শিরোনাম
  • ফের যে আসন থেকে নির্বাচনের সম্ভাবনা রয়েছে খালেদা জিয়ার আন্তর্জাতিক ফুটবলে যে সমস্যার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ইসরায়েল কে এই নতুন মেসি-ইয়ামাল? ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে যা বললেন ড. মুহাম্মদ ইউনুস সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন কাঠামোতে যে নতুন নির্দেশনা দিলেন প্রধান উপদেষ্টা আলুর দাম নিয়ে যে দুঃসংবাদ শোনালেন বাণিজ্য উপদেষ্টা হাইকোর্টের রায়ের স্থগিতাদেশ নিয়ে যা জানালেন আইনজীবী শিশির মনির নির্বাচন নিয়ে নতুন যে বিবৃতি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার সরকার নির্বাচন নিয়ে চাপ দিলে পদত্যাগ করবো: সিইসি শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার করলে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
  • ঢাকা কলেজের ১৮০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ

    জাগো কণ্ঠ ডেস্ক

    ২০ নভেম্বর, ২০২১ ১১:২৯ পূর্বাহ্ন

    ঢাকা কলেজের ১৮০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ

    রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী ঢাকা কলেজ ১৮১ বছরে পদার্পন করেছে। নানা আয়োজনে উদযাপিত হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির ১৮০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ উপলক্ষে বর্ণিল আলোয় সাজানো হয়েছে এ কলেজ ক্যাম্পাস।

    ‘নিজেকে জানো’ মূলমন্ত্রে পথচলা দেশের প্রথম বিদ্যাপিঠ ঢাকা কলেজ। ১৮৪১ সালের ২০ নভেম্বর প্রতিষ্ঠিত কলেজটি ১৮০ বছরের পথচলায় কালের সাক্ষী হয়ে আছে।

    ঢাকা কলেজ প্রশাসন কলেজের ১৮০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। অধ্যক্ষের কার্যালয় থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ১৯ ও ২০ নভেম্বর কলেজ প্রাঙ্গণ এবং কলেজ প্রাচীরে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হবে। একইসাথে ২০ নভেম্বর সকাল নয়টায় শিক্ষক, ছাত্র ও কর্মচারীর সমন্বয়ে আনন্দ র‍্যালি, দুপুর তিনটায় ঢাকা কলেজের খেলার মাঠে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, রাত আটটায় অনুমতি প্রাপ্তি সাপেক্ষে আতশবাজি ফুটানো হবে। ঢাকা কলেজের বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রদর্শনী স্টল এবং আলোচনাসভার তারিখ ও সময় পরবর্তীতে জানানো হবে।

    প্রায় ১৫ যুগ ধরে ঢাকা কলেজ গড়ে তুলেছে দেশের সেরা সন্তানদের। সেসব সাফল্যের হাত ধরে সময়ের সাথে সুনামের সুউচ্চ চূড়ায় গৌরবের সঙ্গে মহিয়ান এই প্রতিষ্ঠান। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের অসংখ্য গণতান্ত্রিক আন্দোলনে এই প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন।

    বর্তমানে মাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষার্থী এখানে অধ্যয়নরত। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ২০টি বিষয়ে শিক্ষাদান কার্যক্রম চালু রয়েছে। সেগুলো হলো- বাংলা, ইংরেজি, প্রাণীবিজ্ঞান, রসায়ন, গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, ইতিহাস, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, সমাজবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, পরিসংখ্যান, হিসাববিজ্ঞান, উদ্ভিদবিজ্ঞান, অর্থনীতি, আরবি ও ইসলামিক স্টাডিজ, দর্শন, আইসিটি।

    শিক্ষার্থীদের আবাসন সুবিধায় রয়েছে আটটি ছাত্রাবাস। সেগুলো হলো- উত্তর ছাত্রাবাস, দক্ষিণ ছাত্রাবাস, পশ্চিম ছাত্রাবাস, আন্তর্জাতিক ছাত্রাবাস, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস ছাত্রাবাস, শহীদ ফরহাদ হোসেন ছাত্রাবাস, দক্ষিণায়ন ছাত্রাবাস ও শহীদ শেখ কামাল ছাত্রাবাস।

    দীর্ঘদিন ধরে ১৮ জুলাইকে ঢাকা কলেজের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী হিসেবে জমকালো আয়োজনে পালন করে আসছিল প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু গত কয়েক বছর ১৮ জুলাইয়ের পরিবর্তে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হচ্ছে ২০ নভেম্বর।

    ঢাকা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আয়েশা বেগম ২০২০ সালে গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ঢাকা কলেজের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী নিয়ে বিভ্রান্তি দীর্ঘদিনের। জুলাই মাসের যে তারিখটি ধরা হয় ওই তারিখে ঢাকা ইংলিশ সেমিনারি স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেখান থেকে পরবর্তীতে ঢাকা কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। যেটি ২০ নভেম্বর। তবে আমি অধ্যক্ষ থাকাকালীন নির্দিষ্ট তারিখ ধরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করিনি। সাবেক, বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে মিলনমেলার আয়োজন করেছি কয়েকবার।

    যেহেতু প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনটি নিয়ে ভিন্ন মত রয়েছে সেহেতু একটি কমিশন গঠন করে বিষয়টি গেজেট আকারে প্রকাশ করে বিভ্রান্তি দূর করা যেতে পারে— এমনটি মনে করেন সাবেক এই অধ্যক্ষ।

    এ বিষয়ে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর নেহাল আহমেদ ২০২০ সালে গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ঢাকা কলেজ একটি প্রাচীন কলেজ হওয়ায় এর প্রতিষ্ঠা দিবস নিয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য আমাদের কাছে নেই। এমনকি কোনো গেজেটও নেই। এর আগে ভিন্ন ভিন্ন দুটি দিনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করেছিলেন সাবেক দুই অধ্যক্ষ।

    প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর বিভ্রান্তি এড়াতে ঢাকা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর মোয়াজ্জেম হোসেন মোল্লা একটি কমটি গঠন করেছিলেন। সেই কমিটি এখনো পর্যন্ত কোনো সুনির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ করে প্রতিবেদন জমা দেয়নি।

    তবে ১৮৬৮ সালে প্রকাশিত ঢাকার তৎকালীন জয়েন্ট কালেক্টর আর্থার লয়েড ক্লের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৮৩৫ সালের ১৫ জুলাই ‘ঢাকা গভর্নমেন্ট স্কুল’ নামে বাংলার প্রথম সরকারি ইংরেজি স্কুল স্থাপিত হয় ঢাকাতে। পরবর্তীতে ১৮৪১ সালের ২০ নভেম্বর কলেজ শাখার উদ্বোধন করা হয়। নাম দেওয়া হয় ‘ঢাকা কলেজ’।

    কলেজ পরিচিতি: ঢাকা কলেজ পরিচিতি সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ভারতে আধুনিক শিক্ষা বিস্তারের সাথে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও ব্রিটিশ শাসন নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনে প্রাধান্য পেত মুদ্রা পাচার ও বাণিজ্য। তবুও তারা ভারতীয়দের জন্য ১৭৮১ সালে কলকাতা মাদ্রাসা, ১৭৯১ সালে বারাণসীতে ‘সংস্কৃত কলেজ’ এবং ১৮০০ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মচারীদের জন্য ‘ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ’ প্রতিষ্ঠা করে। কিন্তু ‘চার্টার অ্যাক্ট-১৮১৩’ এর মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে ভারতীয়দের শিক্ষার প্রতি মনোযোগী হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। ১৮১৩ সালের চার্টার অ্যাক্ট ছিল ভারতীয়দের আধুনিক শিক্ষার মূল ভিত্তি। ১৮১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় হিন্দু কলেজ। এরপর প্রায় দুই দশক কেটে যায় ভারতে শিক্ষা বিস্তারের মাধ্যম ও পদ্ধতি নিয়ে নানা বিতর্কে। ১৮৩৫ সালে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য লর্ড ম্যাকলের ‘মিনিট অন এডুকেশন’- এ প্রস্তাব রাখা হয় ভারতের শিক্ষা হবে ইংরেজি ভাষায় এবং ইউরোপীয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের আলোকে। এর ফলশ্রুতিতে ভারতের গভর্নর জেনারেল লর্ড বেন্টিক ‘ইন্ডিয়ান এডুকেশন অ্যাক্ট’ প্রস্তাব করেন। এই অ্যাক্টের পরিপ্রেক্ষিতে এবং ‘জেনারেল কমিটি অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশন’ এর প্রস্তাবে সমগ্র বাংলার প্রথম সরকারি স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয় ঢাকায়। প্রতিষ্ঠাকাল ১৫ জুলাই ১৮৩৫ খ্রি.। স্কুলটি পরিচিত ছিল ’ইংলিশ সেমিনারি’ নামে। এই বিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে ঢাকা হয়ে ওঠে আধুনিক শিক্ষা বিস্তারের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। পরবর্তী সময়ে ভারতের গভর্নর জেনারেল লর্ড অকল্যান্ড ১৮৩৯ সালে শিক্ষা বিষয়ে তার বিখ্যাত Minute উপস্থাপন করেন যার প্রেক্ষিতে ১৮৪০ সালে জেনারেল কমিটি অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশন গভর্নর জেনারেলের নিকট ঢাকায় একটি কলেজ স্থাপনের প্রস্তাব করেন। প্রস্তাব অনুমোদিত হয় এবং ১৮৪১ সালের ২০ নভেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয় ‘ঢাকা সেন্ট্রাল কলেজ’ তথা ঢাকা কলেজ।
    ইংলিশ সেমিনারি স্কুল (বর্তমানে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল) ভবনের দ্বিতীয় তলায় ৩টি কক্ষ নিয়ে উপমহাদেশের অন্যতম প্রধান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা কলেজের যাত্রা শুরু হয়। স্থানীয় ‘জনশিক্ষা কমিটি’কলেজ ভবনের জমি ক্রয় করেন। ১৮৪১ সালের ২০ নভেম্বর কলকাতার বিশপ রেভারেন্ড ড্যানিয়েল কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ভবনের নকশা তৈরি করেন কর্নেল গ্যার্সটিন। ১৯৪৬ সালে ভবনের নির্মাণকাজ সমাপ্ত হয় এবং ঐ বছরের ২৫ মে ছাত্ররা নতুন ভবনে তাদের নতুন শিক্ষা জীবন শুরু করে। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং হিন্দু কলেজের শিক্ষক জে. আয়ারল্যান্ডকে প্রথম প্রিন্সিপাল নিযুক্ত করা হয়। যাত্রালগ্ন থেকেই পূর্ববঙ্গের সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকাণ্ডে নেতৃত্ব দেয়ায় এখন পর্যন্ত ঢাকা কলেজ বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

    ১৮৫৪ সালে স্যার চার্লস উড-এর ‘এডুকেশন ডেসপাচ’এর বদৌলতে ভারতীয় আধুনিক শিক্ষায় শৃঙ্খলা ও সমন্বয় তৈরি হয়। নতুন শিক্ষানীতির কারণে ১৮৫৪ সাল থেকে ঢাকা কলেজের মেধাবী ছাত্ররা সমগ্র ভারতের একমাত্র চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় কলকাতা মেডিকেল কলেজে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পায় এবং ১৮৫৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরই ঢাকা কলেজকে এর অধিভুক্ত করে নেওয়া হয়। প্রথম বছরেই বি.এ. পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য ঢাকা কলেজ থেকে ৪ জন ছাত্রকে প্রেরণ করা হয়- যদিও একজন ছাত্র এ পরীক্ষায় অংশ নেন যার নাম দীননাথ সেন। উচ্চ শিক্ষার এ যাত্রায় ১৮৭৫ সালে ঢাকা কলেজে প্রতিষ্ঠা করা হয় স্বতন্ত্র বিজ্ঞান ভবন। অতঃপর দর্শন, ইতিহাস, সাহিত্য, গণিত, আইন ও বিজ্ঞান বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে ঢাকা কলেজ হয়ে ওঠে পূর্ববঙ্গের আধুনিক শিক্ষার প্রাণকেন্দ্র-যা অব্যাহত থাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা অর্থাৎ ১৯২১ সাল অবধি। ১৯০৩ সালে ঢাকা কলেজের জন্য অবকাঠামো বিষয়ে নতুন পরিকল্পনা করা হয় এবং ১৯০৪ সালে জমি অধিগ্রহণ করে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়।
    এরই ভিত্তিতে বঙ্গভঙ্গের পর রমনা এলাকাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা নতুন ঢাকায় ১৯০৮ সালে ঢাকা কলেজ স্থানান্তরিত হয় কার্জন হল ও সংশ্লিষ্ট কয়েকটি অট্টালিকায়। এখানেই স্বতন্ত্র বিজ্ঞান ভবন, ছাত্রদের জন্য ঢাকা কলেজ হোস্টেল (প্রথমে ঢাকা হল নামে এবং বর্তমানে শহীদুল্লাহ হল নামে পরিচিত), অধ্যাপকদের জন্য চারটি বাসভবনসহ মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে ঢাকা কলেজ রূপান্তরিত হয় একটি পূর্ণাঙ্গ আবাসিক কলেজে। ইতোমধ্যে ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন-প্রদীপ জ্বালাতে ঢাকা কলেজের যে মহিমাময় ত্যাগ ও অবদান ইতিহাসে তা বিরল। বস্তুত ঢাকা কলেজের সমস্ত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি, ছাত্র, শিক্ষক, কর্মচারী, বিভিন্ন ভবন, পাঠাগার, বিজ্ঞানাগার, বই-পুস্তক ইত্যাদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রদান করা হয় বলেই ১৯২১ সালের ১৫ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় তার একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করতে পারে। কলেজের বিপুল পরিমাণ জমি ও ক্যাম্পাস, হোস্টেলসহ অন্যান্য অবকাঠামো, বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি, মেধাবী ছাত্রদের জন্য বরাদ্দ করা বিভিন্ন বৃত্তি ইত্যাদিও হস্তান্তর করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে। অন্যদিকে ঢাকা কলেজের নতুন ক্যাম্পাস নির্দিষ্ট হয় পুরোনো হাইকোর্ট ভবনে। এখানে একটি কথা উল্লেখ্য, আজকের প্রজন্মের অনেকেই জিজ্ঞেস করেন, কার্জন হলের পূর্ব পাশের সড়কটি কেন কলেজ রোড নামে পরিচিত, কারণ এ সড়কটির নামকরণ করা হয়েছিল তখন, যখন কার্জন হল ছিল ঢাকা কলেজ। ১৯৪৩ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আহত সৈনিকদের পুনর্বাসনের জন্য হাইকোর্টের কলেজ ভবনটি ছেড়ে দিতে হয়। তখন কলেজটি লক্ষীবাজারে অবস্থিত ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজে (বর্তমান সরকারি কবি নজরুল কলেজ) স্থানান্তর হয়। পরবর্তীকালে লক্ষীবাজার থেকে সিদ্দিক বাজারে অবস্থিত মরহুম খান বাহাদুর আব্দুল হাই এর একটি ব্যক্তিগত ভবনে কলেজের দাপ্তরিক ও একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এছাড়া কয়েকটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে কলেজের হোস্টেল তৈরি করা হয়। ১৯৫৫ সালে বর্তমান ক্যাম্পাসে নতুন অবকাঠামোয় নতুনরূপে শুরু হয় ঢাকা কলেজের অভিযাত্রা।
    নৈসর্গিক সৌন্দর্যের এক অপার লীলাভূমি ঢাকা কলেজ ১৮.৫৭ একর জমির উপর অবস্থিত। এর সম্মুখভাগে রয়েছে সুদৃশ্য বাগান, লন টেনিস ও বাস্কেটবল খেলার মাঠ। পশ্চিম প্রান্তে রয়েছে ৮টি ছাত্রাবাস ও মসজিদ। কলেজের মূল ভবনের পেছনে এবং ছাত্রাবাসের সম্মুখে রয়েছে ২টি বিশাল খেলার মাঠ ও একটি পুকুর। পুকুরের পাড়ে কলেজের ক্যান্টিন ও জিমনেসিয়াম। পূর্ব-দক্ষিণ প্রান্তে অর্থাৎ প্রধান গেটের সামনেই শহিদ মিনার, আইসিটি ভবন, উদ্ভিদবিদ্যা ভবন, অধ্যক্ষের বাসভবন ও শিক্ষকদের জন্য একটি আবাসিক ভবন। এছাড়া শহীদ মিনারের পাশেই সদ্য নির্মিত হয়েছে একটি ১০ তলা একাডেমিক ভবন।
    ‘কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান’‘ব্যবসায় শিক্ষা’এবং ‘বিজ্ঞান’অনুষদের অধীনে ১৯টি বিভাগ রয়েছে ঢাকা কলেজে। ১৯টি বিভাগেই স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর কোর্স চালু আছে। ২০১০ সালের ১ আগস্ট থেকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি [ICT] বিষয়ে স্নাতকোত্তর ছাত্রদের জন্য ননক্রেডিট কোর্স চালু আছে। অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষসহ বিভিন্ন বিভাগে ২২০ জন শিক্ষক আছেন। কর্মরত শিক্ষকদের মধ্যে অনেকেই পিএইচডি ও এমফিলসহ অন্যান্য উচ্চতর ডিগ্রিধারী। ঢাকা কলেজে অনেক খ্যাতিমান পণ্ডিত ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপনা করেছেন। ঢাকা কলেজের অনেক শিক্ষার্থী স্ব স্ব ক্ষেত্রে অবদানের জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ জাতীয় ও ছাত্র আন্দোলনসমূহে ঢাকা কলেজের অবদান অপরিসীম। ১৯৬২ সালের গণবিরোধী শিক্ষানীতি বাতিল আন্দোলন এবং ১৯৬৯ ও ১৯৯০-এর গণঅভ্যুত্থানে এ কলেজের ছাত্র-শিক্ষকগণ স্মরণীয় ভূমিকা পালন করে নজির স্থাপন করেছেন। উচ্চ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি সফল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঢাকা কলেজ নিরন্তর অবদানে সগৌরবে সমুজ্জ্বল।




    শিক্ষা - এর আরো খবর

    এইচএসসির ফল প্রকাশ হতে পারে ১৬ অক্টোবর

    এইচএসসির ফল প্রকাশ হতে পারে ১৬ অক্টোবর

    ২০ নভেম্বর, ২০২১ ১১:২৯ পূর্বাহ্ন

    ডাকসু নির্বাচন নিয়ে যা বললেন উপাচার্য

    ডাকসু নির্বাচন নিয়ে যা বললেন উপাচার্য

    ২০ নভেম্বর, ২০২১ ১১:২৯ পূর্বাহ্ন