শিরোনাম
  • সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্য বিনষ্ট করতে প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী চক্রান্ত চালাচ্ছে : ধর্ম উপদেষ্টা ন্যূনতম সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দেওয়া উচিত : ডা. শফিকুর রহমান ইসকন নিষিদ্ধের বিষয়ে সরকারে কোনো আলাপ হয়নি : রিজওয়ানা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘেঁষে শাহবাগ থানার নতুন ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার একনেকে ৫ হাজার ৯১৫.৯৯ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষ ৫টি প্রকল্পের অনুমোদন কোন পত্রিকা বন্ধে চাপ প্রয়োগ সহ্য করা হবে না : নাহিদ ইসলাম আওয়ামী লীগ আর গণতন্ত্র একসঙ্গে যায় না : তারেক রহমান বাংলাদেশ ব্যাপক শ্রম সংস্কারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : ড. ইউনূস কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান, ৩২৩ কেজি বর্জ্য অপসারণ রাজবাড়ীতে গড়াই নদীর খেয়াঘাটের ইজারাদারকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ
  • হারামকে হালাল জ্ঞান করার ভয়াবহ পরিণতি

    ড. এমজি মোস্তফা মুসা

    ৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১০:০১ পূর্বাহ্ন

    হারামকে হালাল জ্ঞান করার ভয়াবহ পরিণতি

    রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: আমার উম্মাতের মধ্যে অবশ্যই এমন কতগুলো দলের সৃষ্টি হবে, যারা ব্যভিচার, রেশমী কাপড়, মদ ও বাদ্যযন্ত্রকে হালাল জ্ঞান করবে। 

    তেমনি এমন অনেক দল হবে, যারা পাহাড়ের ধারে বসবাস করবে, বিকাল বেলায় যখন তারা পশুপাল নিয়ে ফিরবে তখন তাদের নিকট কোন অভাব নিয়ে ফকীর আসলে তারা বলবে, আগামী দিন সকালে তুমি আমাদের নিকট এসো। 

    এদিকে রাতের অন্ধকারেই আল্লাহ তাদের ধ্বংস করে দেবেন। পর্বতটি ধ্বসিয়ে দেবেন, আর বাকী লোকদেরকে তিনি ক্বিয়ামাতের দিন পর্যন্ত বানর ও শূকর বানিয়ে রাখবেন। (বুখারী, ইফাবা-৫০৭৬) I

    হাদিসের ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ:

    এই হাদিসটি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর একটি ভবিষ্যদ্বাণী যা তাঁর উম্মতের কিছু অংশে নৈতিক বিচ্যুতি ও অবক্ষয় সম্পর্কে সতর্ক করে। এখানে উল্লেখ করা হয়েছে যে কিছু লোক এমন কিছু হারাম (নিষিদ্ধ) বিষয়কে যেমন মদ, ব্যভিচার, বাদ্যযন্ত্র, এবং রেশমী কাপড় ব্যবহারকে হালাল বা বৈধ বলে মনে করবে। 

    এটি মূলত ধর্মীয় বিধি-নিষেধকে অবজ্ঞা করা এবং ইসলামের ভিত্তি ও আদর্শের পরিপন্থী হওয়া। "মদকে ভিন্ন নামে হালাল করা" বলতে বোঝানো হয়েছে যে, কিছু মানুষ মদের আসল নাম পরিবর্তন করে, যেমন এটিকে স্বাস্থ্যকর বা আরামদায়ক পানীয় (উদাহরণ: ফেনসিডিল) হিসেবে প্রচার করবে এবং সেগুলোকে বৈধ মনে করবে। 

    ইসলামে যেসব জিনিস হারাম ঘোষণা করা হয়েছে, সেগুলোকে ভিন্ন নামে আড়াল করা ও বৈধতার চেষ্টা করা একটি নিন্দনীয় কাজ এবং এর কারণে কঠোর শাস্তির হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে।

    হাদিসে আরও বলা হয়েছে যে, এসব লোক পাহাড়ের ধারে থাকবে এবং ধনী ও অহংকারী লোকদের মতো জীবনযাপন করবে, যা তাদের অবহেলা ও গরিবদের সাহায্য থেকে বিমুখতা নির্দেশ করে। এই ধরনের চরিত্র ইসলামের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, বরং এটি অহংকার ও উদাসীনতার পরিচয় বহন করে, যা আল্লাহর ক্রোধের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

    আল-কুরআনে নিষেধাজ্ঞা:

    কুরআন (৫:৪৪; ৫:৯০; ৭:৩৩; ৩১:৬) হারামের বিরুদ্ধে কঠোর সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছে। আল্লাহ তাআলা মদ, ব্যভিচার, বাদ্যযন্ত্রসহ নানা হারাম কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করেছেন এবং এগুলো থেকে দূরে থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। যারা আল্লাহর নির্ধারিত সীমালঙ্ঘন করে এবং হারাম জিনিসকে ভিন্ন নামে হালাল মনে করার চেষ্টা করে, তারা আল্লাহর বিধানের অবমাননা করে, যা কুরআন ও হাদিসে পাপাচার ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত। সুতরাং, আমাদের উচিত আল্লাহর বিধান ও রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিস মেনে চলে সঠিক পথে অটল থাকা।

    হাদিসের শিক্ষা ও উপদেশ:

    ১. হারামকে হালাল করার প্রচেষ্টা থেকে বিরত থাকা: ইসলামে হারাম করা বস্তু বা কাজকে অন্য নামে প্রচলন করা বা বৈধ হিসেবে গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুতর অপরাধ। মুসলমানদের উচিত আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নির্ধারিত সীমারেখার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা।

    ২. নৈতিকতা বজায় রাখা: ইসলামে ব্যভিচার, মদ্যপান, রেশমী কাপড় পরিধান (পুরুষদের জন্য) এবং বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এগুলো ব্যক্তি ও সমাজে পাপ এবং অবক্ষয় ডেকে আনে। এই নিষেধাজ্ঞাগুলো মেনে চলা মুসলমানের নৈতিক দায়িত্ব।

    ৩. গরিবদের সহায়তা করা ও তাদের সাথে সদাচরণ করা: এই হাদিসে দেখা যায় যে, ধনীরা গরিবদের সাহায্য থেকে বিরত থাকে এবং অহংকার দেখায়, যা ইসলামের শিক্ষার বিপরীত। ইসলামে গরিবদের সহায়তা করা ও তাদের প্রতি সদাচরণ করার জন্য বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।

    ৪. আল্লাহর শাস্তির ভয় রাখা: যারা আল্লাহর আদেশ-নিষেধ উপেক্ষা করবে এবং তাদের জীবন থেকে ধর্মীয় দায়িত্বগুলোকে বাদ দেবে, তাদের জন্য কঠোর শাস্তির সতর্কতা প্রদান করা হয়েছে। আল্লাহর শাস্তি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তাঁর বিধান অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

    উপসংহার: এই হাদিস আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, আল্লাহর বিধি-নিষেধের প্রতি সম্মান ও আনুগত্য আমাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামে হারামকে হালাল হিসেবে গ্রহণ করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ এবং এর ফলাফল অত্যন্ত ভয়ানক হতে পারে। আল্লাহর বিধান ও রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নির্দেশের বাইরে গিয়ে জীবনযাপন করার চেষ্টা করা মানুষের জন্য বড় বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। 

    অতএব, আমাদের উচিত ইসলামের শিক্ষা ও নীতি মেনে চলা এবং আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করা, যাতে আমাদের মধ্যে পরিশুদ্ধতা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ হয়।




    সাতদিনের সেরা খবর

    ধর্ম - এর আরো খবর

    হারামকে হালাল জ্ঞান করার ভয়াবহ পরিণতি

    হারামকে হালাল জ্ঞান করার ভয়াবহ পরিণতি

    ৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১০:০১ পূর্বাহ্ন

    এ বছর সরকারি খরচে কাউকে হজে পাঠানো হবে না

    এ বছর সরকারি খরচে কাউকে হজে পাঠানো হবে না

    ৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১০:০১ পূর্বাহ্ন

    বায়তুল মুকাররমের নতুন খতিব মুফতি আবদুল মালেক

    বায়তুল মুকাররমের নতুন খতিব মুফতি আবদুল মালেক

    ৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১০:০১ পূর্বাহ্ন

    ওলামায়ে কেরাম জাতির সম্পদ-ধর্ম উপদেষ্টা 

    ওলামায়ে কেরাম জাতির সম্পদ-ধর্ম উপদেষ্টা 

    ৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১০:০১ পূর্বাহ্ন