ব্যবসায় শ্রেণিতে দেশের সর্বোচ্চ করদাতা হয়েছেন কাউছ মিয়া। ৯২ বছর বয়সী এই ব্যবসায়িক প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ ঘণ্টা অফিস করেন। নিজেই ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের খুঁটিনাটি তদারক করেন।
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে কাউছ মিয়া পুরোনো ঢাকার আগা নওয়াব দেউড়ীর কার্যালয়ে যান। দুপুরের খাবার বাসা থেকে আসে। সারা দিন কাজ করেন। এরপর রাত আটটার দিকে বাসায় ফেরেন। কাজের চাপ থাকলে কখনো রাত ১২টা পর্যন্ত তাঁকে অফিসে থাকতে হয়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গত বুধবার ঢাকায় অফিসার্স ক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে কাউছ মিয়াকে সেরা করদাতার সম্মাননা দিয়েছে। ব্যবসায় শ্রেণিতে দেশের সর্বোচ্চ এই করদাতা। তিনি বলেন, শারীরিক সামর্থ্য আছে বলেই এখনো কাজ করে যাচ্ছি।
কাউছ মিয়া জানান, এই বয়সেও তিনি প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত নিয়মিত, অর্থাৎ ১০ ঘণ্টা অফিস করেন।
ঘড়ির কাঁটায় তখন বেলা ঠিক ১১টা। ছেলে মানিক মিয়ার হাত ধরে রাজধানীর বেইলি রোডের অফিসার্স ক্লাবের মিলনায়তনে ঢুকলেন দেশের সেরা করদাতা ৯২ বছর বয়সী কাউছ মিয়া। স্যুট-টাইয়ে কেতাদুরস্ত কাউছ মিয়া কিছুটা হেঁটে নির্দিষ্ট চেয়ারে গিয়ে বসলেন। তাঁর চলাফেরায় সহায়তা করেন তাঁর ছেলে ও আইনজীবী।
কাউছ মিয়ার কাছে গিয়ে কথা বলতে চাইলে সাড়া দেন তিনি। করোনাকালে ব্যবসা-বাণিজ্য কেমন হলো? এ প্রসঙ্গে কাউছ মিয়া বলেন, করোনাকালেও তুলনামূলকভাবে ভালো ব্যবসা হয়েছে। লাভ কমেনি। তিনি জানান, তাঁর মূল ব্যবসা হচ্ছে হাকিমপুরী জর্দা ও তামাকের পাইকারি ব্যবসা।
কাউছ মিয়ার বড় ভাইয়েরা কোথায়?
কাউছ মিয়া জানান, ১৯৫৮ সাল থেকে তিনি নিয়মিত কর দেন। এত বছর ধরে কর দিয়ে কী লাভ হলো? প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, দেশটা ভালো হয়েছে। অনেক উন্নতি হয়েছে। জনগণের করের টাকায় সরকার নানা রাস্তাঘাট ও সেতু করছে। তিনি মনে করেন, তরুণ করদাতাদের উৎসাহ দিলে দেশে আরও বেশিসংখ্যক করদাতা পাওয়া যাবে। সরকারের রাজস্ব আদায় বাড়বে। এ ছাড়া কর দেওয়ার ব্যবস্থা সহজ করতে হবে।
১৯৯৮ সাল থেকে, অর্থাৎ টানা ২৩ বছর ধরে কাউছ মিয়া দেশের সেরা করদাতা। তবে ২০১৫ সাল থেকে বিভিন্ন শ্রেণিতে সেরা করদাতাদের পুরস্কার দেওয়া শুরু করে এনবিআর।
অনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী শ্রেণিতে সেরা করদাতাদের সম্মাননা ক্রেস্ট, সনদ ও কর কার্ড নিতে যখন কাউছ মিয়ার নাম ঘোষণা করা হয়। তখন ছেলে মানিক মিয়ার হাত ধরেই কাউছ মিয়া মঞ্চের দিকে এগিয়ে যান। এ সময় উপস্থিত অন্য করদাতারা করতালি দিয়ে তাঁকে অভিবাদন জানান।