গাজীপুরের শ্রীপুরে মুক্তিযোদ্ধা ও ৬ প্রতিবন্ধীসহ ৫শতাধিক মানুষের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে ২০টি পরিবারকে অবরুদ্ধ করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে ভালুকা থানায় কর্মরত দারোগা আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় শুক্রবার বেলা ১১ টার সময় অবরুদ্ধ ও ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী রাস্তা খুলে দেয়ার দাবিতে এবং মামলার হয়রানির প্রকিবাদে ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের সোনাব গ্রামের ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী, ছাত্র-শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি এবং এলাকার নারী পুরুষ এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণ করেন।
কাওরাইদ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সোনাব গ্রামের বন্ধ করে দেয়া রাস্তা হতে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জৈনাবাজার কাওরাইদ সড়কে বিক্ষোভ করে বলদীঘাট বাজারে প্রতিবাদ সভা করেন বিক্ষোভকারীরা।
প্রতিবাদ সভায় বক্তব্যকালে ভুক্তভোগীরা জানান, সোনাবো গ্রামের বাসিন্দা মৃত উছেম উদ্দিনের পত্র ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা থানায় কর্মরত উপ-পুলিশ পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ তার ব্যক্তিগত স্বার্থে সরকারি অর্থায়নে নির্মিত জনসাধারণের চলাচলের রাস্তা সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে বন্ধ করে দিয়েছে এবং এলাকাবাসীর নামে ৭/৮টি মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছে।
জন চলাচলের রাস্তা খুলে দেয়ার দাবিতে প্রতিবাদ করে প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়ার অপরাধে মারামারির ঘটনা সাজিয়ে তার বড় ভাই আব্দুস শহীদকে বাদী বানিয়ে গত ২৪ নভেম্বর বুধবার শ্রীপুর থানায় ২৬জন এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে একটি মামলা ঠুকে দেন।
এ ছাড়াও গত ২৮ সেপ্টেম্বর দারোগা আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে উক্ত রাস্তায় মাটি ভরাটসহ উন্নয়ন কাজ করায় কাওরাইদ ইউপির ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আশরাফুল ঢালীসহ এলাকার ৪জনের নামে মামলা দায়ের করেন।
গত ২৪ নভেম্বর বুধবার করা মামলায় আসামী করা হয় অবরুদ্ধ মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেনের পুত্রবধূ হুরেনা,কলেজ পড়ুয়া ছাত্রী সোনিয়া, ক্যান্সারের রোগী হাজেরা ও তার স্বামী জৈনুদ্দিন, টিবি রোগী সোহেল মিয়া ও তার স্ত্রী লাকি বেগমকে।
মামলা থেকে বাদ পড়েনি দারোগা আবুল কালাম আজাদের সহোদর বড় বোন ষাটোর্ধ্ব জুবেদা খাতুনও।
ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন জানান, দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থ অবস্থায় আছি, চিকিৎসা নেয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না। বিষয়টি অবহিত করে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছি। তিনি রাস্তাটি দ্রুত খুলে দেয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন জানান।
ভুক্তভোগী ইউপি সদস্য আশরাফুল ঢালী বলেন, জনবহুল এলাকার এই রাস্তাটি আমি নিয়মমাফিক মাটি ভরাট করে উন্নয়ন কাজ করেছি। কিন্তু দারোগা কালাম অন্যায়ভাবে ক্ষমতার দাপোটে এলাকাবাসীসহ আমার নামে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।
এ ব্যাপারে কাওরাইদ ইউপি চেয়ারম্যান এডভোকেট আজিজুল হক জানান, দারোগা কালাম তার ব্যক্তিস্বার্থে ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে করা রাস্তাটি বন্ধ করে দিয়েছে এতে এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগে পড়েছে। জনস্বার্থে রাস্তাটি খুলে দেয়ার জন্য আমি শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছি।
শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ খোন্দকার ইমাম হোসেন জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা হয়েছে বিষয়টি তদন্তাধীন আছে।
অভিযুক্ত আবুল কালাম আজাদ জানান, ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে আমার ক্রয়কৃত জমির ওপর দিয়ে রাস্তা বানিয়ে মাটি ভরাট করা হয়েছে। আমি ইউপি সদস্যসহ কতিপয় দুষ্কৃতিকারীর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেছি।