ঝালকাঠিতে বরগুনাগামী লঞ্চে (এমভি অভিযান-১০) ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় হতাহত ও নিখোঁজদের খবর নিতে সুগন্ধা নদীর তীরে ভিড় করেছেন স্বজনরা। এসময় তাদের আহাজারিতে আকাশ-বাতাশ ভারি হয়ে ওঠে। শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকে নদী তীরের গাবখান ধানসিঁড়ি এলাকায় অগ্নিদগ্ধদের স্বজনরা ভিড় করা শুরু করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দিনগত রাত ৩টার দিকে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীর গাবখান ধানসিঁড়ি এলাকায় ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ নামে যাত্রীবাহী একটি লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আরও দুই শতাধিক যাত্রী দগ্ধ হয়েছেন। অর্ধশতাধিক যাত্রীকে দগ্ধ অবস্থায় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অনেকে নিখোঁজ আছেন। তাৎক্ষনিকভাবে হতাহতদের পরিচয় জানা যায়নি।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক কামাল হোসেন ভূঁইয়া এক ব্রিফিংয়ে ৩০ জনের মরদেহ উদ্ধারের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় দগ্ধ অন্তত ৪৮ জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে। কামাল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, লঞ্চটির ইঞ্জিন কক্ষ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
সাইদুর নামের এক যাত্রী জানান, ‘রাতে ঢাকা থেকে বরগুনা ফিরছিলাম। লঞ্চটি ঝালকাঠি গাবখান এলাকায় পৌঁছালে ইঞ্জিনরুমে আগুন লেগে যায়। এরপর সে আগুন পুরো লঞ্চে ছড়িয়ে পড়ে। অসংখ্য মানুষ অগ্নিদগ্ধ হয়। প্রাণে বাঁচতে নদীতে ঝাপ দেন অনেক যাত্রী।’
নদী পাড়ে অপেক্ষায় থাকা আমেনা খাতুন জানান, ‘তার ভাই ঢাকা থেকে এ লঞ্চে করে রওনা দিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ পাচ্ছি না। আমার ভাইয়ের সন্ধান চাই।’
এদিকে লঞ্চে আগুন পরবর্তি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও সার্বিক অবস্থা জানতে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি আজ শুক্রবার ঝালকাঠীর উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেছেন। তিনি দুপুরের মধ্যে সেখানে পৌঁছবেন।
মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।