এবার বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রী পরিবহনে নতুন ক্যারিয়ার হিসেবে অনুমোদন পেয়েছে সৌদি আরবের এয়ারলাইন্স ‘ফ্লাইনাস’। এখন থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও সৌদিয়া’র পাশাপাশি ফ্লাইনাসও হজযাত্রী পরিবহন করবে। এতে আগামীতে হজের সময় বিমান ভাড়া কমবে এবং হজযাত্রীরা স্বস্তিতে ভ্রমণ করতে পারবেন বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।
গত শুক্রবার (৬ মে) এক চিঠিতে ফ্লাইনাসকে এই অনুমোদন দেয় বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এমন সিদ্ধান্তে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)।
হাব সূত্র জানায়, আগে বিমান ও সৌদিয়াসহ অন্যান্য এয়ারলাইন্স থার্ড ক্যারিয়ার (অন্য দেশ হয়ে সৌদি যায়, এমন এয়ারলাইন্স) হিসেবে হজযাত্রী পরিবহন করতো। ফলে হজযাত্রী পরিবহনে সঙ্কট হতো না। কিন্তু ২০১২ সাল থেকে থার্ড ক্যারিয়ার বন্ধ করে দেয় সরকার। এতে ২০১৩ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত হজের ফ্লাইটের শেষ সময়ে এসে প্রতিবছরই হজযাত্রী পরিবহন সংকট তৈরি হয়। হজযাত্রীদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়।
এমন পরিস্থিতিতে ২০১৩ সালে থার্ড ক্যারিয়ার চালু করতে হাবের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে রিট করা হয়। পরে হাইকোর্ট থার্ড ক্যারিয়ার চালু করার নির্দেশনা দেন। তখন হাইকোর্টের রায় কার্যকর না করে সরকার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে হাইকোর্টের রায় স্থগিতের আবেদন করে। উচ্চ আদালতে আপিল বিভাগ এই বিষয়ে শুনানি হয় এবং দীর্ঘ শুনানি শেষে আপিল বিভাগ ২০১৬ সালে হজযাত্রী পরিবহনে থার্ড ক্যারিয়ার চালু করার নির্দেশনা দেন। কিন্তু তারপরও দীর্ঘ দিন থার্ড ক্যারিয়ার চালু হয়নি। পরে গত ১২ এপ্রিল থার্ড ক্যারিয়ার চালু করতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বরাবর চিঠি দেয় হাব। পাশাপাশি সরকারের অন্যান্য সংস্থাকেও চিঠি দেয় তারা। এরপর গত ৬ মে অনুমোদন দেয় বেবিচক।
বেবিচকের একজন কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে স্বাক্ষরিত হজ চুক্তি অনুযায়ী ২০১২ সাল থেকে বিমান বাংলাদেশ ও সৌদিয়া এয়ারলাইন্স হজযাত্রী পরিবহন করছে। এরপর থেকেই প্রতিষ্ঠান দুটি ভাড়ার ক্ষেত্রে একচেটিয়া সুবিধা ভোগ করে আসছে। এখন সৌদি আরবে হজযাত্রী পরিবহন করবে ফ্লাইনাস। এতে ভবিষ্যতে সৌদি আরবের যাতায়াত ভাতা অনেকটাই কমবে।
এ বিষয়ে হাবের সভাপতি এম শাহাদাত হোসেন তসলিম বলেন, হজযাত্রীরা এখন বিমান ও সৌদিয়া ছাড়াও বিকল্প একটি এয়ারলাইন্স ব্যবহার করে সৌদি আরবে যেতে পারবেন। এভাবে নতুন নতুন এয়ারলাইন্স যুক্ত হলে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে কম মূল্যে টিকিট বিক্রি হবে।
করোনাভাইরাস মহামারিতে সৌদি আরবের নিষেধাজ্ঞার কারণে গত দু-বছর বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশ থেকে কেউ হজে যেতে পারেননি। তবে এবার সৌদি নাগরিক সহ ১০ লাখ মুসলিমকে হজের সুযোগ দেবে দেশটি।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৯ জুলাই সৌদি আরবে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন হজে যেতে পারবেন। এর মধ্যে গত ৩১ মে হজ ফ্লাইট শুরুর সম্ভাব্য তারিখ ধরেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা।