শিবগঞ্জের বিনোদপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাবিরুদ্দিনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাত, শিক্ষকদের প্রতি অসদাচরণ, ক্ষমতার অপব্যবহার, শিক্ষকদেরকে হেনস্থ করার ষড়যন্ত্র ও হিসাব নিকাশ ঠিকমত না দেয়া, বিদ্যালয়ের মার্কেট বরাদ্দের অনিয়ম সহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধের প্রতিকার চেয়ে দুদক ও শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান ও মহাপরিচালক বরাবর ভুক্তভোগীদের করা আবেদনের প্রেক্ষিতে পৃথক পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্তের দায়িত্ব অর্পণ করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। মো:হুমায়ুর কবীর, সিনিয়র জুডিশিয়ার ম্যাজিস্ট্রেট,আমলী আদালত, শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ২৯জুলাই স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে দায়িত্ব¡ দেয়া হয়েছে শিবগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা অফিসার কাঞ্চন কুমারের ওপর। অন্যদিকে গত ২৭ আগস্ট রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের পক্ষ থেকে রাজশাহী জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের নেতৃত্বে নওগাঁ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও ও শিবগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সঠিক তদন্ত পূর্বক দ্রæত প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।তাছাড়া দুদকে করা আবেদনের তদন্ত সংশ্লিষ্ট দপ্তর নিজেই তদন্ত করবেন বলে জানা গেছে।
তারা হলেন শিবগঞ্জ উপজেলা অফিসার কাঞ্চন কুমার দাস ও যার তদন্তভার নিকট দায়িত্বভার অর্পন করা হয়েছে। তবে প্রধান শিক্ষক সাবিরুদ্দিন এ সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে এগুলিকে ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেছেন। গত ২৮মে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসমুদ্দিন সহ ৫জন শিক্ষকের সা¦াক্ষরিত রাজশাহী মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন সূত্রে জানা গেছে প্রধান শিক্ষক সাবিরুদ্দিন, ২০২৩ সালের বাগান বিক্রী বাবদ ১লাখ ৩৪ হাজার টাকা, ২৫বিঘা জমির ধান বিক্রী করা বাবদ মোটা অংকের টাকা, বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীদের পি এফ এর ১লাখ ৫০ হাজার টাকা, বিদ্যালয়ের প্রতিমাসের আপ্যায়ন খরচ বাবদ ৪০হাজার টাকা,বিদ্যালয়ের মার্কেটের দোকানের ভাড়া বাবদ ২লাখ ২২ হাজার ৩৭০ টাকা ও পুরাতন বিক্রী বাবদ প্রায় ২৫হাজার টাকা আত্মসাত করেছেন প্রধান শিক্ষক সাবিরুদ্দিন ।
অন্যদিকে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আসামুদ্দিন ১৬জনের মধ্যে ১৩জনের স্বাক্ষরিত গত ০৯-০৭-২০২৩ মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর আবেদন সূত্রে জানা গেছে গত ১৪-০৪-২০২৩ প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষে আমারা ১৬জন শিক্ষ আমাদের উৎসব ভাতা চাইলে উৎসব ভাতা দিতে অস্বীকার করে তিনি শিক্ষকদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ ও মারতে উদ্যত হয়। শুধু তাই নয় তিনি শ্ক্ষিক কর্মচারীদেও ২০২২ সালের জানুয়ারী হতে ডিসেম্বর পর্যন্ত পি এফের টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে নিজের কাছে রেখেছেন। বিদ্যালয়ের হিসাব নিকাসের জন্য উপকমিটি থাকলে তাদের কোন মূল্যায়ন না করে তিনি নিজ খুশী মত ক্ষমতা ব্যবহার করেন।
অন্যদিকে গত ৪ জুলাই বিনোদপুর ইউনিয়নের মৃত পয়গম আলির ছেলে আতাউর রহমান স্বাক্ষরিত দুদকের উপপরিচালক রাজশাহী বরাবর করা আবেদন সূত্রে জানা গেছে , ২০১৯সালে বিনোদপুর উচ্চবিদ্যালয়ের মালিকানাধীন বঙ্গবন্ধু মার্কেটের ৭৭নং দোকান ঘরের পজিশন আমাকে বরাদ্দ দিয়ে ডিড করলেও পরবর্তীতে মোটা অংকের বিনিময়ে সুমন নামে অন্য একজনকে সেই পজিশনটি ডিড করে দেয়। একই ভাবে ৮২ নং পজিশনটি জাহিরকে ডিড করে দিলেও পরে খাইরুলকে ডিড করে দেয় ,৮৩ ও ৭৬নং পজিশনদুটি হাবিবা বেগম ও মশিউর রহমানকে ডিড করে দিলেও পরে বিশু আলির নিকট ডিড করে দেয় এবং তাদেরকে দখল দেয়।
এ ব্যাপারে আতাউর রহমানে দোকানের পজিশনের জন্য গেলে তাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকী দিয়ে বিদায় করে দেয়।আবেদনে আরো বলা হয়েছে যে প্রধান শিক্ষক সাবিরুদ্দিন দুই হাত জমি সবুর আলির নিকট ১২লাখ ৫০হাজার টাকা বিক্রী করলেও ডিডে সাত লাখ টাকা উল্লেখ্য করেছেন। শুধু তাই নয় ৫৪ -৫৫ নং পজিশনদুটি ১০লাখ ৫০হাজার টাকায় বিক্রী করলেও ডিডএ সাত লাখ টাকা উল্লেখ্য করেছেন। এভাবেই তিনি বিদ্যালয়ের লাখ লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন। বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সাবেক সভাপতি সামিম রেজা বলেন আমি ২০২৩ সালের শিক্ষকদের উৎসব ভাতা ও প্রতিষ্ঠানিক ভাতা দিয়েছি। তিনি আরো জানান আমার আগের সভাপতির আমলে কোন উৎসব ভাতা ও প্রতিষ্ঠানিক ভাতা দেয়া হয়নি। তিনি আরো জনানান প্রধান শিক্ষক পুর্বেও কমিটির সাথে যোগসাজক করে বিদ্যালয়ের অনেক অর্থ আত্মসাত করেছেন। যার হিসাব আমি নিজেই তার নিকট হতে নিতে পারেনি।
এব্যাপারে প্রধান শিক্ষক সাবিরুদ্দিন তাদের আনীত অভিযোগগুলি অস্বীকার করে বলেন আমি বিদ্যালয়ের কোন টাকা আত্মসাত করিনি। বিধি মোতাবেক কমিটির মাধ্যমে হিসাব নিকাশ অনুযায়া বৈধভাবে যা খরচ হয়েছে তাই করেছি। শিক্ষকদের পি এফের টাকা, ধান কিক্রীর টাকা, বাগান বিক্রীর টাকাসহ অন্যান্য আয়ের টাকা ব্যাংকে জমা দিয়েছি তার ডকুমন্টে আমার কাছে আছে।
তিনি আরো বলেন আতাউরের নিকট হতে দোকানের পজিশন ি নয়ে কাউকে দেয়নি। তার কাছে আছে । তিনি তিনি ডিড মোতাবেক এখনো ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করেননি। বাকী তিনজনের পজিশন তাদের কাছেই আছে এবং তারা কোন অভিযোগ করেননি। তিনি আরো বলেন অভিযোগ কারীদের অবৈধভাবে নিজ স্বার্থ হাসিল না হওয়ায় তারা আমার বিরুদ্ধে একাধিক দপ্তরে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে অভিযোগ করেছেন।যা সঠিক তদন্ত হলেই বেরিয়ে আসবে ইনশাল্লাহ।
মোহা: সফিকুল ইসলাম