করোনার সংক্রমণ কমে আসায় মাধ্যমিক স্তরের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান এ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে পুরোদমে শুরু হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
তিনি শুক্রবার রাজধানীর শুলশানের রেনেসাঁ হোটেলে ইন্ডিয়ান হাইকমিশনের আয়োজনে ‘স্টাডি ইন ইন্ডিয়া’ এডুকেশন ফেয়ার উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা জানান ।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করছি এই মাসের মাঝামাঝি সময়ে মাধ্যমিকে পুরোদমে ক্লাস শুরু করতে পারবো। আমরা তো ধারাবাহিক মূল্যায়নে যাচ্ছি। শিক্ষার্থীদের জন্য অ্যাসাইনমেন্ট দরকার হলে দেবো।
চলতি বছরের শুরুর দিকে নতুন করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি ও নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে ২১ জানুয়ারি বন্ধ ঘোষণা করা হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ওমিক্রনের দাপট নিয়ন্ত্রণে আসার পর দুই ডোজ কোভিড টিকা পাওয়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে ২২ ফেব্রæয়ারি থেকে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরাসরি ক্লাস শুরু হয়।
তবে সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় মধ্যমিক পর্যায়ে সপ্তাহের সবদিন ক্লাস রাখা হয়নি। শ্রেণিভিীত্তক রুটিনে সীমিত রুটিনে সীমিত সংখ্যায় ক্লাস হচ্ছে ষষ্ঠ থেকে এসএসসি পর্যন্ত।
মাধ্যমিকে এসএসসি পরীক্ষার্থী ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে প্রতিদিন ক্লাস করলেও সব বিষয়ের ক্লাস হচ্ছে না তাদের। এসএসসি পরীক্ষার্থী চারটি এবং দশমে তিনটি বিষয়ে ক্লাস হচ্ছে। এছাড়া অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে সপ্তাহে দুই দিন তিন বিষয়ে এবং ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে একদিন তিন বিষয়ের ক্লাস হচ্ছে।
এদিকে গত ২ মার্চ থেকে প্রাথমিক পর্যায়ের শ্রেণিকার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয়েছে। তবে প্রাক-প্রাথমিকের ক্লাস ২০ মার্চ থেকে শুরুর পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।
এরই ধারাবাহিকতায় খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে মাধ্যমিকের পাঠদান স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী।
পুরোদমে ক্লাস শুরু হলে 'বেøন্ডেড এডুকেশন' কীভাবে চলবে- এমন প্রশ্নে উত্তরে মন্ত্রী বলেন, আমরা নীতিমালা তৈরি করছি। ২৬ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর কাছে সেটা তুলে দেওয়ার কথা রয়েছে, এজন্য কার্যক্রম চলছে। সেটা হয়ে গেলে ঠিক করব কীভাবে, কোথায়, কখন প্রয়োগ করব।
সেক্ষেত্রে আমাদের অনেক প্রস্তুতি নিতে হবে। আমরা যে অনলাইন ক্লাস করছি সেটা সেই অর্থে পুরো ব্লেন্ডেড এডুকেশন না।
একইসঙ্গে সরাসরি ও অনলাইন ক্লাসের মিশ্র পদ্ধতিকে বলা হচ্ছে বেøন্ডেড এডুকেশন। সেজন্য শ্রেণিকক্ষগুলোকে সেভাবে তৈরি করতে হবে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রশিক্ষণ চলছে, এটা আরও দিতে হবে। কাজেই এই মুহূর্তে সব কাজ হয়ে যাচ্ছে তা কিন্তু না।
মহামারীর কারণে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়ায়, বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষাও সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে হওয়া যৌক্তিক বলে মনে করেন শিক্ষামন্ত্রী।
তিনি বলেন, যেখানে আমরা পুনর্বিন্যাস করে এইচএসসি পরীক্ষা নিয়েছি, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ভর্তি পরীক্ষাটাও সেই পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে হওয়া উচিৎ, সেটাই যৌক্তিক। ভর্তি পরীক্ষা বিষয়ে সরকারের চিন্তাভাবনা নিয়ে ইউজিসির সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে দীপু মনি বলেন, স্বাস্থ্য শিক্ষা সচিবের সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি বলেছেন, বিষয়টা দেখবেন।
এর আগে মন্ত্রী ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টল পরিদর্শন করেন। স্টলগুলোতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সংশ্লিষ্টরা সে বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পরিবেশ, সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরেন।
এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ভারতের শিক্ষার্থীরা যদি বাংলাদেশ পড়তে আসে আর বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা যদি ভারতে পড়তে যায়, তাতে দুই দেশের জ্ঞান বিনিময়ের পাশাপাশি সম্পর্ক আরও জোরদার হবে। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাই কমিশনার শ্রী বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী।