চলতি ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে কলেজ ও মাদরাসায় একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন আজ শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে। চলবে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। এবারো অনলাইনে ভর্তির জন্য আবেদন ও মেধা তালিকা প্রকাশ করা হবে। তিন ধাপে একাদশে ভর্তির অনলাইন আবেদন নেওয়া হবে। আর ২ মার্চ থেকে একাদশের ক্লাস শুরু হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে জারি করা নীতিমালায় দেখা গেছে, এ বছর একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রেখে অন্যান্য কোটা বাতিল করা হয়েছে। শুধু অনলাইনে ভর্তির আবেদন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫০ টাকা। নির্ধারিত ফি দিয়ে সর্বনি¤œ ৫টি থেকে সর্বোচ্চ ১০টি কলেজে ভর্তির আবেদন করা যাবে। আর শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিয়ন ফি ২২৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এবার শুধু অনলাইনের http://www.xiclassadmission.gov.bd/ মাধ্যমে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন করা যাবে। ২০১৫ সাল থেকে ঢাকা বোর্ডের মাধ্যমে কেন্দ্রীয়ভাবে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হচ্ছে।
২০১৯, ২০২০, ২০১১ সালে দেশের যে কোন শিক্ষা বোর্ড এবং বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০১৯, ২০২০ ও ২০২১ সালে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে নীতিমালার অন্যান্য বিধানাবলি সাপেক্ষে কোন কলেজ বা সমমানের প্রতিষ্ঠানে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির যোগ্য বিবেচিত হবে। এছাড়া উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চলতি বছরে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য বছরের শিক্ষার্থীরাও ভর্তির জন্য বোর্ডে ম্যানুয়ালি আবেদন করতে পারবে। বিদেশি কোন বোর্ড বা অনুরুপ কোন প্রতিষ্ঠান থেকে সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে তার সনদের মান নির্ধারণের পর ভর্তির যোগ্য বিবেচিত হবে।
ভর্তির জন্য বিজ্ঞান গ্রæপ থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রæপের যে কোন একটি, মানবিক গ্রæপ থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রæপের যে কোন একটি এবং ব্যবসায় শিক্ষা গ্রপ থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক গ্রæপের যে কোন একটিতে আবেদন করতে পারবেন। আর মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে বিজ্ঞান বিভাগে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রæপের যে কোন একটিতে এবং সাধারণ বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রæপের যে কোন একটিতে আবেদন করতে পারবেন।
জানা গেছে, ৮ জানুয়ারি থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন নেওয়া হবে। যারা পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করবে তাদেরও এ সময়ের মধ্যে আবেদন করতে হবে। পুন:নিরীক্ষণের ফল পরিবর্তিত শিক্ষার্থীদের আবেদন নেওয়া হবে ২২ জানুয়ারি ও ২৩ জানুয়ারি। ২৪ জানুয়ারি পছন্দক্রম পরিবর্তনের সুযোগ দেওয়া হবে। আর ২৯ জানুয়ারি প্রথম দফায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করা হবে।
৩০ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রæয়ারি শিক্ষার্থীদের সিলেকশন নিশ্চয়ন করতে হবে। সিলেকশন নিশ্চয়ন না করলে তাকে পুনরায় ফিসহ আবেদন করতে হবে। ৭ ও ৮ ফেব্রæয়ারি দ্বিতীয় পর্যায়ের আবেদন নেওয়া হবে। পছন্দক্রম অনুযায়ী প্রথম মাইগ্রেশনের ফল এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের আবেদনের ফল প্রকাশ করা হবে ১০ ফেব্রæয়ারি। ১১-১২ ফেব্রæয়ারি দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের সিলেকশন নিশ্চয়ন করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে সিলেকশন নিশ্চয়ন না করলে আবেদন বাতিল হবে।
১৩ ফেব্রæয়ারি তৃতীয় পর্যায়ের আবেদন নিয়ে পছন্দক্রম অনুযায়ী দ্বিতীয় মাইগ্রেশনের ফল এবং তৃতীয় পর্যায়ের আবেদনের ফল প্রকাশ করা হবে ১৫ ফেব্রæয়ারি। ১৬ ও ১৭ ফেব্রæয়ারি তৃতীয় পর্যায়ে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের সিলেকশন নিশ্চয়ন করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে সিলেকশন নিশ্চয়ন না করলে আবেদন বাতিল হবে। ১৯ থেকে ২৪ ফেব্রæয়ারি শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হবে। আর ২ মার্চ থেকে কলেজগুলোতে একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হবে।
সেশন চার্জ: একাদশে ভর্তিতে কলেজের সেশন চার্জ ও ফি নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে নীতিমালায়। মফস্বল বা পৌর (উপজেলা) এলাকার ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেশন চার্জসহ দুই হাজার ৫০০ টাকা, একই এলাকার ননএমপিও ইংরেজি ভার্সনের প্রতিষ্ঠান তিন হাজার টাকা ফি নিতে পারবে। পৌর (জেলা সদর) এলাকায় ননএমপিও প্রতিষ্ঠানে তিন হাজার টাকা এবং একই এলাকার ননএমপিও ইংরেজি ভার্সনের প্রতিষ্ঠান চার হাজার টাকা ফি নিতে পারবে। ঢাকা ছাড়া অন্য মেট্রোপলিটন এলাকায় ননএমপিও প্রতিষ্ঠানে পাঁচ হাজার টাকা এবং একই এলাকার ননএমপিও ইংরেজি ভার্সনের প্রতিষ্ঠান ছয় হাজার টাকা ফি নিতে পারবে। ঢাকা মহানগর এলাকায় ননএমপিও প্রতিষ্ঠানে সাত হাজার ৫০০ টাকা এবং একই এলাকার ননএমপিও ইংরেজি ভার্সনের প্রতিষ্ঠান আট হাজার ৫০০ টাকা ফি নিতে পারবে।
মফস্বল বা পৌর (উপজেলা) এলাকার এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেশন চার্জসহ এক হাজার ৫০০ টাকা, একই এলাকার এমপিও ইংরেজি ভার্সনের প্রতিষ্ঠান এক হাজার ৫০০ টাকা টাকা ফি নিতে পারবে। পৌর (জেলা সদর) এলাকায় এমপিও প্রতিষ্ঠানে এবং একই এলাকার এমপিও ইংরেজি ভার্সনের প্রতিষ্ঠান দুই হাজার টাকা ফি নিতে পারবে। ঢাকা ছাড়া অন্য মেট্রোপলিটন এলাকায় এমপিও প্রতিষ্ঠানে এবং একই এলাকার এমপিও ইংরেজি ভার্সনের প্রতিষ্ঠান তিন হাজার টাকা ফি নিতে পারবে। ঢাকা মহানগর এলাকায় এমপিও প্রতিষ্ঠানে এবং একই এলাকার ননএমপিও ইংরেজি ভার্সনের প্রতিষ্ঠান পাঁচ হাজার টাকা ফি নিতে পারবে। তবে, এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান কোনো উন্নয়ন ফি নিতে পারবে না।