মানিকগঞ্জে ফুটপাত দখল কারীদের নিকট থেকে রাজনীতিবিদ, পুলিশ ও সাংবাদিকদের মত ভিআইপি ব্যক্তিদের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ করলেন মানিকগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এম এ সিফাত কুরাইশী সুমন।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকেলে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান কালে তিনি এসব কথা বলে।
তিনি বলেন, ফুটপাতে হাজার হাজার দোকানপাট গড়ে উঠেছে। শুধু বাসস্ট্যান্ড নয়, গোটা শহরের ফুটপাত এখন হকারদের দখলে। এসব অবৈধ দখলদারদের নিকট থেকে প্রতিদিন টাকা তোলা হচ্ছে। আমরা তুলছি। আমাদের নেতারা তুলছে। প্রশাসন, পুলিশ, সাংবাদিক ও বিশেষ রাজনৈতিক নেতা নামে এই টাকা তোলা হয়। এমনিতেই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত। তার ওপর লোক দেখানো অভিযানের নামে গরিব মানুষের উপর অত্যাচার করলে আমরা মেনে নেব না।
অভিযান কারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা অভিযান বন্ধ করুন।গরিব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের উপর আর অত্যাচার করবেন না।
অভিযানকারীদের সাথে বাক-বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, হকার মার্কেটে দোকান বরাদ্দের নামে কোটি কোটি টাকা হাতে নিয়েছে মানিকগঞ্জ পৌর কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘদিনেও তারা কাঙ্খিত দোকান বুঝে পায়নি। তাই বাধ্য হয়ে ফুটপাতে দোকান-পাট করে কোনরকমে সংসার চালাচ্ছেন শত শত নিম্ন আয়ের মানুষ।
তিনি আরো বলেন, হকারদের বৈধভাবে ব্যবসা করার সুযোগ করে দিন।
ছাত্রলীগ সভাপতি ও অভিযানকারীদের মধ্যকার বাগবিতণ্ডের ঘটনাটি রীতিমতো 'টক অফ দা টাউনে' পরিণত হয়।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ব্যাপক তোলপার সৃষ্টি হয়।
জানা গেছে, আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে পথচারীদের নির্বিঘ্নে যাতায়াত ও ক্রেতাদের কেনাকাটা সুবিধার্থে মানিকগঞ্জ পৌর কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার দুপুরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চালায়। অভিযানে শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
সদর উপজেলা সরকারি কমিশনার (ভূমি)জহিরুল আলমের নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযানে উপস্থিত ছিলেন মানিকগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র (কাউন্সিলর) তসলিম হৃদয়, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর সুলতানা আক্তার সহ জেলা পুলিশের কর্মকর্তাবৃন্দ।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে দেখা যায় উচ্ছেদ অভিযানের আধা ঘন্টার মধ্যেই পুনরায় হকারদের দখলে চলে যায় ফুটপাত।
একাধিক ফল বিক্রেতা জানান, পৌর কর্তৃপক্ষ আমাদের জন্য স্থায়ী ব্যবসার ব্যবস্থা না করে উল্টো উচ্ছেদের নামে হয়রানি করছে। ঈদের আগে এ ধরনের উচ্ছেদ অভিযানে আমরা সর্বস্ব হারিয়ে পড়তে বসেছি। পরিবার পরিজন নিয়ে আমরা কিভাবে সংসার চালাবো?
এ বিষয়ে প্যানেল মেয়র তসলিম হৃদয় বলেন, আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে শহরকে যানজট মুক্ত করার লক্ষ্যে এবং জনদুর্ভোগ লাগবে বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
পৌর কর্তৃপক্ষের নামে চাঁদা আদায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পৌরসভার কোন দায়িত্বশীল ব্যক্তি যদি টাকা পয়সা আদায় করে থাকে, তাহলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মানিকগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হাবিল হোসেন বলেন, বিষয়টি পৌর কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব।