একাধিক জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতার সাথে আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় চায়ের টেবিল থেকে শুরু করে বিভিন্ন আড্ডায় রসাত্মক আলোচনায় উঠে এসেছে কে এই ভাইরাল তরুণী?
তরুনীর সাথে আপত্তিকর ভিডিও তে যাদেরকে দেখা গেছে তারা সকলেই বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার পরিচিত রাজনৈতিক ব্যাক্তি ও জনপ্রতিনিধি। কিন্তু যেই স্মার্ট, সুদর্শন তররুনীকে কেন্দ্র করে এতকিছু, তার পরিচয় অনেকেই জানেনা।
অভিযোগ এর সুত্র ধরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়,আলোচিত এই তরুণী বরগুনার আমতলী উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ আমতলীর মোঃ বাহাদুরের মেয়ে ইসরাত জাহান লামিয়া (২০)। শিক্ষা জীবনে লামিয়া বাড়ীর পাশের মানিকঝুড়ি দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে।
ঐ এলাকায় আলাপকালে জানা যায়,লামিয়ার ছোটবেলায় বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয় এবং মায়ের অন্যত্র বিয়ে হয় এবং বাবাও দ্বিতীয় বিয়ে করেন।বাবার দ্বিতীয় বিয়ের পর পিত্রালয়ে সৎ মায়ের অবহেলা,অনাদরে শৈশব থেকেই লাগামহীন জীবনযাপনে জড়িয়ে পরে লামিয়া। ফলে মাধ্যমিকের গণ্ডি পার হওয়ার আগেই ১৩ বছর বয়সে একই এলাকার টিয়াখালী গ্রামে লামিয়ার প্রথম বিবাহ হয়। লামিয়ার পাত্র পছন্দ না হওয়ায় স্বামীর সঙ্গে দাম্পত্য জীবনের শুরতে বিভিন্ন ধরনের কলহ লেগে থাকতো।এরপর থেকে লামিয়ার চাল-চলন ছিল পরিবার ও এলাকাবাসীর কাছে আপত্তিকর।
আরও জানা যায়,এর মধ্যে স্থানীয় এক আবাসিক হোটেল থেকে ওই তরুণীকে দুই যুবকের সঙ্গে পাওয়া যায়। এ ঘটনা নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিশ হলেও পরবর্তীতে মামলা পর্যন্ত গড়ায়।এ ঘটনায় ওই দুই যুবক জেলও খাটেন,মামলাটি বর্তমানে চলমান। প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর নিজ পছন্দল বরিশালের চাকরিজীবী ছেলেকে দ্বিতীয় বিয়ে করে লামিয়া।
দ্বিতীয় বিয়ের শুরুতে এই স্বামীর সাথেও সম্পর্ক ভালো ছিল না। তবে বর্তমানে তাদের মধ্যে সম্পর্কের কিছুটা উন্নতি হতে থাকে। এমতবস্থায় আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল হয় এই তরুণীর।
আপত্তিকর ভিডিও ভাইরালের বিষয়টি সপ্তাহ জুড়ে বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়া, ইলেকট্রনিক মিডিশা ও গণ মাধ্যমে ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশ হওয়ার পর গত সোমবার (২২ এপ্রিল) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ মোজাম্মেল হোসেন রেজা স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,গত ১০ এপ্রিল তালতলী উপজেলা চেয়ারম্যান রেজবুল কবির,পচাকোরালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আঃ রাজ্জাক,নিশান বাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বাচ্চু ও তালতলী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিনাজুল আবেদিন মিঠু বরগুনা পুলিশ সুপার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে লিখিত অভিযোগ করে উপজেলা আ. লীগের জনৈক নেতা কর্তৃক অর্থের বিনিময়ে জনৈক তরুণীকে ব্যবহার করে তাদের অন্তরঙ্গ ভিডিও গোপনে ধারণ করে। তাদের হোয়াটসঅ্যাপে মেসেঞ্জারে ভিডিও পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেইল করছে। বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য জেলা গোয়েন্দা শাখার ইনচার্জকে নিয়োজিত করা হয়।
আরও জানা যায়, জেলা গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তারা অনুসন্ধানকালীন প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই তরুণী এবং সহযোগীকে আটক করে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার বিষয় তারা স্বীকার করেন। তাদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে গোপনে ধারণকৃত অশ্লীল ভিডিও সম্বলিত পেনড্রাইভ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী কামরুজ্জামান বাচ্চুর অভিযোগের ভিত্তিতে তালতলী থানায় পর্নোগ্রাফি আইনে ৫টি মামলা হয়। মামলা হওয়ার পর আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনা স্বীকার করেন ও বিজ্ঞ আদালত ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। এক্ষেত্রে অভিযোগকারীর কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া শুরু করে প্রাথমিক অনুসন্ধান, জিজ্ঞাসাবাদ,মামলা রুজু আসামি গ্রেপ্তার,আলামত উদ্ধার,আসামিদের বিজ্ঞ আদালতে উপস্থাপন করাসহ সব প্রক্রিয়ায় যথাযথ আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে করা হয়েছে বলে তিনি জানান।