শিবগঞ্জে তিনটি রাস্তা দীর্ঘদিন যাবত চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত রাস্তাগুলো সংস্কারের কোন উদ্যোগ না নেয়ায় জনদূর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছেন, একটি রাস্তার টেন্ডার হয়েছে, একটি আইডি নম্বর নিয়ে জটিলতা থাকায় হচেছ না এবং অন্যটির চেষ্টা চলছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে শিবগঞ্জ পৌরসভাধীন ইসরাইল মোড় হতে ধাইনগর ইউপি পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলো মিটার রাস্তায় ছোট বড় প্রায় একশ খাদ সৃষ্টি হয়েছে। পাকা রাস্তার কোন নমুনা বুঝা যায় না। রাস্তার দুই পাশ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় রাস্তার প্রশস্ত কমে গেছে।বিভিন্ন ধরনের যান চলাচলে ক্ষেত্রে চরম হুমকীর মুখে চালকেরা। যাত্রীরা ভয়ে আতংকিত হয়ে রীতিমত দোয়া পাঠে ব্যস্ত।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘ ৮/১০বছর যাবত এ রাস্তার বেহাল দশা হলে এপর্যন্ত কোন নেতা বা অফিসারের দৃষ্টি পড়েনি। গুপ্তমানিক রানীনগর গ্রামের ভ্যান চালক আব্দুর রহমান বলেন ৭বছর যাবত এ রাস্তাটি শতাধিক খনাখন্দে ভরা থাকলেও সংস্কারের কোন উদ্যোগ গ্রহন করা হয়নি। এমপি রাব্বানীর আমলে হালকা সংস্কার হলেও তা বেশী দিন স্থায়ী হয়নি। এক গ্রামের অটো চালক সামীন উদ্দিন জানান, বেহাল দশার এ রাস্তা দিয়ে ছোট একটি যানবাহন নিয়ে যাত্রী বহন করি। কিন্তু রাস্তা অত্যন্ত খারাপ হওয়ার ফলে প্রায় প্রতিদিন্ই ছোট বড় দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছি।
ভ্যান চালক খাইরুল ইসলাম, মোটর সাইকেল আরোহী রুবেল, সাইকেল চালক রহিম সহ প্রায় ৫০/৬০ জন যাত্রী এক সুরে বলেন, একেতো ডাকাতের ভয়ে এ রাস্তাটি দিয়ে সন্ধ্যার পর চলাচল করা যায় না। তারপর আবার রাস্তার বেহাল দশা- যেন মড়ার উপর খাড়ার ঘার মত অবস্থা।
ধাই নগর বাজার এলকার অবসর প্রাপ্ত সৈনিক আতাউর রহমানের দাবি স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা:সামিল উদ্দিন শিমুল ও উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুর ইসলামের সুদৃষ্টির মাধ্যমে জরুরি ভিত্তিতে রাস্তাটি সংস্কার করে প্রায় ২৫টি গ্রামের জনদুর্ভোগ দূর করা হোক।
এ ব্যাপারে ধাইনগর ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল লতিফ বলেন, কেউ আমাকে বলেনি এবং আমার কাছে সরকারিভাবে চিঠি আসেনি। তাছাড়া বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকায় রাস্তা দেখা ও রাস্তা সংস্কারের জন্য কাউকে বলার সময় পাইনা। অন্যদিকে মনাকষা ইউনিয়নের পুঁটির ঘাট হতে খড়িয়াল গ্রামের মোড় পর্যন্ত মাত্র ২০১৩সালে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত আধা কিলোমিটার রাস্তার জন্য পারচৌকা, রানীনগর, রাঘবাটি, সিংনগর, চৌকা, বিশ্বনাথপুর চৌকামনাকষা সহ প্রায় ১২টি গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ দীর্ঘ ১০ বছর যাবত দূর্ভোগ পোহাচ্ছে। খরার সময় অতিরিক্ত ধূলায় ও বর্ষার সময় ছোট বড় অনেকগুলো গর্তে পানি জমে থাকায় যাতায়াত করা কষ্টকর হয়ে উঠে। কোন যানবাহন চলাচল করতে পারে না। এ রাস্তাটির জন্য এলাকাবাসীর পক্ষে জনৈক ব্যক্তি ২০১৯সালে স্থানীয় সংসদ সদস্য বরাবর আবেদন করেও এ পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা হয়নি। মনাকষা ইউনিয়নের চর এলাকায় সাহাপাড়া গ্রামের নুরেশের বাড়ি হতে ঠুঠাপাড়া গ্রারেম সমির মেম্বারের বাড়ি পর্যণÍ প্রায় তিন কিলোমিটার পাকা রাস্তা একেবারে ভেঙ্গে গেছে। রাস্তার পীচ ও খুয়াগুলি উঠে গিয়ে বালির সাথে একাকার হয়ে গেছে। জনগুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তটি দিয়ে প্রায় ২৫/৩০টি গ্রামের বিভিন্ন পেশার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করে থাকে। ঠুঠাপাড়া গ্রামের কলেজ শিক্ষক হারুন অরা রশিদ টুকু অত্যন্ত দু:খের সাথে জানান এ রাস্তা দিয়ে প্রায় ৮/১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা প্রতিদিন যাতায়াত করে। ভাঙ্গা রাস্তার কারণে প্রায় প্রতিদিনই কেউ না কেউ দূর্ঘটনার শিকার হয়ে থাকে।
বৃক্ষপ্রেমিক কার্তিক প্রামানিক জানান, দু:খজনক হলেও সত্যি যে আমি বার বার জনপ্রতিনিধিদের কাছে দৃষ্টি আকর্ষণ করেও ব্যর্থ হয়েছি। অথচ এ রাস্তাটি অত্যন্ত জন গুরুত্বপুর্ণ। এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী হারুন- অর- রশিদ জানান, ইসরাইলমোড় হতে ধাইনগর ইউপি পর্যন্ত রাস্তার টেন্ডার হয়ে আছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হবে। মনাকষা পুঠির ঘাট হতে খড়িয়াল মোড় পর্যন্ত রাস্তার আইডি নিয়ে জটিলতা থাকায় কোন সমাধান টানা যাচ্ছে না। আইডি সংশোধনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। আইডি সংশোধন হলে রাস্তাটির ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া যাবে। সাহাপাড়া নুরেশের বাড়ি হতে ঠুঠাপাড়া সমির মেম্বারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তার ব্যাপারে চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করি সামনে অর্থ বছরে টেন্ডার হতে পারে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা; সামিল উদ্দিন আহেমদ শিমুলের সাথে মুঠো ফোনে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও ফোন রিসিভ না করায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।