শিরোনাম
  • ফের যে আসন থেকে নির্বাচনের সম্ভাবনা রয়েছে খালেদা জিয়ার আন্তর্জাতিক ফুটবলে যে সমস্যার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ইসরায়েল কে এই নতুন মেসি-ইয়ামাল? ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে যা বললেন ড. মুহাম্মদ ইউনুস সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন কাঠামোতে যে নতুন নির্দেশনা দিলেন প্রধান উপদেষ্টা আলুর দাম নিয়ে যে দুঃসংবাদ শোনালেন বাণিজ্য উপদেষ্টা হাইকোর্টের রায়ের স্থগিতাদেশ নিয়ে যা জানালেন আইনজীবী শিশির মনির নির্বাচন নিয়ে নতুন যে বিবৃতি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার সরকার নির্বাচন নিয়ে চাপ দিলে পদত্যাগ করবো: সিইসি শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার করলে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
  • উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় সংশ্লিষ্ট মহল

    যোগ্যতা না থাকলেও অন্য ক্যাডার থেকে প্রশাসন ক্যাডারে অন্তর্ভুক্তির প্রবণতা বাড়ছে

    নিজস্ব প্রতিবেদক

    ১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:৩৮ অপরাহ্ন

    যোগ্যতা না থাকলেও অন্য ক্যাডার থেকে প্রশাসন ক্যাডারে অন্তর্ভুক্তির প্রবণতা বাড়ছে

    প্রযুক্তিগতসহ বিসিএসের বিভিন্ন ক্যাডারের মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে ঢুকলেও পরে প্রশাসন ক্যাডারে অন্তর্ভুক্তি হতে চান অনেকে।  প্রয়োজনীয় যোগ্যতা না থাকলেও বেশি সুযোগ-সুবিধা ও মূল্যায়নের আশায়ই মূলত এই প্রবণতা বাড়ছে বলে জানা গেছে। এতে একদি বিভিন্ন ক্যাডারে দক্ষ জনবল সঙ্কটসহ নানা জটিলতা সৃষ্টির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে পদোন্নতিসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা অনেকটা পিছিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় উদ্বেগ বিরাজ করছে। 

    সংশ্লিষ্টরা জানান,ম বাংলাদেশের একটি সুসংগঠিত সিভিল সার্ভিস ব্যবস্থা আছে, যেখানে পেশাগত ও সাধারণ ক্যাডারের কর্মকর্তারা দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। পেশাগত ক্যাডারের সদস্যরা বিশেষ ক্ষেত্র নিয়ে পড়াশোনা করেন এবং প্রশাসনিক কাঠামোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তবে, সম্প্রতি এই পেশাদার কর্মকর্তারা তাদের প্রযুক্তিগত চাকরি থেকে সাধারণ প্রশাসনিক পদে বদলি হচ্ছেন। যদিও এটি তাদের ব্যক্তিগত ক্যারিয়ারকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যায়, তবুও এটি রাষ্ট্রের জন্য অনেক ক্ষতির কারণ হয়।

    প্রধান ক্ষতি হলো- পেশাদার কর্মকর্তারা সাধারণ পদে চলে যাওয়ায় দেশের প্রযুক্তিগত দক্ষতা কমে যায়। বাংলাদেশে ২৬টি আলাদা ক্যাডারের মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ করা হয়, যেখানে ১২টি প্রযুক্তিগত এবং ১৪টি সাধারণ ক্যাডার। প্রযুক্তিগত ক্যাডারটি পেশাদারদের তাদের ক্ষেত্রের বিশেষ জ্ঞান ও দক্ষতা কাজে লাগাতে সহায়তা করে। তবে, যখন এই বিশেষজ্ঞরা সাধারণ পদের দিকে চলে যান, তখন রাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত জ্ঞান হারায়, যা সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয়।

    যেমন বিসিএস (পাবলিক ওয়ার্কস) ক্যাডারের একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার অবকাঠামো, বিল্ডিং নিয়ম এবং নির্মাণ সামগ্রী সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান রাখেন। যখন কেউ বিশেষ প্রযুক্তিগত পদ থেকে সাধারণ প্রশাসনিক পদে চলে যান, তখন বড় বড় নির্মাণ প্রকল্পগুলোর মান ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত দক্ষতা হারিয়ে যায়। কৃষি, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ ব্যবস্থাপনাতেও একই সমস্যা দেখা যায়, যেখানে বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তাদের অভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত ও প্রকল্প পরিচালনা বাধাগ্রস্ত হয়।
    এই পরিবর্তনের ফলে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয় তা সহজে পূরণ করা সম্ভব হয় না। কারণ প্রযুক্তিগত দক্ষতা দীর্ঘমেয়াদী শিক্ষা ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে তৈরি হয়, যা অন্যদের দ্রুত শেখা সম্ভব নয়। ফলে স্বাস্থ্য, কৃষি ও অবকাঠামোসহ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোর শাসন ব্যবস্থার মান কমে যায়, যার ফলে ত্রুটিপূর্ণ নীতি, অদক্ষ সম্পদ বণ্টন বা প্রকল্প ব্যর্থতার ঝুঁকি বাড়ে।

    সূত্রমতে, বাংলাদেশের উন্নয়ন কৌশল প্রযুক্তিগত ও সাধারণ উভয় কর্মীবাহিনীর উপর নির্ভর করে। স্বাস্থ্যসেবা, অবকাঠামো ও কৃষি ক্ষেত্রে পেশাজীবীরা পাঁচ বছরের পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজিস) এবং বিভিন্ন সেক্টর-ভিত্তিক লক্ষ্যগুলো বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। যখন কর্মকর্তারা এসব ক্ষেত্র থেকে সাধারণ পদে চলে যান, তখন বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়। যেমন-বিসিএস (হেলথ) ক্যাডারের ডাক্তাররা প্রত্যন্ত এলাকায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছানো, হাসপাতাল পরিচালনা এবং জনস্বাস্থ্য উদ্যোগ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। যখন এই ডাক্তাররা সাধারণ প্রশাসনিক পদে চলে যান, তখন দেশের স্বাস্থ্যসেবায় অভিজ্ঞ কর্মীর অভাব দেখা দেয়, যা উন্নয়নশীল দেশের জনস্বাস্থ্য সমস্যাগুলোর জন্য বিশেষভাবে প্রয়োজনীয়।

    দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সংক্রান্ত উদ্যোগগুলোর ক্ষেত্রে, যেমন মাতৃ ও শিশুমৃত্যুর হার কমানো, সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং পুষ্টি উন্নয়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে, এই অভাব বড় সমস্যার সৃষ্টি করে। তেমনিভাবে বিসিএস (এগ্রিকালচার) ক্যাডারের কৃষি কর্মকর্তারা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গবেষণা, উন্নয়ন এবং সম্প্রসারণ সেবা দিয়ে থাকেন, কিন্তু তারা সাধারণ পদে চলে গেলে এই ক্ষেত্রে নীতি বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হয়, যা বাংলাদেশের কৃষি অর্থনীতিকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে।

    এই পরিবর্তনটি সিভিল সার্ভিসে “ব্রেন ড্রেন” বা মেধা হ্রাসের কারণ হয়, কারণ দক্ষ পেশাজীবীরা তাদের প্রযুক্তিগত ক্ষেত্র থেকে সরে যান, ফলে এসব ক্ষেত্রে প্রতিভা ও নেতৃত্বের অভাব দেখা দেয়। সরকার এসব পেশাজীবীদের শিক্ষায় প্রচুর বিনিয়োগ করে, কিন্তু তারা তাদের বিশেষ ক্ষেত্রে থাকেন না বলে এই বিনিয়োগের সুবিধা কমে যায়। জনস্বাস্থ্যের মতো জরুরি ক্ষেত্রে অবদান রাখা একজন চিকিৎসক প্রশাসনিক পদের দিকে চলে গেলে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে তার প্রত্যক্ষ প্রভাব আর থাকে না।

    প্রযুক্তিগত ক্ষেত্র থেকে এই বিশেষজ্ঞরা সরলে তা প্রতিষ্ঠানিক উন্নয়নে বাধা দেয়। মন্ত্রণালয় এবং বিভাগগুলো বিশেষজ্ঞদের উপর নির্ভর করে তাদের প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতা বাড়াতে, কিন্তু যখন তারা সাধারণ পদে চলে যান, তখন তা কঠিন হয়ে পড়ে। এতে করে উদ্ভাবনী ক্ষমতা ও বিশেষ খাতে শাসন ব্যবস্থার উন্নয়নে বাঁধা সৃষ্টি হয়। যেমন-পরিবেশ সুরক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলো, যেমন পরিবেশ অধিদপ্তর, দক্ষ এবং অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞদের প্রয়োজন যারা পরিবেশ বিজ্ঞান, বাস্তুতন্ত্র এবং নিয়ম কাঠামো সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখেন। দক্ষ কর্মীরা সাধারণ পদের দিকে গেলে এসব প্রতিষ্ঠান দীর্ঘমেয়াদী দক্ষতা এবং নেতৃত্ব বিকাশে অসুবিধায় পড়ে এবং বাংলাদেশের পরিবেশগত সমস্যাগুলো মোকাবেলায় সমস্যা হয়।

    এই প্রবণতার পেছনে অনেক সময় এই ধারণা কাজ করে যে, সাধারণ পদে সুযোগ, মর্যাদা এবং কর্তৃত্ব বেশি পাওয়া যায়। এছাড়াও, সরকারি ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ ও বিশেষজ্ঞতাকে সাধারণত ততটা মূল্যায়ন করা হয় না, যা এই সমস্যাকে আরও বাড়ায়।

    এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একটি সমন্বিত কৌশল প্রয়োজন। প্রথমে সরকারকে নীতিমালায় পরিবর্তন এনে প্রযুক্তিগত পদ থেকে সাধারণ পদের বদলির সুযোগ কমানো উচিত। একইসঙ্গে, প্রযুক্তিগত ক্যাডার কর্মকর্তাদের জন্য ক্যারিয়ার উন্নয়ন ও নেতৃত্বের সুযোগ বৃদ্ধি করতে পদক্ষেপ নিতে হবে।

    এর মধ্যে উদ্ভাবনী ও অসাধারণ কাজের জন্য আর্থিক পুরস্কার দেওয়ার সুযোগ থাকতে পারে। পাশাপাশি, প্রযুক্তিগত পরিষেবাগুলিতে মাঝারি এবং উচ্চ স্তরের অতিরিক্ত পদ সৃষ্টি করার কথা ভাবা যেতে পারে। সরকারকে এমন একটি সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে যেখানে প্রযুক্তিগত দক্ষতাকে মূল্যায়ন করা হয় এবং যারা তাদের বিশেষায়িত ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকেন তাদের জন্য উপযুক্ত স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

    প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তাদের তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে ধরে রেখে বাংলাদেশ তাদের জ্ঞান ও দক্ষতাকে কাজে লাগাতে পারে, যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে শাসন ব্যবস্থাকে মজবুত করবে এবং উন্নয়ন ত্বরান্বিত করবে।

    জেনারেল ক্যাডার ৮০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা দেয়। অন্যদিকে টেকনিক্যাল ক্যাডার ৫০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা দেয়। যারা সাধারণ /জেলারেল ক্যাডারে কোয়ালাফাইই করে না তারা কিভাবে পরে ডিএস পুলে আসেন উপসচিব হতে! সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত হতে চান অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা।

    সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রশাসন ক্যাডার একই সাথে বিসিএস প্রশাসন এবং সচিবালয় ক্যাডার- উভয় সার্ভিসকে ইনহেরিট করে। কারণ এই দুটি মার্জ করে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার সৃজন করা হয়। পরবর্তীতে প্রকৃচি’র আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সম্ভবত এরশাদের শাসনামলে অন্যান্য সার্ভিসের জন্য ২৫% কোটা দেওয়া হয়। বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের পদোন্নতি যোগ্য উপসচিব পদ কমে গিয়ে ৭৫ ভাগে নেমে দাঁড়ায়। পরবর্তীতে এই ৭৫ ভাগ কেও চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের করা হয় । আপিল বিভাগের ফুল বেঞ্চ ৭৫ ভাগ পদ বহাল রাখে। আপিলের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ করলে সেটিও খারিজ হয়ে যায়। আপিল বিভাগ মামলার শুনানিতে মন্তব্য করেছিলেন যে, এই পদগুলি প্রশাসন ক্যাডারের ছিল। সেখান থেকে কর্তন করে আপনাদেরকে যে ২৫ ভাগ দেয়া হলো সেটি কোন যৌক্তিকতার ভিত্তিতে করা হয়েছে সেটি আগে বলুন। রায়ে এই বিষয়েও পর্যবেক্ষণ রয়েছে যে, অন্য সার্ভিস কে ২৫% কোটা প্রদান এর অবৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এখনও কোন মামলা হয় নাই, হলে সেটির বৈধতা বা অবৈধতা তখন পরীক্ষা করা যাবে। 


     




    সাতদিনের সেরা খবর

    জাতীয় - এর আরো খবর

    তিন মন্ত্রণালয়ে সচিবের দায়িত্বে রদবদল

    তিন মন্ত্রণালয়ে সচিবের দায়িত্বে রদবদল

    ১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:৩৮ অপরাহ্ন

    অবশেষে সচিব পেল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়

    অবশেষে সচিব পেল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়

    ১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:৩৮ অপরাহ্ন