েছিমাত্র।আমি টাকা আত্মসাতের সাথে কোন ভাবেই জড়িত নই। এটা শুধুমাত্র গ্রাহক এবং পরিচালকের সম্পর্ক ।