সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়া ঢাকা কে নিয়ে নানা ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। এসব ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করে ঐতিহ্যবাহী এ মাদরাসাকে বাঁচাতে দেশবাসীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন তারা। সম্প্রতি গণমাধ্যমে পাঠানো এক চিঠিতে এ আহবান জানানো হয়।
নিচে চিঠিটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়া ঢাকা কে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন।
প্রিয় দেশবাসী!
আস সালামু আলাইকুম।
আপনারা জানেন শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও আধুনিক সভ্যতার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র রাজধানী ঢাকার ঐতিহাসিক ভাষা শহীদদের স্মৃতি বিজড়িত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের অদূরে বুয়েটের পাশে অবস্থিত বকশিবাজারে "সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়া ঢাকা"একটি প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৭৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত কলকাতা আলিয়া মাদরাসার অর্ধাংশ ১৯৪৭ সালে ভাগ হয়ে পাকিস্তানের পূর্বাংশ পূর্ব পাকিস্তানে স্থাপিত হয়।
প্রায় ২৫০ বছরের ঐতিহ্যবাহী আলিয়া মাদরাসাটি আজ সরকারের মধ্যে লুকিয়ে থাকা ইসলাম ও মাদরাসা বিদ্বেষী এবং নাস্তিকদের নগ্ন হস্তক্ষেপে বন্ধ হওয়ার পথে।
ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় পদক্ষেপ সমূহ :
১. ইতোমধ্যে মাদরাসা ছাত্রাবাস থেকে ছাত্রদের জোরপূর্বক বের করে দেয়া হয়েছে।
২. হোস্টেল সুপার ও সহ-সুপারদ্বয়কে বের করে দেয়া হয়েছে।
৩. ক্লাস বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
৪. একাডেমিক প্রধান 'হেড মাওলানা' প্রফেসর আব্দুল মান্নান সাহেব, হোস্টেল সুপার মাওলানা মোস্তফিজুর রহমান সাহেব এবং আরও কয়েকজন শিক্ষককে ওএসডি করা হয়েছে।
৫. মাঠের একাংশে জেলারের বাসভবন, একাংশে আদালত এবং মাঠের বাকি অংশ ঢাকা সিটি কর্পোরেশন (দক্ষিণ) দেওয়াল নির্মাণ করে দখলে নিয়েছে।
৬. মাদরাসার একাডেমিক ভবনের সামনের অংশে শিশু পার্ক তৈরি করা হয়েছে।
"সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়া ঢাকা" এর আকুতি:-
"আমি আলিয়ার গর্ভে ধারণ করা আমার প্রিয় সন্তানদের বলছি - আমি মরতে বসেছি, তোমরা কে কোথায় আছো জানিনা! আমার আকুতি তোমাদের কাছে পৌছবে কি না তাও জানি না! আমার জীবনে এতো বড়ো আঘাত আসবে তা কোন দিন ভাবিনি! বিশেষ করে ৯৫% মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশের মাটিতে ! আমি বাঁচতে চাই, কিয়ামত পর্যন্ত বাঁচতে চাই। হাসরের মাঠে তোমাদের জন্য আল্লাহ্র নিকট সুপারিশ করতে চাই। এবার তোমরাই ভাবো, আমাকে বাঁচাতে তোমরা কী করবে কিভাবে করবে"
ইসলাম প্রিয় সচেতন দেশবাসী!
ভাইয়েরা, সরকার বলেছে:- তারা আলিয়া মাদরাসা প্রাঙ্গনে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের ভবন করবে। মনে রাখবেন এটি সুদূর প্রসারি ষড়যন্ত্রের সূচনা ! অধিদপ্তরের ভবন নির্মানের জন্য ঢাকা শহরের আর কোথাও কি নিষ্কণ্টক জমি নেই? সেই সব খালি স্থানে অধিদপ্তরের ভবন নির্মাণ না করে আল্লামা কাশগরী (র.) হল প্রাঙ্গণে তৈরির হঠকারী সিদ্ধান্তে প্রমাণিত হয় এটা দ্বীনি শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের এজেন্ডা বাস্তবায়নের মিশন। এদেশের শান্তিপ্রিয় মুসলিম মিল্লাত তা কোন দিনই হতে দেবে না। ইনশাআল্লাহ!
আসুন, আলিয়ার সাবেক ছাত্ররা আমরা যে যেখানে আছি সাধ্যমত চেষ্টা করি, বর্তমান ছাত্রদের সাথে একাত্মতা পোষণ করে ইস্পাত দৃঢ় বাঁধার প্রাচীর তৈরি করি।
আমাদের দাবী :
১. মাদরাসার জমিতে শিক্ষা অধিদপ্তর স্থাপন করা যাবে না।
২. আলিয়া মাদরাসার দখলকৃত সকল জমি ফেরত দিতে হবে।
৩. অধ্যক্ষকে প্রত্যাহার করে তার দূর্নীতির তদন্ত ও বিচার করতে হবে।
৪. অবিলম্বে হল খুলে দিতে হবে।
৫. ছাত্রদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা তুলে নিতে হবে।
৬. জেলখানার পরিত্যক্ত জমি আলিয়া মাদরাসার নামে বরাদ্দ দিতে হবে।
৭. আলিয়া মাদরাসার উন্নয়নে- সমৃদ্ধ লাইব্রেরী, আরও বিষয় অনুমোদন, বহুতল একাধিক হল নির্মাণ করতে হবে।
৮. কলকাতা আলিয়ার মতো ঢাকা আলিয়াকে একটি ইসলামি আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তর করতে হবে ।
উদাত্ত আহ্বানে
প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীবৃন্দ।’