শিরোনাম
  • সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্য বিনষ্ট করতে প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী চক্রান্ত চালাচ্ছে : ধর্ম উপদেষ্টা ন্যূনতম সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দেওয়া উচিত : ডা. শফিকুর রহমান ইসকন নিষিদ্ধের বিষয়ে সরকারে কোনো আলাপ হয়নি : রিজওয়ানা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘেঁষে শাহবাগ থানার নতুন ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার একনেকে ৫ হাজার ৯১৫.৯৯ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষ ৫টি প্রকল্পের অনুমোদন কোন পত্রিকা বন্ধে চাপ প্রয়োগ সহ্য করা হবে না : নাহিদ ইসলাম আওয়ামী লীগ আর গণতন্ত্র একসঙ্গে যায় না : তারেক রহমান বাংলাদেশ ব্যাপক শ্রম সংস্কারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : ড. ইউনূস কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান, ৩২৩ কেজি বর্জ্য অপসারণ রাজবাড়ীতে গড়াই নদীর খেয়াঘাটের ইজারাদারকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ
  • সেরা ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল তাহমিদের

    জাগো কণ্ঠ ডেস্ক

    ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০৬ অপরাহ্ন

    সেরা ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল তাহমিদের

    কিশোর তাহমিদের স্বপ্ন ছিলো সেরা ক্রিকেটার হবে। বিশ্ব জয় করবে। কিন্তু বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে মুহূর্তেই ঝরে গেল কচি প্রাণ। নিভে গেল জীবন প্রদীপ। অধরাই থেকে গেল তাহমিদের সেরা ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন।

    শহিদ তাহমিদ ভূঁইয়া (১৫) নরসিংদী সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের নন্দীপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়ার ছেলে। নাছিমা কাদির মোল্লা হাইস্কুল অ্যান্ড হোমসের নবম শ্রেণীর ছাত্র। তিন ভাই বোনের মধ্যে বড় ছিল সে।
    প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ১৮ জুলাই ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে নরসিংদী শহরের জেলখানার মোড়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দালন চলছিলো। এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মাঝখানে পড়ে তাহমিদ। পুলিশের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় তার বুক। ঘটনাস্থলেই মারা যায় তাহমিদ। তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়া হয়। কিন্তু বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা তাহমিদের মরদেহ ছিনিয়ে নিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কসহ নরসিংদীর রাজপথে মিছিল করে। এ সময় শহিদ মোসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামের মূল ফটকের শহিদ মিনারের সামনে আন্দোলনকারীরা স্বৈরাচারবিরোধী শ্লোগান দিতে থাকে। পুলিশ তাহমিদের মরদেহের ওপর গুলি চালায়।

    এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন তাহমিদের বাবা রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া । তিনি বাসসকে বলেন, “ছেলের মরদেহে গুলির দৃশ্য দেখে বুকে ভীষণ রক্তক্ষরণ হচ্ছিল আমার, আমি চিৎকার করতে করতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ি প্রায়। এ অবস্থায় আন্দোলনকারীরা আত্মরক্ষার্থে মরদেহ ফেলে আমাকে টেনে নিয়ে নিকটবর্তী মসজিদে ঢুকে পড়ে। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে আন্দোলনকারীদের সহায়তায় মরদেহ নিয়ে বাড়িতে ফিরি। পরে ময়নাতদন্ত ছাড়া বৃহস্পতিবার রাতেই ছেলের বিদ্যালয় ও চিনিশপুর ঈদগাহে দুই দফা জানাজা শেষে এলাকার স্থানীয় কবরস্থানে তাহমিদকে দাফন করি।”
    তিনি আরো বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মরদেহের ময়নাতদন্ত করার জন্য বলা হলেও আমি রাজি হইনি। সবার সামনেই গুলি করে ছেলেকে মারা হয়েছে, ময়নাতদন্ত করে আর কী হবে? আমার ছেলেকে তো আর ফেরত পাব না।

    উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নরসিংদীর রাজপথে নিহত ১৬ জনের মধ্যে ১৪ জন গুলিবিদ্ধ ও দুই জনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে সর্বপ্রথম শহিদ হন স্কুল পড়ুয়া নবম শ্রেণির ছাত্র তাহমিদ ভূঁইয়া।
    নরসিংদীর ১০০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ এন এম মিজানুর রহমান বাসসকে বলেন, “রাবার বুলেট বিদ্ধ তাহমিদকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে এনেছিলেন শিক্ষার্থীরা। রাবার বুলেটে বিদ্ধ বুক ঝাঁঝরা হয়ে রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। তাকে মৃত ঘোষণা করার পরপরই উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা হাসপাতাল থেকে তাকে নিয়ে চলে যায়। আমরা চেয়েছিলাম, তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠাতে। শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে সেটা করা সম্ভব হয়নি।
    সরেজমিনে দেখা গেছে, তাহমিদদের বাড়ি ঘটনাস্থল জেলাখানার মোড় থেকে প্রায় ৫০০ গজ দূরে। টিনশেড পাকা বাড়িতে বসবাস করে তাহমিদের পরিবার।

    তার বাবা রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া জানান, পড়ালেখার পাশাপাশি ক্রিকেটের ভক্ত ছিলো তাহমিদ। ক্রিকেট পাগল তাহমিদ লেখাপড়ার পাশাপাশি ক্রিকেট খেলা নিয়ে মেতে থাকতো। স্বপ্ন দেখতো দেশের স্বনামধন্য ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান বিকেএসপিতে ভর্তি হবে। নিজেকে দেশের একজন বড় ক্রিকেটার হিসেবে গড়ে তুলবে।
    আক্ষেপ করে তিনি বলেন, কিন্তু তার সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না।

    তিনি আরও জানান, একমাত্র ভাই তাহমিদের মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে ছোট বোন লিনাত ভূঁইয়া (১৩)। সারাক্ষণ ভাইয়ের স্মৃতি আঁকড়ে পড়ে থাকে। মানসিক ভারসাম্যও নষ্ট হয়ে গেছে তার।

    তাহমিদের বাবার কাছে পুত্রের মৃত্যুদিনের স্মৃতিচারণ থেকে জানা যায়, মৃত্যুর কয়েক ঘন্টা আগেও পরিবারের সবাই একসাথে দুপুরের খাবার খেয়েছেন। দুই ভাইবোন বিছানায় শুয়ে মোবাইল ফোন নিয়ে খেলছিল । পরে মোবাইলের চার্জ শেষ হয়ে যাওয়ায় রুম থেকে বেরিয়ে আসে তাহমিদ। তাহমিদের মা তখন রান্না ঘরে কাজ করছিলেন। বাবা ঘুমে।
    তাহমিদ বাইরে বেরুতে চাইলে মা বাধা দেন। কথার এক পর্যায়ে মাকে তাহমিদ বলে “তুমি আমাকে কোথাও যেতে দাও না, মেয়ে মানুষের মত ঘরে বসিয়ে রাখ”।

    মায়ের সাথে এই শেষ কথা তার। মায়ের সাথে কথা বলতে বলতেই ঘর থেকে বেরিয়ে যায় তাহমিদ।
    ছাত্র-জনতা শহিদ তাহমিদের স্মৃতিকে অম্লান রাখতে চান। তাদের দাবি, নরসিংদীর জেলখানা মোড় ‘তাহমিদ চত্বর’ নামে ঘোষিত হোক। (বাসস)।




    সাতদিনের সেরা খবর

    বিশেষ কলাম - এর আরো খবর

    নির্বাচনী ব্যবস্থাপনার যেসব পরিবর্তন প্রয়োজন

    নির্বাচনী ব্যবস্থাপনার যেসব পরিবর্তন প্রয়োজন

    ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০৬ অপরাহ্ন

    আহত শামীমার দিন কাটছে ভীষণ অভাবে আর কষ্টে

    আহত শামীমার দিন কাটছে ভীষণ অভাবে আর কষ্টে

    ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০৬ অপরাহ্ন

    আমি সারাটা দিন মনে মনে তোমার সাথে কথা বলি

    আমি সারাটা দিন মনে মনে তোমার সাথে কথা বলি

    ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০৬ অপরাহ্ন

    মোবাইল মেকানিক সোহেল গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন

    মোবাইল মেকানিক সোহেল গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন

    ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০৬ অপরাহ্ন

    হাজারো জনতার ভীড়ে আবু সাঈদকে খুঁজে ফিরছেন পিতা

    হাজারো জনতার ভীড়ে আবু সাঈদকে খুঁজে ফিরছেন পিতা

    ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০৬ অপরাহ্ন