এইচএসসিতে অটোপাসের পর দু:খে কান্না করা জুবায়ের এবার দেশের তিনটি সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। এতে তার মনের সেই দু:খ কেটে বইছে আনন্দের জোয়ার।
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ধরণী গ্রামের ছেলে জুবায়ের রহমান। ২০২০ সালের এইচএসসি নির্বাচনী পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পান। আশাবাদী ছিলেন বোর্ড পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাবেন। কিন্তু করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে অটোপাস দেয় সরকার। তিনি পান জিপিএ-৪.৫০। মন ভেঙে যায় জুবায়েরের। অটোপাস তার স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দেয়। তাই সেদিন কেঁদেছিলেন।
অটোপাসে স্বপ্ন ভেঙে যাওয়া সেই জুবায়ের এবার ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় তিনি কৃতকার্য হয়েছেন।
কৃষক আব্দুল করিম শেখের ছয় সন্তানের মধ্যে সবার ছোট জুবায়ের। স্থানীয় এয়াকুব আলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৮ সালে বিজ্ঞান শাখা থেকে এসএসসি পাস করেন জিপিএ-৪.৩৩ নিয়ে। পরে ভর্তি হন কাদিরদী কলেজের মানবিক শাখায়। কলেজের সব পরীক্ষায় সময় প্রথম হতে থাকেন। তবে কলেজের নির্বাচনী পরীক্ষায় পান জিপিএ-৫। তবে তার আশাভঙ্গ হয় যখন অটোপাসে তার রেজাল্ট আসে জিপিএ-৪.৫০।
জানা গেছে, অটোপাসের রেজাল্ট পেয়ে অনেক কান্নাকাটি করলেও দমে যাননি জোবায়ের। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে দেন। ফলাফলও পেয়েছেন কাঙ্ক্ষিত। এ বছর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ‘এ’ ইউনিটে ১৩০তম, ‘বি’ ইউনিটে ৫০০তম, ‘সি’ ইউনিটে ১২৮তম; জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ‘সি’ ইউনিটে ২৬১তম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ‘খ’ ইউনিটে ১৯৫৯তম এবং ‘ঘ’ ইউনিটে ২৬১তম হয়েছেন।
জুবায়ের রহমান বলেন, আমি যে গ্রাম থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি এটা অনেক পরিবার, কলেজ বা ব্যক্তির কাছে সাধারণ ব্যাপার হলেও আমার জন্য অনেক পাওয়া। কেননা আমাদের গ্রামের কেউ এর আগে কখনোই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েননি। আমার এ সাফল্যে আমার পরিবারের সঙ্গে এলাকাবাসীও অনেক খুশি। আগামীতেও যাতে এই সাফল্যের ধারাবাহিকতা থাকে সেই দোয়া কামনা করেছেন তিনি।