বেনাপোল কাস্টমস বন্দর দিয়ে ২০ কোটি টাকার আমদানী পণ্য মাত্র দুই কোটি টাকা দেখিয়ে ছাড়করণের অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কাস্টমস কর্মকর্তারা জড়িত বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে অতি দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে অভিযুক্ত পণ্যগুলো আটকাতে না পারলে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে। অতএব, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে দ্রুত অভিযুক্ত মালামালগুলো আটকানোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন বেনাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর বেনাপোল বন্দরের মোঃওয়াশিম উদ্দিন, (মোঃ ওয়াসিম উদ্দিন) লিখিতভাবে এই ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানান।
পণ্যের তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, মেনিফেস্ট নাং -৬০১২০২৩০০৪০০৬৩৬৯১ & ৬০১২০২৩০০২০০৬৩৬৯২ & ৬০১২০২৩০০২০০৬৩৬৯৭
তাং-১৭-১২-২০২৩
পণ্য :- ফেব্রিক্স
মোট প্যাকেজ :- ৯৯০+৫৯৫+৭৪২= ২৩২৭. আমদানি :- রোজা মনি এন্টারপ্রাইজ, দিনাজপুর।
ডলার= $= ৯৬,৯৭৩.০০
টোটাল ০৮ গাড়ি, পণ্য আছে = ১৫,০০,০০,০০০ টাকা। এল সি ভেলু = ১,০০,০০,০০০ টাকা। মেনিফেস্ট নাং -৬০১২০২৩০০৪০০৬৩৬৬২ & ৬০১২০২৩০০২০০৬৩৬৮৮ & ৬০১২০২৩০০২০০৬৩৭০০
তাং-১৭-১২-২০২৩
পণ্য :- ফেব্রিক্স
মোট প্যাকেজ :- ২৬৪+২২৮+৩৮৪ = ৮৭৬.
ডলার= $= ৯৪,২৫২.০০
টোটাল ০৪ গাড়ি। এল সি ভেলু= ১,০০,০০,০০০ টাকা। আট গাড়ি মালের এল সি ভেলু এক কোটি টাকা ও চার গাড়ির এল সি ভেলু এক কোটি টাকা।কিন্তু মালামাল আছে বিশ কোটি টাকার। বাকি টাকা ভোন্ডির মাধ্যমে ইন্ডিয়ায় পাঠাইছে।
তিনি বলেন, কাস্টম ম্যানেজ করে দ্রুত মালামাল ছাড় করানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। আমদানি কারকগণের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং কেশ হওয়া উচিত, এ ব্যাপারে তদন্ত করলে অনেক কিছু বেরিয়ে আসবে, শেড নাং-২৯। আমদানিকারক: সেইলন এন্টারপ্রাইজ, ঢাকা, & আয়ুশি ইন্টারন্যাশনাল ঢাকা, & নুহা ইন্টারন্যাশনাল ঢাকা।
এ বিষয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে বলাহয়, বেনাপোল বন্দরের ২৯ নম্বর শেডে ১২ ট্রাক ফেব্রিকস জব্দ করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। সোমবার সকালে ২০ কোটি টাকা মূল্যের এ পণ্যগুলো জব্দ করে তারা। তিন চলানের দুই হাজার ৩২৭ প্যাকেজ ফেব্রিকস আমদানিকারক রোজা মনি এন্টারপ্রাইজ, দিনাজপুর। রপ্তানিকারক সুন্দরী ফ্যাশন, ইন্ডিয়া। ঘোষণায় আছে সিনথেটিক ফেব্রিকস, তবে পাওয়া গেছে সব শার্টিং ফেব্রিকস ও ভেলভেট ফেব্রিকস। মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে সেনথিটিক ফেব্রিকসের স্থলে শার্টিং ফেব্রিকস, চিনাউল ফেব্রিকস ও ভেলভেট ফেব্রিকস আমদানি করা হয়।
পণ্য চালানটি বন্দরে প্রবেশের সময় ওয়েইং স্কেলে ৮ টন মালামাল বেশি থাকলেও স্কেলে কর্মরত বন্দরের কর্মকর্তা সন্দিপ রায় প্রিন্ট দেওয়ার সময় মালামাল সঠিক আছে বলে ওজন স্লিপ প্রিন্ট করে দেন।
বন্দর সূত্র জানায়, পণ্য চালান খালাসের দায়িত্বে আছে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট তৃণা অ্যাসোসিয়েটস ও অনন্তা এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেড বেনাপোল। শরীফুল ইসলাম নামে এক যুবকের কোনো লাইসেন্স নেই। তিনি এ দুটি লাইসেন্স ভাড়া করে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছেন। কাস্টমস’র চোখ ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘদিন এ সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট দিয়ে বহু অর্থের মালিক হয়েছেন। ঘোষণায় কটন ফেব্রিকস থাকলেও সব শার্টিং ফেব্রিকস ও বক্স ফেব্রিকস পাওয়া যায়। পার প্যাকেজ টিয়ার তিনশ’ গ্রাম ঘোষণা থাকলেও তিন কেজি করে পাওয়া যায়। একই শেডে ৫-৭টি ফেব্রিকসের চালান রেখে, একটি কনসাইনমেন্ট পরীক্ষা করে খালাসের সময় মিথ্যা ঘোষণার চালান খালাস করে থাকে।
পণ্যগুলো খালাসের দায়িত্বে নিয়োজিত শরীফুল ইসলাম জানান, পণ্যগুলো খালাস করার দায়িত্ব আমার। আমার নিজের কোনো লাইন্সেন নেই, ভাড়া লাইসেন্সেই কাজ করি। তবে মালামালগুলো কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এখনো পরীক্ষণ কার্যক্রম সম্পন্ন করেনি। টিয়ারজনিত কারণে চার টন মালামাল বেশি আছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ ওয়েট স্লিপ কম্পিউটার জালিয়াতি করে তিনি প্রতিনিয়ত রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছেন। যা তদন্ত করলে ধরা পড়বে।
বেনাপোল কাস্টম হাউজের কমিশনার আব্দুল হাকিম জানান, আমাদের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে পণ্যগুলো ভারতীয় ট্রাক থেকে বন্দরের শেডে আনলোড করা হয়েছে। তবে শতভাগ কায়িক পরীক্ষণ কার্যক্রম যত দ্রুত সম্ভব শেষ করা হবে। অনিয়ম করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।