শিরোনাম
  • ফের যে আসন থেকে নির্বাচনের সম্ভাবনা রয়েছে খালেদা জিয়ার আন্তর্জাতিক ফুটবলে যে সমস্যার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ইসরায়েল কে এই নতুন মেসি-ইয়ামাল? ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে যা বললেন ড. মুহাম্মদ ইউনুস সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন কাঠামোতে যে নতুন নির্দেশনা দিলেন প্রধান উপদেষ্টা আলুর দাম নিয়ে যে দুঃসংবাদ শোনালেন বাণিজ্য উপদেষ্টা হাইকোর্টের রায়ের স্থগিতাদেশ নিয়ে যা জানালেন আইনজীবী শিশির মনির নির্বাচন নিয়ে নতুন যে বিবৃতি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার সরকার নির্বাচন নিয়ে চাপ দিলে পদত্যাগ করবো: সিইসি শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার করলে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
  • আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস প্রতিরোধের ঘোষণা আওয়ামী লীগের

    নিজস্ব প্রতিবেদক

    ১৮ অগাস্ট, ২০২২ ০৮:৩১ পূর্বাহ্ন

    আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস প্রতিরোধের ঘোষণা আওয়ামী লীগের

    আন্দোলনের নামে যেখানে সন্ত্রাস, বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা হবে; সেখানেই প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করা হবে বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা। বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে করে তারা বলেন, ঢাকা তো দূরের কথা, বাংলাদেশের যেখানে অন্যায় হবে সেখানেই প্রতিবাদ হবে। তারা বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করব- এটাই আমাদের অঙ্গীকার। দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করলে তাদের (বিএনপি-জামায়াত) ঘরে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানান নেতারা। এই দেশে আর বিএনপি জামায়াতকে বোমা হামলা, অগ্নিসন্ত্রাস করতে দেওয়া হবে না; অপরাধ সংঘটিত হওয়ার আগেই দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।

    সিরিজ বোমা হামলা দিবস উপলক্ষ্যে বুধবার বিকালে রাজধানীর ইঞ্জিয়িনয়ার ইনস্টিটিউশনের সামনে অস্থায়ী মঞ্চে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধান অতিথির অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আন্দোলনে, রাজপথে, নির্বাচনের প্রস্তুত হোন- খেলা হবে। সেই খেলায় আওয়ামী লীগ বিজয়ী হবে। নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হন। আওয়ামী লীগের পায়ের তলায় নাকি মাটি নাই বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যেও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এই যে জনতার ঢল, এমন ঢল দেখেছেন কখনও কখনও দেখতে পাবেন না। তিনি বলেন, বিএনপি গত নির্বাচনেও ধরা খেয়েছে, এবারও ধরা খাবে। তাই আমাদের দলের নেতাকর্মীদের বলি, আগামী নির্বাচনে প্রমাণ করতে হবে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ। এখানে বোমা হামলা, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসী সৃষ্টিকারীদের ঠাঁই হবে না।

    বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ২০০৬ সালের সাথে ২০২২ সালের কী তুলনা করেন, কিসের সাথে কী মেলাচ্ছেন- সব জায়গায় তুলনা চলে না। গুম, খুন নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কাছে বিএনপি যে নালিশ করেছে, তার তদন্ত করার এখতিয়ার জাতিসংঘের নেই, এটা আপনার জানা উচিত। বিদেশিদের কাছে দেশের বদনাম করা, সন্ধ্যার পর দূতাবাসগুলোয় ধরনা দেওয়া বিএনপির কাজ। বিএনপির কাজ নালিশ করা। এজন্য এই পার্টির আরেক নাম হয়েছে বাংলাদেশ নালিশ পার্টি। তিনি বলেন, বিএনপি গতবার জগাখিচুড়ির ঐক্য করে ধরা খেয়েছে, এবারও ধরা খাবে। বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের অন্যতম সভাপতিমন্ত্রীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘তারা (বিএনপি-জামায়াত) ভেবেছিল সিরিজ বোমা হামলার ভয়ে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে সরে আসবে। কিন্তু তা হয়নি। এই দেশ জঙ্গিবাদের নয়। এটা বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ, খুশি সমৃদ্ধ দেশ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই দেশ এগিয়ে যাবে।’

    কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের আরেক সভাপতিমন্ত্রীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বিএনপির দেশে জঙ্গিবাদ কায়েম করেছিল। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হত্যা করেছিল। ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব শূন্য করার জন্য গ্রেনেড হামলা করা হয়েছিল। বিএনপি নেতারা তাণ্ডব করেছিল।’ তিনি বলেন, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে দেশের জনগণ আবারও আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে।’

    সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘বাংলা ভাইয়ের নেতা দণ্ডিত তারেক রহমান দেশকে অস্থিতিশীল করার স্বপ্ন দেখে। দেশে শান্তি বিঘ্নিত করতে চায়। কিছু করার ক্ষমতা মির্জা ফখরুলের নেই। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি এবং গণতান্ত্রিক ও বাকস্বাধীনতা আছে বলেই, যা খুশি বলেন। কিন্তু শিষ্ঠাচার বহির্ভূত কিছু করলে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগ রাজপথের সৈনিক।’ তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর কখনো আসবে না, আসতে দেয়া হবে না বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য আবদুর রহমান।

    তিনি বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের কথা বলে যারা সন্ত্রাস ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়, তাদের মোকাবিলায় দলের নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকতে হবে। আগামী মাসে বিএনপি-জামায়াতকে বঙ্গোপসাগরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। মায়া বলেন, আজকে তো তিনি বলেন, যেখানেই বিএনপি-জামায়াত সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

    সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, এরা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী, এরা সন্ত্রাসী। বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে বিতারিত করতে হবে। যতদিন আমরা সেটা করতে পারব না, ততদিন আমাদের রাজনীতিতে শান্তি ফিরে আসবে না, স্বস্তি আসবে না। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসের কলঙ্কময় দিন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, বিএনপি-জামায়াত বাংলাদেশকে উগ্র মৌলবাদী রাষ্ট্র গড়ার চক্রান্ত করে আসছিল। তার চূড়ান্ত মহড়া ছিল ১৭ আগস্ট।

    আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আজ থেকে আমরাও মাঠে নামলাম। এই পেট্রল বোমা বাহিনীকে জনগণের জানমালের ক্ষতি করতে দেব না। দলের আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ঢাকা তো দূরের কথা দেশের কোথাও বিএনপি জামায়াতকে অন্যায় করতে দেয়া হবে না। এদের অন্যায় দেখা মাত্রই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেন, এই রাজপথ সন্ত্রাসীদের নয়। এই রাজপথ জনগণের। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। স্বাধীনতাবিরোধী বিএনপি-জামায়াতকে রাজপথ দখলে নিতে দেয়া হবে না।

    সমাবেশের পূর্ব নির্ধারিত সময় ছিল বিকাল ৪টায়। তবে দুপুরের আগে থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা সমাবেশ স্থলে আসতে শুরু করেন। মিছিলে মিছিলে প্রকম্পিত হতে শুরু করে শাহবাগ থেকে প্রেসক্লাব, মৎস্য ভবন থে?কে কাকরাইল। সমাবেশ শুরু হওয়ার আগেই ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে মিছিল আকারে নেতাকর্মীদের ভিড়ে পুরো এলাকা জনসমুদ্রে রূপ নেয়। মৎস্য ভবন থেকে শাহবাগ পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। এছাড়া বিভিন্ন এলাকা থেকে আসার মিছিল ও যানবাহনের কারণে সেগুনবাগিচা, মৎস্য ভবন, কাকরাইল ও শিল্পকলা এলাকার অলিগলি পর্যন্ত যানটজের সৃষ্টি হয়।

    হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে সমাবেশে বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। সোয়া ৫টায় সমাবেশ শেষ হলে শুরু হয় বিক্ষোভ মিছিল। মিছিলটি ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে মৎস্য ভবন-কদম ফোয়ারা-প্রেসক্লাব ও জিরোপয়েন্ট হয়ে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী- ‘শেখ হাসিনা ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’, ‘অ্যাকশন অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন’সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে দেখা যায়।

    ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ ফজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী প্রমুখ। বিক্ষোভ সমাবেশ সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ও মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।




    রাজনীতি - এর আরো খবর

     পিআর নিয়ে আবারও যে মন্তব্য মির্জা ফখরুলের

    পিআর নিয়ে আবারও যে মন্তব্য মির্জা ফখরুলের

    ১৮ অগাস্ট, ২০২২ ০৮:৩১ পূর্বাহ্ন