আমি নাকি তার ক্রাশ! বিস্মিত হই যখন শুনি তেনার বয়স চব্বিশ বছর! ভালোবাসা নয় দুঃখ উতরে ওঠে! কারণ আমার বড় পুত্রের বয়স চব্বিশ বছর! অকারণে কেঁদে চলেছি। এই মুখ আমি কাকে দেখাই! মেহেদী পাড়ার তিন অজুহাতের এক অযুহাতে তেনার সাথে আমার পরিচয়। তিনি সেদিন বিরাট সাহায্য করেছিলেন। তার ব্যবসা বাদ দিয়ে। তিনি মিনি ট্রাক দিয়ে হাট থেকে ছাগল কিনে এনে স্থানীয় বাজারে বিক্রয় করেন! মোর জ্বালা শেষ বয়সে ছাগল ব্যাপারীর প্রেমিকা! অবশ্য এটা একটা ভালো ব্যবসা। স্বাধীন ব্যবসা। ছোট কালে আমার আকিকা দেয়া হয়েছিলো কিনা মাকে জিজ্ঞেস করতে মনে নেই। বিয়ের পর স্বামী আকিকা দিয়েছিলো কিনা তাও জানতে পারিনি! তবে কঠিন বিশ্বাস এই প্রেমিক ছাগল জবাই করে আমার আকিকা দেবেই দেবে। ভাবছেন, ছাগল ব্যাপারি! ???? আহারে বেচারা!???? আধবুড়ো কাঁঠাল ব্যাপারি থেকে তো ভালো। যে বছর আমি গ্রামে আসি, সে বছর বোরখা পরে আমি আর ভাবী কাঁঠাল কিনতে বাজারে গেলে অতীতের এক বিশাল টাকাওয়ালা ব্যক্তি দেখি বাজারে কাঁঠাল বিক্রি করছে। তার এই অধঃপতনের জন্যে মনে নানা প্রশ্ন ঘোরপাক খাচ্ছে! পরে শুনেছি জুয়া তাকে কঠিন বাঁশ দিয়েছে! ভাবী কাঁঠাল তার কাছ থেকে কিনেছে। ভাবীকে বলছে, আপনার ননদ বাড়ি আসেনা? অনেক বছর দেখিনা। ভাবী বলে পাশের জনই দাঁড়িয়ে আছে। কাঁঠালের দাম নিলোনা। বাড়তি কথাও বলেনি। একদিন ঝুম বৃষ্টির মধ্যে একখান বড় সাইজের কাঁঠাল দিয়ে তিনি দৌড়ে চলে গেলেন। ভাবী স্তব্দ! তারপর আর খোঁজ নেই। রাস্তায় লাগোয়া বাড়ি! সরাচর বাড়ির গেইটে আমার যাওয়া হয়না। কিজন্যে সেখানে মানে মূল গেইটের বাইরে গেলাম গিয়ে পরিচিত মহিলাদের নিয়ে কথা বলছিলাম। দেখি ধপাস করে হোণ্ডা নিয়ে কাঁঠাল ব্যাপারি আমাদের অপজিটের ড্রেনে! হোণ্ডা খান বেশ দামী বোঝা যায়! আমি শুধু বলেছি, শয়তান বুড়ো হলেও গাছে উঠে মুতে! তিনি কোনো 'রা' করেন নি!
হঠাৎ কিছুক্ষণ পরে এক মহিলা এসে বললো, আপনাকে দেখলে তিনি নার্ভাস হয়ে যান। তাই আপনাকে দেখতে গিয়ে ড্রেনে পড়ে গেছেন। বললাম, দালাল হিসাবে আপনি বেশ ভালো নাম করবেন। তবে আমি আপনার দালালী পছন্দ করছিনা! আপাতত একটা গ্রাম্য সুপারহিট বচন আমার উপর ঢেলে চলে গেলেন তিনি আর কোনোদিন আসেননি!
আজ ময়লার ঝুড়ি হাতে নিয়ে খালের পাড় গেলাম ময়লা ফেলতে। সাধারণত ময়লার ফেলার কাজ, কাজের লোকই করে। ছোট ছেলের জন্যে মুরগী এনেছিলাম কিন্তু ময়লা ফেলার লোক চলে গেছে।তাই বলে আর্বজনা নিয়ে তো থাকা যায়না। তাই ফেলে দেয়ার সময় সেই বাচ্চা ছাগল ব্যাপারি রিক্সায় বসে আছে। খুব জোরে গান গাইছে, "জিও তো জিয়ে ক্যাইসে বিন এ আপকে!"
ভাবী বলে এই তোর সাহসতো কম নয়, আমাদের দেখে উচ্চস্বরে গান গাইছিস! চড় মেরে দাঁত ফেলে দেবো! বলে, চাচী আপনাকে দেখে গান গাইনি ছোট আপুকে দেখে গান গাইছি! আপুর পায়ের পাতা আর নখ গুলো দারুণ চমৎকার! আমার পায়ের নখে মেহেদি দেয়া! নখ গুলো একটু বড় বড়! ভাবী বলে, তাকে চিনিস, সে কে? ছেলেটি প্রতিউত্তরে আমার ক্রাচ বলে ভো দৌড় দিলো!
মনে মনে ভাবছি বোরখা ছাড়া নারী যতোই ঢেকে রাখুক নিজেকে,পুরুষ বিচ্ছুর মতো তাকিয়ে উদোম জায়গা খুঁজে খুঁজে বের করবেই! এসব বলে কয়ে লাভ নেই! পুরুষ চিরকাল পুরুষই। আর নারী চিরকাল নারী। অবরুদ্ধ ভাবে বেঁচে থাকতে হবেই নারীকে। হোক ছেলের বয়সি পুরুষ কিংবা বাবার বয়সি পুরুষ! তাদের থেকে রেহাই নেই! রেহাই পাওয়াও যাবেনা বলে মনেহয়!
তো....... দিলতো পাঁগ্যাল হ্যাঁয় দিল দিবানা হ্যাঁয়!