কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে মামা কর্তৃক কিশোরী ভাগ্নি (১৭) কে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে ধর্ষিতার মা বাদী হয়ে তাড়াইল থানায় ধর্ষণ ও ধর্ষণে সহযোগিতা করায় অবিবাহিত ভাইসহ অপর ভাবীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
থানা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বোরগাঁও আবাসনের বাসিন্দা মঞ্জু ইসলামের ছেলে জরিপ মিয়া (১৯) একই এলাকার ভাগ্নিকে একাধিবার ধর্ষণ করেন। বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণে কিশোরি ৭ মাসের অন্তস্বত্বা হওয়ায় ঘটনা জানাজানির এক পর্যায়ে ধর্ষকের ভাবির সহযোগিতায় গর্ভপাত ঘটান। এ ঘটনায় ধর্ষক মামা ও গর্ভপাত ঘটানোর সহযোগী ভাবীকে আটক করেছে তাড়াইল থানার পুলিশ।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার জাওয়ার ইউনিয়নের বোরগাঁও আবাসনে ভিকটিমের মা ও মামাতো ভাই জরিপ মিয়া পাশাপাশি বাড়িতে বসবাস করার সুবাধে গত এক বছর পূর্বে থেকে তাদের বাড়িতে আসা যাওয়া করতো। জরিপ মিয়া ভিকটিমের সম্পর্কে মামা হওয়ায় পরিবারের কেউ তাকে সন্দেহ না করায় আসা যাওয়ার সুযোগে ভিকটিমের সাথে জরিপের প্রেম ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে উঠে।
ভাগ্নিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ভিকটিমের ইচ্ছার বিরুদ্ধে একাধিকবার ধর্ষণ করে মামা জরিপ মিয়া। একাধিকবার ধর্ষণের কারণে ভিকটিম ৭ মাসের গর্ভবতী হয়ে যায়। পরে পরিবারের লোকজনের মধ্যে বিষয়টি জানা জানি হলে জরিপ মিয়া তার চাচাতো ভাইয়ের বৌয়ের সাথে পরামর্শ করে বাচ্চা নষ্ট করার পরিকল্পনা করে। ভাবীর পরিকল্পনা অনুযায়ী বাচ্চা নষ্ট করার ওষুধ এনে দেয় জরিপ মিয়া।
গত ৪ সেপ্টেম্বর ভাবী শাহেদা আক্তার ওষুধ নিয়ে গিয়ে ভিকটিমের হাতে দিয়ে বলে ৭ মাসের সময় এই ওষুধ খাইতে হয়। ভাবীর কথা বিশ্বাস করে ওইদিন রাত আনুমানিক ৮টার দিকে ভাবীর দেয়া ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লে মধ্য রাতে প্রসব ব্যাথা শুরু হওয়ার কারণে জরিপের ঘরে চলে যায় ভিকটিম। ৫ সেপ্টেম্বর আনুমানিক দুপুর ২ টার দিকে আবার প্রচণ্ড প্রসব ব্যাথা শুরু হইলে ভিকটিম আবাসনের বাথরুম যাওয়ার পর সেখানে একটি মেয়ে বাচ্চা প্রসব করে। প্রসবের পর জীবিত মেয়ে বাচ্চাটি নিয়ে ভিকটিম জরিপের ঘরে যাওয়ার পর নবজাতকের মৃত্যু হয়।
খবর পেয়ে তাড়াইল থানার অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম ৫ সেপ্টেম্বর সোমবার রাতেই সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনা স্থলে পৌঁছে নবজাতকের লাশ উদ্ধার করে ধর্ষক জরিপ মিয়া ও সহযোগী শাহেদা আক্তারকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। আসামীদের বিরুদ্ধে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতনদমন আইন ও নবজাতককে হত্যা এই মর্মে মামলা রুজু করার পর মঙ্গলবার (৬ সেপ্টম্বর) সকালে নবজাতকের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ মর্গে ও দুপুরে আসামীদেরকে কিশোরগঞ্জ কোর্ট হাজতে প্রেরণ করা হয়।
তাড়াইল থানার অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বোরগাঁও আবাসনে মামার হাতে ভাগ্নি ধর্ষণের স্বীকার ও নবজাতককে হত্যা এমন খবর পেয়ে তাড়াইল থানার পুলিশ ঘটনা স্থলে পৌঁছে নবজাতককের লাশ উদ্ধার করা হয়।ঘটনার দিন রাতে অভিযান চালিয়ে আসামীদেরকে আটক করা হয়। গতকাল সকালে নবজাতকের লাশ কিশোরগঞ্জ মর্গে ও আসামীদেরকে দুপুরে কিশোরগঞ্জ কোর্ট হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।