চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নে ‘চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ এর ভূমি অধিগ্রহণ বিষয়ে দুর্নীতির যে প্রসঙ্গ এখন আলোচনার ঝড় বইছে এটিতে ডা. দীপু মনি পরিবারের কেউ জড়িত নন বলে জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা। তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নির্ধারিত জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে জমির মূল্য নির্ধারণ জমির মালিকের করার সুযোগ নেই। জেলা প্রশাসকই ১৯৩ কোটি ও ৫৫৩ কোটি টাকা প্রাক্কলন তৈরী করেছেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যাচারের প্রতিবাদে চাঁদপুর প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়। বুধবার (২৬ জানুয়ারি) বিকেলে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জেলা আওয়ামী লীগের একাংশ।
এতে লিখিত প্রতিবাদ পাঠ করেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ¦ মো. ইউসুফ গাজী।
তিনি বলেন, বিগত ১৩ বছরে ডাঃ দীপু মনি এমপির নির্বাচনী এলাকায় বহু সরকারি স্থাপনা নির্মিত হয়েছে এবং এ সকল স্থাপনার জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। চাঁদপুরে কোন অধিগ্রহনকৃত জমিতে কোথাও কখনো ডা. দীপু মনি বা তার পরিবারের কোন জমি কখনো ছিল না। তার উদ্যোগে চাঁদপুর ও হাইমচরে স্থায়ী বাধ নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে জমির মূল্য শতাংশ প্রতি ৫ হাজার টাকা থেকে কয়েক লক্ষ টাকায় উন্নীত হয়েছে। সরকারের নিকট হতে ক্ষতিপূরণ লাভের আসায় বা অন্য কোন উদ্দেশ্যে সেখানে ডা. দীপু মনি বা তার পরিবারের কোন জমি ক্রয় করেননি।
গত ১৩ বছরে নিয়োগে, কোন টিআর, কাবিখা বিতরণে কোন প্রকল্পের টেন্ডার পক্রিয়া বা অন্য কোন কার্যক্রম ডা. দীপু মনি তার পরিবারের অস্বচ্ছতা বা অনিয়ম কোন দিন ছিল না। এ বিষয়ে জেলার সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাসহ জেলার রাজনৈতিক সামাজিক, সাংকৃতিক ও ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ জনগণ অবগত আছেন। কি উদ্দেশ্যে হঠাৎ করে ডা. দীপু মনিকে অসৎ প্রতিপন্ন ও হেয় করবার চেষ্টা করা হচ্ছে তা খতিয়ে দেখার প্রয়োজন। যে বা যারা কোন কোন গনমাধ্যম বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ডা. দীপু মনি বা তার পরিবারকে জড়িয়ে জঘন্য মিথ্যাচার করছে তাদের উদ্দেশ্যে উৎঘাটিত হওয়া অতিব জরুরি।
এটি শুধু ডা. দীপু মনির সততাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা নয়, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রশাসন ও রাজনীতিকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার কিংবা শেখ হাসিনা সরকারকে অপদস্থ করার ঘৃণ্য অপচেষ্টা বলেও অনেকেই আশঙ্কা করছেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত হননি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল। তাদের দু’জনকে এই মিথ্যাচারের প্রতিবাদে উপস্থিত হওয়ার জন্য জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বাসায় পাঠানো হয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসডু পাটওয়ারী, মুজিব পাটওয়ারী ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ানকে। তিন দিন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কোন সাড়া না দেয়ার কারণে আওয়ামী লীগের একাংশ এই সংবাদ সম্মেলন করেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইউসুফ গাজী বলেন, দলের যুগ্ম সম্পাদকের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের বিষয়ে যার কাছে অভিযোগ করব, তিনি আমাদের জেলা সভাতি নাছির উদ্দিন আহমেদ। তিনি নিজেই এই মিথ্যাচারে অংশ নিয়ে গনমাধ্যমে বক্তব্য দিয়েছেন। তাই আমরা প্রয়োজনে সময়মত কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করব এবং দলীয়ভাবে বিষয়টি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আবেদন করব।
প্রেসক্লাবের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন মিলনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ ফেরদৌসের সঞ্চালনায় লিখিত বক্তব্যের বিষয়ে প্রশ্ন করেন প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কাজী শাহাদাত, শরীফ চৌধুরী, শহীদ পাটওয়ারী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশা, এএইচএম আহসান উল্যাহ, সাংবাদিক শাহাদাত হোসেন শান্ত, আল-ইমরান শোভন, আলম পলাশ, কাদের পলাশ, মো. ইব্রাহীম রনি, বোরহানউদ্দিন ডালিম, মিজান লিটন ও কে এম মাসুদ(রুটি মাসুদ) প্রমূখ।
আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।