ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ-ভারত নিয়ে যে কথা বলেছেন তা স্পষ্টত দেশের সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দেয়ার স্বীকৃতি। একটি স্বাধীন দেশের রাষ্ট্র পরিচালনায় কে টিকে থাকবে আর কে থাকবে না, তা নির্ধারণ করার পূর্ণ ইখতেয়ার সেই দেশের জনতার। আমরা রক্ত দিয়ে সেই অধিকার অর্জন করেছি। বাংলাদেশের সংবিধানেও জনগণকে সেই ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী যখন অন্য কোন দেশকে "ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে যা যা করার তা করতে" অনুরোধ করেন তখন তা সুস্পষ্ট বাংলাদেশের মানুষের রক্তে কেনা সার্বভৌমত্বকে অন্যের হাতে অর্পণ করা হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতীয় সরকারকে এই অনুরোধ করে জনগণের রক্তে কেনা অধিকারের সাথে গাদ্দারী করেছেন একই সাথে তিনি রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধ করেছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ তরুণ যখন বেকারত্বের কষাঘাতে নিদারুণ জীবন কাটাচ্ছে তখন লাখ লাখ ভারতীয়কে এই পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বাংলাদেশে চাকুরী দিয়ে রেখেছে। কারণ তারা মনে করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে ভারতের আশীর্বাদ লাগবে। এই সরকার যে বিভিন্ন সময়ে দেশের স্বার্থ, দেশের মানুষের আবেগের বিরুদ্ধে গিয়ে ভারত তোষণ নীতি গ্রহণ করেছে তার কারণও পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্ট করে দিয়েছে।
কেবলই ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য দেশের মানুষের সাথে, ৭১ এর সাথে এমন গাদ্দারীর ইতিহাস সিকিম ছাড়া আর কোথাও দেখা যায় না। আশ্চর্যের বিষয় হলো, মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেয়া দলের পরবর্তী প্রজন্মই বাংলাদশের স্বাধীনতাকে বন্ধক রেখে নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার অপচেষ্টা করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বিশ্বাস করতে চায়, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্য তার ব্যক্তিগত দালালসূলভ মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ। তাই যদি হয় তাহলে তাকে অনতিবিলম্বে মন্ত্রীসভা থেকে বহিস্কার করে রাষ্ট্রীয় স্বার্থ লংঘন ও রাষ্ট্রের সাথে বিশ্বাস ঘাতকতার দায়ে গ্রেফতার করে রাষ্ট্রদ্রোহীতার শাস্তি দিতে হবে।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, সরকার যদি এটা না করে তাহলে প্রমাণ হবে, তার এই বক্তব্য সরকারের দালালী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ এবং এই আওয়ামী সরকারই দেশের সংবিধান, দেশের সার্বভৌমত্ব ও ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সাথে গাদ্দারী করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাইছে। তাই যদি হয় তাহলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এই সরকারকে মীর জাফর, লেন্দুপ দর্জি ও মোনায়েম খানদের পরিণতি স্বরণ করিয়ে দিতে চাই।