করোনা সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হচ্ছে না, বরং যেভাবে চলছে সেভাবে সীমিত পরিসরেই ক্লাস চলবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
সোমবার (১০ জানুয়ারি) সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমরা যে সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করেছিলাম, বর্তমানে করোনা সংক্রমণের হার প্রায় একইরকম। তবে সে সময়ের চেয়ে এখনকার পরিস্থিতি অনেক ভাল এজন্য যে, এখন ব্যাপক সংখ্যক শিক্ষার্থী টিকার আওতায় এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের প্রায় ৯৫ ভাগ শিক্ষার্থী টিকা নিয়েছেন। এছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়েরও অনেক শিক্ষার্থী টিকার আওতায় এসেছে। বাকিদেরও দ্রুত টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাই এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হবে না। স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি জোরদার করা হবে।
রোববার রাতে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটির সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের বৈঠকের বিভিন্ন বিষয় উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, সাতদিন পর আমরা আবার বসব। আমরা সবসময়ই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করব। যদি কখনো মনে হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে হবে, তখন বন্ধ করে দিব।
শিক্ষার্থীদের টিকা কার্যক্রম প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এখনও টিকার বাইরে থাকলেও আশাকরি দ্রুত সারাদেশে তাদের টিকা দেওয়া সম্ভব হবে। সেই উদ্যোগ আমরা নিচ্ছি।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, সারা দেশে ১২-১৮ বছর বয়সের মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক কোটি ১৬ লাখ ২৩ হাজার ৩২২জন। এরমধ্যে প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে ৪৪ লাখ শিক্ষার্থীর। দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে ৪ লাখ ১৯ হাজার ৫৫৪ জনের। একডোজও দেওয়া হয়নি ৭৫ লাখ ৫৪ হাজার ৬০৬ জন শিক্ষার্থীর।
মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টিকা ১২ বছরের বেশি বয়সের শিক্ষার্থীদের ক্লাসে আসার দরকার নেই। তারা অনলাইনে ক্লাস করবে। এছাড়া যাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেশি, যাদের বিভিন্ন অসুখ আছে তাদেরকেও বাসায় বসে অনলাইনে ও টিভিতে ক্লাস করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এছাড়া ১২ বছরের কম বয়সীরা নিয়মিত ক্লাস করবে জানিয়ে শিক্ষা মন্ত্রী বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে এখনও ১২ বছরের কম বয়সীদের টিকার বিষয়ে সেভাবে বলেনি। যদিও দুইএকটি দেশ টিকা দিয়েছে।
চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এদুটি পরীক্ষা কখন হবে তার দিনক্ষণ এখনই বলা যাবে না। পরীক্ষার প্রস্তুতি হিসেবে তাদের ক্লাস চলবে। যখন আমরা পরিস্থিতি অনুকূলে মনে করব তখনই পরীক্ষা নেওয়া হবে। তবে সেই তারিখ খুব বেশি আগে নয়, এক দেড় মাস আগে হয়তো জানানো যাবে। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসেই পরীক্ষা হবে। তবে সব বিষয়ে পরীক্ষা হবে কিনা সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এবং দুই সচিব উপস্থিত ছিলেন।