হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ভারতীয় নাগরিক ও মা সাদিকা সাঈদের কাছ থেকে দুই বছর আট মাস বয়সী শিশুসন্তানকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়া চলে গেছেন বাংলাদেশি বাবা। শিশুসন্তানসহ গত রোববার (২১ নভেম্বর) বিকেল ৩টার মধ্যে আদালতে হাজির হওয়ার কথা ছিল শাহিনুর টি আই এম নবী নামে ওই বাবার। কিন্তু তিনি এর আগেই বিদেশ চলে গেছেন।
মঙ্গলবার ওই রিটের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুনানিতে আদালত ভারতীয় মায়ের শিশুর দাদা টি আই এম নবীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। সেই সঙ্গে তাকে আগামী ৭ ডিসেম্বর হাইকোর্টে সশরীরে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে।
এছাড়া ওই দাদা হাজির হয়ে শিশুর বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার কারণ ব্যাখ্যা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কী মন্তব্য করেছেন তারও ব্যাখ্যা করতে হবে আদালতে।
অন্যদিকে, আদালতের অনুমতি ছাড়া তার বাবা ওই শিশু ছেলেকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়া চলে যাওয়ায় কেন তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে শিশুর মা ও ভারতীয় নারীর পাসপোর্ট তাকে বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম। তাকে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম ও ব্যারিস্টার ফাইজা মেহরিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
ভারতীয় মা সাদিকা সাঈদের করা এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতে ওই বাবাকে তলব করা হয়েছিল। কিন্তু তলবের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১ নভেম্বর বাবা সানিউর টি আই এম নবী হাজির না হওয়ায় গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান আদালতকে এ বিষয়টি অবহিত করেন।
আইনজীবী ফাওজিয়া করিম বলেন, দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও আদালতে হাজির করার আদেশের আগেই তিন বছরের শিশুসন্তানকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়া চলে গেছেন বাবা সানিউর টি আই এম নবী।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার জানান, ১৬ নভেম্বর বিকেলে ওই শিশুসহ বাবার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। তবে পুলিশ জানিয়েছে, ওইদিন সকালে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে শিশুকে নিয়ে বাবা অস্ট্রেলিয়া চলে যান।
এর আগে এক আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২৬ আগস্ট হাইকোর্ট ওই শিশুকে আপাতত মায়ের জিম্মায় দেন। আর বাবা সপ্তাহে তিনদিন শিশুর সঙ্গে সময় কাটাতে পারবেন বলে আদেশ দেন।