নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার বড়থা ডি আিই ফাজিল মাদ্রাসার নৈশ্য প্রহরী ও পরিচ্ছন্ন কর্মী নিয়োগ পদে মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাও নুরুল ইসলাম বিরুদ্ধে নিয়োগ বানিজ্য ও অন্যের জমি জোর পূর্বক দখলের অভিযোগ উঠেছে।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি ধামইরহাট উপজেলার বড়থা মাদ্রাসার নৈশ্য প্রহরী ও পরিচ্ছন্ন কর্মী পদে কথিত নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় পত্নীতলা নজিপুর সিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদ্রাসায়। পরীক্ষার ফল ঘোষলা নিয়ে শুরু হয় বিভিন্ন রকম তালবাহানা। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো: সিরাজুল ইসলাম ও প্রিন্সিপাল মাও নুরুল ইসলাম ঘোষণা দেন বড়থা মাদ্রাসায় গিয়ে পরিক্ষার ফল ঘোষণা করা হবে। এমন ঘোষণার পর নিয়োগ পরিক্ষায় অংশগ্রহণকারী পরিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়। যার ফলে রাতের তৈরীকৃত ফলাফল ঘোষণা করে।যেখানে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নৈশ্য প্রহরী পদে মো: ফরিদুল ইসলাম ও পরিচ্ছন্ন কর্মী পদে হারুন রশিদ কে নিয়োগ দেওয়া হয়।ফল ঘোষণার পরেই পরিক্ষার্থী বড়থা গ্রামের আব্দুর রশিদ এর দুই ছেলে আব্দুল মজিদ ও মো; ফজলুর রহমান এবং তাদের চাচা আব্দুস সাত্তার ( মেম্বার ) প্রিন্সিপাল মাও নুরুল ইসলাম ধাক্কাধাক্কি করে আর বলে আমাদের ৫ লাখ ১০ হাজার টাকা ফেরত দে।
এ বিষয়ে আব্দুল মজিদ ও ফজলুর রহমান এর চাচা আব্দুস সাত্তার ( মেম্বার ) জানান, আমার ভাতিজার নিয়োগের জন্য মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাও নুরুল ইসলাম ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো: সিরাজুল ইসলাম ৬ লাখ টাকা দাবি করে এবং সেই টাকা তিন দিনের মধ্যে পরিশোধ করতে নির্দেশ দেন।কোন উপায় না পেয়ে মাঠের ধানি জমি বিক্রি করে তাদের কে টাকা দিই। নিয়োগ পরিক্ষার এক সপ্তাহ আগে আমি জানতে পারি আমার ভাতিজাকে নিয়োগ দেওয়া হবেনা, সে সময় আমি প্রিন্সিপালের নিকট টাকা ফেরত চাইলে তখন প্রিন্সিপাল বলে আপনার ভাতিজার চাকরী আছে আমি আছি এ নিয়ে চিন্তার কোন কারণ নেই।
অপরদিকে পত্নীতলা উপজেলার চকদোচাই গ্রামের মো: মতিউর রহমানের জমি অবৈধ ভাবে দখল করা ও প্রাণ নাশের হুমকির অভিযোগও উঠেছে। এ বিষয়ে চকদোচাই গ্রামের মো: আছের আলী মন্ডল এর ছেলে মো: মতিউর রহমান বাদী হয়ে আদালতে মামলা দা্য়রে করে। যাহার মামলা নং: মিছ ১০৭/২০২২ ইং।
এবিষয়ে মামলার বাদী মো: মতিউর রহমান জানান, প্রিন্সিপাল মাও নুরুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে আমাদের জমি দখল করার চেষ্টা করতেছে এবং এই জমির জন্য আমাদের বিভিন্ন ধরনের গালিগালাজ এমন কি মেরে ফেলার হুমকি পর্যন্ত দেয় যার ফলে আমরা বাদ্ধ হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করি। আমরা তাকে বলেছিলাম এই জমি যদি আপনার হয় তাহলে জমির কাগজপত্র দেখান তাহলে আমরা স্বেচ্ছায় জমি আপনাকে বুঝিয়ে দিব। তখন তিনি জমির কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।হঠাত গত ২৩-০৩-২০২২ ইং তারিখে বেশ কয়েকজন লোক নিয়ে এসে জমিতে লাগানো গাছ কাটে এবং জমি দখল করে। আমরা বুঝতে পারলাম না এই জমি প্রিন্সিপাল নুরুল ইসলামের কিভাবে হয় যেখানে দলিল আমাদের নামে ,৬২ ও ৭২ এর রেকর্ড আমাদের নামে।এই জন্য আমরা আইন এর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছি, আমাদের বিশ্বাস আমরা ন্যায় বিচার পাবো।
নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক শর্তে এলাকার একাধিক গণ্যমাণ্য সুধী সমাজের ব্যক্তিরা বলেন, প্রিন্সিপাল মাও নুরুল ইসলাম এর বাবা মৃত ইব্রাহিম হোসেন ছিলো পিস কমিটির অন্যতম সদস্য।যার নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের এলাকার মুক্তিযোদ্ধা ও নিরীহ মানুষেদের উপর অমানসিক নির্যাতনের স্বিকার হয়েছে। তাছাড়া প্রিন্সিপাল মাও নুরুল ইসলাম জামায়াত করতো। বিএনপি যখন ক্ষমতায় আসলো তখন এই প্রিন্সিপাল বিএনপির সংসদ সদস্য সামসুজ্জোহা খান ( জোহা ) এর খুব কাছের একজন ব্যক্তি হিসাবে পরিচিতি পেয়েছিলেন, আর আজ তিনি আওয়ামীলীগ হয়ে গেছে।আবার আজ তিনি সমাজের বুকে আলেম হিসাবে পরিচয় দেন।আমরা আলেমদের সন্মাণ করি।কিন্তু তিনি বতমানে সমাজের বুকে যেসকল কাজ করতেছে তা কখনোই একজন প্রকৃত মানুষের কাজ হতে পারেনা । এই মূখোশধারী একজন আলেমের জন্য অত্র এলাকার সাধারণ মানুষ আজ পুরো আলেম জাতির দিকে আগুল তুলতেছে।আমরা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি করছি প্রিন্সিপাল মাও নুরুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে যেন কঠোরভাবে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
এবিষয়ে প্রিন্সিপাল মাও নুরুল ইসলামের সাথে একান্ত আলাপকালে নিয়োগ এর বিষয়ে বলেন, নৈশ্য প্রহরী পদে মো: ফরিদুল ইসলাম ও পরিচ্ছন্ন কর্মী পদে হারুন রশিদ কে আমরা আগেই সিলেকশন করি। আর আপনারা তো জানেন এখন এই ভাবেই নিয়োগ হয়। আব্দুল মজিদ ও ফজলুর রহমান এর নিকট থেকে টাকা নিয়ে নিয়োগ কেন দেওয়া হলোনা এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, এই বিষয়টি সভাপতি ভালো বলতে পারবে।তবে আমি আব্দুল মজিদ ও ফজলুর রহমান এর টাকা ফেরত দিবো। ( ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষিত )। অপরদিকে জমি দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি পুরো বিষয়টি এরিয়ে যান।
মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো: সিরাজুল ইসলাম এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব টাকা প্রিন্সিপাল নিয়েছে।সব টাকা তার কাছে আছে।