দীর্ঘদিন যাবত শিবগঞ্জ পাগলা নদীর উপর বেলী ব্রীজটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে। অন্য কোন পথ না থাকায় এ ঝুঁকিপূর্ণ ব্রীজটির উপর দিয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করতে হচ্ছে হাজার হাজার মানুষকে। সংশ্লিষ্ট বিভাগ বলছে, ব্রীজটির পাশে নতুন ব্রীজ নির্মাণের কাজ শীঘ্রই শুরু হবে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে ব্রীজের প্লেটগুলি ভেঙ্গে গেছে। এক একটি প্লেটেই একাধিক রিপিয়ারিং করা আছে। ব্রীজের দুই পাশে রেলিংগুলি অর্ধেকও নেই। ব্রীজের দুই মাথায় দুটি রড-সিমেন্টের তৈরী খুঁটি বসানো আছে আছে। স্থানীয়দের ভাষ্য এ খুঁটি দুটিই হলো যেন ভারী যানবাহন চলাচলা করতে না পারে সে জন্য বসানো হয়েছে। কিন্তু দেখা গেলো ট্রাক সহ অনেক ভারী যানবাহন চলাচল করছে। ব্রীজটির ওপর চলাচল করার সময় ব্রীজটি খুব জোরে দোল খাচ্ছে। ব্রীজটির ওপর দিয়ে যাতায়াতের সময় দাদনচক গ্রামের অটোচালক লিটন বলেন কোন উপায় না থাকায় বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছি।
একই কথা বললেন ভ্যান চালক গাজলুর রহমান, সবজি ব্যবসায়ী আকবর আলি, চকদৌলতপুর গ্রামের ভুটভুটি চালক আরমান আলি, হুমায়ুন রেজা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদের, মোবারকপুর ত্রিমোহনী গ্রামের আধাঁরে আলো বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্রের উদ্যোক্তা ও শিক্ষক (দীর্ঘদিন যাবত বিনা পয়সায় এলাকার বয়স্কদের শিক্ষা দেন) সহ প্রায় ৫০/৬০জন বিভিন্ন পেশার ও বিভিন্ন যানবাহনের চালক জানান ব্রীজটি পুন:নির্মানের ব্যাপারে দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরেই শুনে আসছি যে খুব তাড়াতাড়ি ব্রীজটির কাজ শুরু হবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
দূর্লভপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক আব্দুর রাজিব রাজু বলেন, বেলী ব্রীজটি মনাকষা,বিনোদপুর, শ্যামপুর, দূর্লভপুর,পাঁকার এক অংশের ও শাহাবাজপুর ও শিবগঞ্জ পৌরসভাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় চার লাখ মানুষ যাতায়াতের একমাত্র পথ এটি। গত তিন বছর আগে থেকেই শুনছি ব্রীজটি পুন;নির্মান হবে। আমার আমলে ব্রীজটির চার বার রিপিয়ারিং করেছি। প্লেট বসিয়েছি। দুই দিকে রড সিমেন্টের খুঁটি বসিয়েছি।ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করতে সাইনবোর্ডৃ টাঙিয়েছি। গত চার বছর ধরে শুনছি অল্পদিনের মধ্যেই ব্রীজের কাজ শুরু হবে। বর্তমান ও গত দুই মেয়াদের উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ উপজেল উন্নয়ন সভায় আলোচনাও করেছেন। কিন্তু কাজে কাজ কিছুই হয়নি। বর্তমানে ব্রীজটির উপর উঠলে নৌকার মত দোল খায়। ব্রীজের নাট বোল্টু নেই। বর্তমানে খুবই ঝুঁকি পূর্ণ। যে কোন সময় যানবাহনসহ ব্রীজটি সরাসরি নীচে বসে যেতে পারে। শিবগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী ছাবের আলি জানান ব্রীজটির টেন্ডার হয়েছে । অল্প দিনের মধ্যেই. প্রায় ৫১৯ফুট( ১৭২মিটার) ও ২৪ফুট প্রস্থ ব্রীজটির কাজ শুরু হবে। শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল হায়াত বলেন জনগণের নিরাপত্তার ব্রীজটির উপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আবারো ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে জোরালা পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে। তাছাড়া ব্রীজটি পুন:নির্মাণের কাজ দ্রæত শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় উপকৌশলী ময়েজ উদ্দিন জানান, ব্রীজটি বহুদিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে। তবে ব্রীজটির পুন: নির্মাণের ব্যবস্থা হয়েছে। চিঠি এসেছে। সামনে কিছুদিনের মধ্যেই কাজ শুরু হবে। স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা: সামিল উদ্দিন আহাম্মদ শিমুল জানান, ব্রীজটির পাশে নতুন ব্রীজ নির্মাণের জন্য প্রায় ৩৪ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ব্রীজটির টেন্ডার হয়েছে।ব্রীজটি নির্মাণের ব্যাপারে ঢাকা থেকে যাচাই বাছাইয়ের ব্যাপারে রবিবার,সোমবার ও মঙ্গলবার কাজ চলবে। যাচাই বাছাই শেষে যে ঠিকাদার কাজ পাবে তিনি খুব শীঘ্রই কাজ শুরু করবেন। কাজ চলার সময় জনগণের হয়রানী বন্ধে যাতায়াতের বিকল্প ব্যবস্থা থাকবে।