বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর, সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, ২০০৬ সালে ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগ লগি বৈঠা নিয়ে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের উপর হায়েনার মতো ঝাপিয়ে পড়ে। তারা সাপের মতো পিটিয়ে মানুষ হত্যা করে। আমরা এর প্রতিশোধ নিবো; তবে হত্যার প্রতিশোধ হত্যা দিয়ে নয়; তাঁরা যে কারণে শহীদ হয়েছেন, আল্লাহর জমিনে আল্লাহর আইন ও সৎ লোকের শাসন কায়েমের মাধ্যমে এর প্রতিশোধ নিবো ইনশাআল্লাহ। তাঁদের প্রতি ফোটা রক্ত বৃথা যেতে দিবো না।
তিনি বলেন, কেয়ারটেকার সরকার ছাড়া বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হতে পারবে না। আমরা মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
শনিবার দুপুর ২টায় রাজধানীর মতিঝিলের আরামবাগ মোড়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আয়োজিত মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নুরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে মহাসমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের, সাবেক এমপি মাওলানা শামসুল ইসলাম। ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাছুম। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি এ এইচ এম হামিদুর রহমান আজাদ, মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আমীর আব্দুর রহমান মুসা, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান পলাশ প্রমূখ।
মহাসমাবেশ যৌথভাবে পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
মহাসমাবেশ বেলা ২টায় শুরু করার কথা থাকলেও সকাল ৮টা থেকেই নেতাকর্মীরা আরামবাগ এলাকায় আসতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ফকিরাপুল থেকে ইত্তেফাক মোড়, দৈনিক বাংলা, কমলাপুর পর্যন্ত কানায় কানায় ভরে যায়। সকাল ১১টা থেকে স্থানীয় নেতাদের বক্তব্য, দেশাত্মবোধক গান, ইসলামী ও দলীয় সংগীত চলতে থাকে।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান তাঁর বক্তব্যে আরো বলেন, সৃষ্টি যার আইন চলবে তাঁর। মানুষের মনগড়া সকল মতবাদ বাদ দিয়ে আল্লাহর আইন চালু করবো, ইনশাআল্লাহ। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। রাসূল (সা:) মদীনায় যেভাবে ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করেছিলেন, তার আদলে এই দেশে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হবে। কুরআনের নিদের্শনার আলোকে ইসলামী কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হবে। আমরা এর মাধ্যমে মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চাই।
জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমীর বলেন, কেয়ারটেকার সরকার ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। কেয়ারটেকার ব্যবস্থা ছাড়া দেশে নির্বাচন হতে দিব না। জীবন দিয়ে হলেও তা প্রতিহত করবো।
উল্লেখ্য, সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা, আমীরে জামায়াত ডা: শফিকুর রহমানসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মী এবং ওলামা-মাশায়েখের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসার দাবিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে গত সোমবার এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।