দীর্ঘ প্রায় দেড় মাস আত্মগোপনে থাকার পর চাচার জানাজায় অংশ নিতে প্রকাশ্যে এলেন সম্প্রতি পদত্যাগ করা তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান এমপি।
শনিবার বেলা ১১টার দিকে নিজের নির্বাচনী এলাকা জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে গিয়ে চাচার জানাজায় অংশ নেন তিনি।
জানা গেছে, জামালপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুর রহমান তালুকদার (৭৫) শুক্রবার রাত ১০টায় সরিষাবাড়ী উপজেলা পরিষদ-সংলগ্ন বীরধানাকা এলাকার বাসায় বার্ধক্যের কারণে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর বাড়ি উপজেলার আওনা ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামে। তিনি সম্পর্কে জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনের সাংসদ মুরাদ হাসানের চাচা।
সূত্রমতে, চাচার জানাজায় অংশ নিতে শনিবার বেলা ১১টায় সাংসদ মুরাদ হাসান বড় ভাই বিচারপতি মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে সরিষাবাড়ীতে পৌঁছান। প্রথমে তিনি প্রয়াত চাচা আমিনুর রহমান তালুকদারের উপজেলা পরিষদ-সংলগ্ন বাসায় যান। সেখানে কিছু সময় অতিবাহিত করার পর দুপুর ১২টায় সরিষাবাড়ী কলেজ মাঠে আমিনুর রহমানের প্রথম জানাজায় অংশ নেন। এরপর সাংসদ নিজ গ্রাম দৌলতপুরে যান। সেখানে পৌঁছালে কর্মী-সমর্থকেরা ভিড় করেন।
জোহরের নামাজের পর দৌলতপুরের মতিয়ার রহমান তালুকদার কলেজ মাঠে আমিনুর রহমানের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সাংসদ সেখানে চাচার মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। সেখানে তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার প্রদান শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। পরে বিকেলে নিজ বাড়ির বৈঠকখানায় দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন সাংসদ মুরাদ হাসান।
এ সময় তিনি বলেছেন, আগামী দিনগুলোতে তিনি ভালো মানুষ হয়ে চলতে চান। তিনি সবার কাছে দোয়া চান যেন আল্লাহ তাঁকে ক্ষমা করেন। নেতা-কর্মীদের ভালোবাসা নিয়ে তিনি বাকি সময়টুকু কাটাতে চান।
বিকেল সাড়ে ৪টায় সাংসদ মুরাদ হাসান ঢাকায় ফেরেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে ফোনালাপ ফাঁস ও নানা বিতর্কের মুখে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গত ৭ ডিসেম্বর প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন ডা. মুরাদ হাসান। ৯ ডিসেম্বর রাতে তিনি কানাডার উদ্দেশে রওনা দেন। তবে সে দেশে ঢুকতে না পেরে ১১ ডিসেম্বর তিনি দেশে ফেরেন। এরপর থেকেই তেমন একটা প্রকাশ্যে আসেননি জামালপুর-৪ আসনের এ এমপি।
এক পর্যায়ে গত ৬ জানুয়ারি জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ‘৯৯৯’ এ ফোন করে ডা. জাহানারা এহসান তার স্বামী ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করেন। পরে ধানমন্ডি থানা পুলিশ সেখানে যাওয়ার আগেই বাসা থেকে বেরিয়ে যান মুরাদ হাসান। ঘটনাস্থলে গিয়ে ডা. মুরাদকে পায়নি পুলিশ। কয়েকদিন পর ডা. মুরাদ হাসান ও তার স্ত্রী নিজেদের বৈধ অস্ত্রগুলো ধানমন্ডি থানায় জমা দেন।