ভিক্ষা করার চেয়ে নিজে কর্ম করে খাওয়া অনেক ভাল। হোক না কেন তা অল্প। তাতে সুখ ও শান্তি দুইটোই আছে। তাই শেষ বয়সে এসেও আমি নিজ হাতে ডালি বুনে বাজারে বিক্রী করে যে সামান্য আয় হয়,তা দিয়ে বুড়া বুড়ির সংসার চালাতেই হচ্ছে। জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের রানীনগর ঘুনটোলা গ্রামের মৃত রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে ৯০বছর বয়সী তোবজুল হকের সাথে তার নিজ বাড়ির সামনে ডালি বোনার সময় এ প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় গত শুক্রবার সকালে।
তিনি আরো জানান, প্রায় ২০ বছর থেকে বাঁশ কিনে ডালি বুনার কাজ করি। আগে দিনে ১৫০/২০০ টাকা আয় হতো। তখন দিনে বড় ডালি একটা ও ছোট ডালি দুটো বানাতে পারতাম। এখন টাকার অভাবে বাঁশ কিনতে পারি না। কোন রকমে এক‘শ টাকা দিয়ে একটা বাঁশ কিনে দুই দিনে একটি বড় ডালি ও ছোট ডালি দুইটা বুনাতে পারি। তাতে পুঁজি বাদে দিনে ৫০ টাকা আয় হয়। তাই দিয়ে আমাদের সংসার চলে। ডালি বুনার আগে ঘরামুর কাজ করতাম। তখন ভালই আয় হতো। কিন্তু এখন বয়সের কারনে আর পারি না। তাই ডালি বুনার কাজটাই করি।তিনি আরো বলেন প্রায় চার বছর আগে পত্রিকায় আমার খবর ছাপানো হয়েছিল। তাই মন্টু ডাক্তারের ছেলে এমপি শিমুল ডাক্তারের একজন লোক এসে আমার ছবি, আইডি কার্ডের ফটো কপি নিয়ে গিয়াছিল এবং বলেছিল বাড়ি করে দিবো। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন খবর হয়নি। বর্তমানে একটি ভাঙ্গা টিনের ঘরে বাস করি। বৃষ্টি হলে পানি পড়ে ,তাই বৃষ্টির সময় অনেক সময় অন্যের ঘরে চলে যাই। কোন মেম্বার চেয়ারম্যান কোন দিন খোঁজ খবর নেয়নি। দুইজনের সংসারে ভাঙ্গা ঘরে থাকি । জমিজমা একেবারেই সামান্য। মাত্র পৌনে পাঁচ কাঠা অর্থাৎ প্রায় সাত শতক। ছেলে পাঁচজন ও মেয়ে তিন জন। ছেলে মেয়ে সবার বিয়ে হয়েছে। সবাই নিজ নিজ সংসার নিয়ে ব্যস্ত। আমার আয় দিয়ে কোন রকমে সংসার চালায় এবং স্বামী-স্ত্রী দুইজনের বয়স্কভাতার টাকা দিয়ে কাপড়চোপড় কিনি ও ঔষধ কিনি। আমার শেষ চাওয়া পাওয়া একটি ঘর ও সামান্য কিছু টাকা। ঘরে বাস করবো ও টাকা বাঁশ কিনে ডালি বুনাবো।