কোনদিন ভাবেনি বা কল্পনাও করিনি যে আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে পাকা বাড়ি পাবো এবং সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পাবো। কিন্তু আজ বাস্তবে পরিনত হয়েছে। আজ আমি নিজের মূল্যায়ন নিজেই বুঝতে পারছি যে দেশের জন্য যুদ্ধ করে কত বড় গৌরবের কাজ করেছি।
গত সপ্তাহে সরেজমিনে গেলে কথা হয় শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের মুজিবনগর টোকনা) গ্রামের ৭১ সালের বীর মুক্তিযোদ্ধা নিয়াজ উদ্দিনের (মুসলিম) সাথে। তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতার ৫২বছর পর একমাত্র প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার সুশাসনের অন্যতম ফসল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বীরনিবাস তৈরী করে অস্বচ্ছ মুক্তিযোদ্ধাদের আরামে বসবার করার ব্যবস্থা করে দেয়া।
পারচৌকা গ্রামের মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসরাইল আলির বিধবা স্ত্রী জরিনা বেগম জানান, স্বামী বেঁচে থাকতে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে কোন মূল্যায়ন না পেলেও স্বামী মৃত্যুর প্রায় ৩২বছর পর প্রধান মন্ত্রীর দেয়া বীরনিবাস পেয়ে মনে হচ্ছে কাল্পনিক কিছু পেয়েছি। কারন স্বামী হারোনার পর দীর্ঘ ২৫/২৬বছর ধরে পরের জমিতে খুপড়ী ঘর তুলে নাবালক ছেলেমেয়ে নিয়ে বাস করা যে কত কষ্টকর ছিল তা বলে বুঝানো সম্ভব নয়।দোয়া করি আল্লাহ যেন শেখ হাসিনাকে অনেকদিন বাঁচিয়ে রাখে এবং ক্ষমতায় রেখে সকলের সেবা করার তৌফিক দান করুক। শুুুধু এ দজনই নয়, শিবগঞ্জে প্রায় ১৩৬অস্বচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য বীর নিবাস নির্মানের কাজ চলছে।
সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১৩৬টি মধ্যে ১২টি বীর নিবাস হস্তান্তর হয়েছে। ২৪টি নির্মান কাজ শেষ হয়েছে। বাকী একশটির কাজ শুরু হয়েছে। শিবগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা অফিসার কাঞ্চন কুমান জানান ২০২২সালে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে শিবগঞ্জে ৩৫০জন অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধার আবেদনের প্রেক্ষিতে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল হায়াতকে সভাপতি ও প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসারকে সদস্য সচিব কওে গঠিত পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন সঠিক তদন্তপূর্বক ১৩৬ জনের তালিকা জেলা প্রশাসক বরাবর পাঠানো হয়। গরীব বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিধবা স্ত্রীদের নাম প্রশাসক বরাবর পাঠানো হয়।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার আরিফুল ইসলাম জানান, ২০২২সালে ২৪ আগস্ট স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা: সামিল উদ্দিন আহম্মেদ শিমুল ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল হায়াতের উপস্থিতে প্রভাত সিংহের জন্য বীর নিবাস নির্মানের শুভ উদ্বোধনের মাধ্যমে বীরনিবাসের কাজ শুরু হয়। প্রথম পর্যায়ে প্রতিটা বীর নিবাস প্রতি ১৪ লাখ ১০ হাজার ৩৮২ টাকা বরাদ্দ ধরে মোট পাঁচ কোটি সাত লাখ ৭৩হাজার ৭৫২ টাকা ব্যয়ে ৩৬টি বীর নিবাস নির্মানের কাজ শেষশ হয়েছে। ১২বীর নিবাস বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। ২৪টি কিছুদিনের মধ্যে হস্তান্তর করা হবে। তৃতীয় ও চর্তর্থ পর্যায়ে বীরনিবাস প্রতি ১৫লাখ ৫১হাজার ৪২০টাকা বরাদ্দ ধরে মোট ১৫ কোটি ৫১লাখ ৪২ হাজার টাকা ব্যয়ে একশটি বীর নিবাস নির্মানের কাজ চলছে। নির্মান কাজ শেষেআগামী জুন মাসে বীরনিবাসগুলি হস্তান্তর করা হবে।
সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বজলুর রশিদ সনু ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতির মাহবুবুর রহমান মিজান বলেন, অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের বীননিবাস নির্মান জননেত্রী শেখ হাসিনর একটি বলিষ্ঠ পদক্ষেপ এবং সফলতার মাইর ফলক। যা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হচ্ছে । শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল হায়াত বলেন মুক্তিযোদ্ধা বান্ধব প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিবাস নির্মানের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ১২টি বীর নিবাস হস্তান্তর হয়েছে। ২৪টির নির্মান কাজ শেষ হয়েছে। বাকী এক ‘শর কাজ চলছে । আশা করি আগামী জুন মাসের মধ্যে শেষ হবে।