শিরোনাম
  • ফের যে আসন থেকে নির্বাচনের সম্ভাবনা রয়েছে খালেদা জিয়ার আন্তর্জাতিক ফুটবলে যে সমস্যার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ইসরায়েল কে এই নতুন মেসি-ইয়ামাল? ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে যা বললেন ড. মুহাম্মদ ইউনুস সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন কাঠামোতে যে নতুন নির্দেশনা দিলেন প্রধান উপদেষ্টা আলুর দাম নিয়ে যে দুঃসংবাদ শোনালেন বাণিজ্য উপদেষ্টা হাইকোর্টের রায়ের স্থগিতাদেশ নিয়ে যা জানালেন আইনজীবী শিশির মনির নির্বাচন নিয়ে নতুন যে বিবৃতি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার সরকার নির্বাচন নিয়ে চাপ দিলে পদত্যাগ করবো: সিইসি শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার করলে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
  • দাবি না মানলে রাজপথেই সরকার পরিবর্তন করা হবে: ফখরুল

    নিজস্ব প্রতিবেদক

    ২৩ জুলাই, ২০২২ ১০:২২ অপরাহ্ন

    দাবি না মানলে রাজপথেই সরকার পরিবর্তন করা হবে: ফখরুল

    নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি না মানলে রাজপথেই সরকার পরিবর্তন করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

    শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন হলে ওভারসিজ করসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ওকাব) এর ‘মিট দ্যা ওকাব’ অনুষ্ঠানে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে দলীয় লক্ষ্য তুলে ধরতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব একথা জানান।

    তিনি বলেন, এখন রাজপথেই একমাত্র সমাধান। সরকার যদি নিজেরা উদ্যোগ না নেয় অর্থাৎ এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা যে দাবিগুলো করেছি তা না মানে-রাজপথেই একমাত্র সমাধান।

    বাংলাদেশে তো বেশিরভাগ সময় দেখা গেছে যে, জনগণের স্বত:স্ফূর্ত আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পরিবর্তন হয়। আমরা অত্যন্ত আশাবাদী এবং আত্মবিশ্বাসী যে, এবার জনগণের অকুন্ঠ সমর্থন নিয়ে আমরা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে, আন্দোলনের মধ্য দিয়েই এই সরকারের পরিবর্তন আনতে পারব।

    দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সম্ভব নয় উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচন তখনই সম্ভব হবে যখন দেশে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার থাকবে। ওই সরকারের অধীনে একটি যে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে সেই কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে। তারপর আগে কোনো নির্বাচন কমিশনের পক্ষেই সম্ভব নয়। শুধু আমাদের কথা নয়, আগের প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটিএম শামুসুল হুদাও বলেছেন দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অত্যন্ত জটিল। পরবর্তিকালে কেএম নুরুল হুদা সাহেব বলেছেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অত্যন্ত কঠিন। আর বর্তমানে যিনি আছেন তিনি তো একেবারে হাল ছেড়ে দিয়েছেন মনে হয়। সেজন্য আমাদের মূল কথাটাই হচ্ছে নির্বাচনকালী তত্ত্বাবধায়ক সরকার-এটাই হচ্ছে আমাদের দাবি।

    নির্বাচনকালীন সরকারের জন্য সরকারকেই সংসদে আইন আনতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা তো তাই করেছিলাম ১৯৯৬ সালে নতুন সংসদ হওয়ার পরে সারারাত জেগে সংসদ আইন পাস করে আমরা পদত্যাগ করেছিলাম। সংসদ বাতিল করা হয়েছিল। সেই নির্বাচনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ১১৬ টা আসনে বিরোধী দলে বসেছিলো। আমরা মেনে নিয়েছি। দ্যাট ইজ ডেমোক্রেসি।

    মির্জা ফখরুল বলেন, ব্যাক ডোর বলে কোনো কথা নেই। আমাদের যা কিছু সব ফ্রন্ট ডোর। আমরা সবসময় সামনে থেকে প্রকাশ্যে একেবারে জনসভার মধ্য দিয়ে ঘোষণা দিচ্ছি যে, তত্ত¡াবধায়ক সরকার ছাড়া বা নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া বিএনপিসহ অনেকগুলো রাজনৈতিক দল আছে তারা ইতিমধ্যে বলে দিয়েছে কোনো নির্বাচনে যাবে না।

    তাহলে কি কোনো সহিংসতায় যাচ্ছে কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এটা তো নির্ভর করবে সরকারের ওপর। তারা যদি কনফোনট্রেশন দেখতে না চায়, মারামারি কাটাকাটি দেখতে না চায় তাহলে সরকারকে অবশ্যই আমরা যে দাবিগুলো দিয়েছি অর্থাৎ তাদেরকে পদত্যাগ করে নতুন একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের যা ব্যবস্থা করা দরকার, বিধান করা দরকার যেটা আমরা করেছি সেইভাবে তাদের করতে হবে।

    আন্দোলনে জামায়াত ইসলামীর অবস্থান কি হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলছি একটা জাতীয় ঐক্য তৈরি করার জন্য। এখন পর্যন্ত যতগুলো রাজনৈতিক দলের সাথে কথা বলেছি একটা বিষয় আমরা সবাই একমত হয়েছি যে, আমরা যুগপথ আন্দোলনে যাবো।
    ঢাকায় কর্মরত বিদেশি গণমাধ্যমের সংবাদদাতাদের সংগঠন ওকাবের অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বিএনপি মহাসচিব। এর আগে মহাসচিব দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সরকারের অপশাসন, নির্বাচনের বিষয়ে দলের অবস্থানসহ নানা বিষয় তুলে ধরেন।সর্বশেষ ২০০১ সালে জাতীয় নির্বাচনের আগে ওকাবের এরকম অনুষ্ঠানে এসেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

    সরকারের পরিবর্তে বিএনপি বিকল্প কিনা প্রশ্ন করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, অবশ্যই। বিএনপি সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল এবং বিএনপি তিনবার রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে, আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সরকার পরিচালনা করেছে। তারও আগে বিএনপি দুইবার রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে।
    আগামী নির্বাচনে বিএনপি গেলে তার নেতা কে হবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই দলের নেতৃত্ব তো নির্ধারিত হয়ে আছে। খালেদা জিয়া-তিনি আমাদের নেত্রী, তার অবর্তমানে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাদের নেতা। সুতরাং এখানে কোনো অস্পষ্টতা নেই।

    যুগপথ আন্দোলন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, যুগপথ আন্দোলনের অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। আপনাদের নিশ্চয় মনে আছে- ১৯৯০ সালেও যে আন্দোলন হয়েছিলো-৫ দল, ৭ দল ও ৮ দল। সেখানে কিন্তু যুগপথ আন্দোলন হয়েছিলো। আজকে বলতে পারেন সেই মডেলে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে কথা বলছি। সবাই যার যার অবস্থান থেকে তারা আন্দোলন শুরু করবে। আন্দোলনের মধ্য দিয়েই আন্দোলনের ধারাই নিয়ে যাবে তারপরে কোনদিকে আন্দোলন যাবে।

    এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্দলীয় সরকারের প্রশ্নে আমরা ২০১৪ সাল থেকে আন্দোলন করছে। আমরা সেই আন্দোলনেই আছি। আমরা যখন জনগনকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় নামবো, আন্দোলনই বলে দেবে আন্দোলনের ধারা কোন পথে যাবে।

    মির্জা ফখরুল বলেন, সংবিধান বহুবার পরিবর্তন হয়েছে নির্বাচনের জন্য। জনগণের স্বার্থে প্রয়োজন হলে সংবিধান পরিবর্তন করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।

    বিএনপি মহাসচিব বলেন, নির্দলীয় সরকারের রুপরেখার প্রশ্ন তখনই আসবে যখন সরকার আমাদের সঙ্গে নিরপেক্ষ সরকারের গঠনের বিষয়ে একমত হবেন। তার আগে না।

    নেতা-কর্মীদের জেলে খাটা সংখ্যা ৩০ লাখ: মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের নেতা-কর্মীদের জেলখাটার সংখ্যা কোনো মতেই প্রায় ৩০ লক্ষের কম নয়। গত পরশু আমার বিরুদ্ধে আরেকটা মামলা হয়েছে অর্থাৎ আমার ৮৬টা মামলার সাথে আরেকটা যুক্ত হয়েছে।
    ফখরুল বলেন, আমরা সকল গণতান্ত্রিক দেশগুলোর কাছে একটাই প্রত্যাশা করি যে, বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার জন্য সবাই যার যার জায়গা থেকে তারা তাদের ভুমিকা রাখবে।

    ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার কিছুদিন মধ্যেই আমরা স্টেটমেন্ট দিয়েছি। আমরা মনে করি যে, সব দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার তার অধিকার আছে।

    বাংলাদেশের সাথে শ্রীলংকার মিল কোথায়-এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা কয়েকটি বিষয় মিল দেখতে পারছি। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিশেষজ্ঞরা বলছেন যেটা হচ্ছে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে আন্তর্জাতিকভাবে। যার প্রভাব ইতিমধ্যে বাংলাদেশে পড়েছে। গ্যাসের দাম বেড়েছে। আমদানি করা গ্যাসের দাম বেড়ে যাচ্ছে, ডলারের দাম বেড়ে যাচ্ছে এখন একটা বড় রকমের ক্রাইসিস শুরু হয়ে গেছে ইতিমধ্যে। পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, বৈদেশিক মুজদের পরিমাণ নিচের দিকে যাচ্ছে, রেমিট্যান্সে কমে যাচ্ছে। রপ্তানি কমে আসছে, উৎপাদনের ব্যয় বাড়ছে। ফলে ওই ক্রাইসিসগুলো এখনে গভীর হচ্ছে। সেজন্য আমরা আশঙ্কা করছি যে এখানে শ্রীলংকার মতো একটা অবস্থা তৈরি হতে পারে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে।
    বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের সাজেশন একটাই-রিজাইন এন্ড গিভ ইলেকশন। নির্বাচন দাও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। সেই নির্বাচিত সরকারই সমস্যার সমাধান করতে পারে।

    মিট দ্যা প্রেসের অনুষ্ঠানে ওকাবের আহŸায়ক বিবিসির সংবাদদাতা কাদির কল্লোল ও সদস্য সচিব জার্মান নিউজ এজেন্সি-ডিপিএ‘র সংবাদদাতা নজরুল ইসলাম মিঠুর সঞ্চালনায় এতে ওকাবের সিনিয়র সদস্য ফরিদ আহমেদ মূল মঞ্চে ছিলেন। অনুষ্ঠান বিএনপির মিডিয়া সেলের জহির উদ্দিন স্বপন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।

     




    রাজনীতি - এর আরো খবর