তিনজনের শেয়ারে ১৮ বিঘা জমির একটি আম বাগান তিন বছর মেয়াদে ৩৩ লাখ টাকায় কিনে দলিল করেছি। এবার প্রথম বছর চলছে।আম উৎপাদনে শুরু থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১২ লাখ খরচ করেছি।কাটনাশক ও শ্রমিকের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় খরচ অনেক বেশী। যা অন্যান্য বছরের তুলানায় প্রায় দেড় থেকে দুই গুন। আম হতে পারে প্রায় ১২‘শ মন। বিক্রী মুল্যের লক্ষ্যমাত্রা ধরেছি ২৪ লাখ টাকা। কিন্তু কানসাট আম বাজারে আমের ওজন মণ প্রতি ৫৪/৫৫ কেজি ধরায় আম ওজনে পেতে পারি প্রায় নয়‘শ মন। সে হিসাবে প্যাকেটসহ প্রতি মণ আম উৎপাদনে খরচ হয়েছে প্রায় ১৪“শ টাকা। অথচ আমের কাঙ্খিত দর না থাকায় ও অন্যান্য কারনে লোকসানের আশঙ্কায় আছি।
সরেজমিনে কানসাট আম বাজারে ঘুরার সময় কথা হয় শিবগঞ্জ উপজেলার চকর্কীতি ইউনিয়নের চক নাধরা গ্রামের আম ব্যবাসায়ী রফিকুল ইসলাম। তিনি আরো বলেন, আম রুপালী আমের দর চেয়েছি ২৫‘শ টাকা মণ। ক্রেতা বলছে ১৭‘থেকে দুই হাজার মণ।ফজলি আমের দর চেয়েছি ১৬‘শ টাকা মণ। ক্রেতা বলছে মাত্র ১২/ ১৪‘শ টাকা মণ। আমি একজন বড় আম ব্যবসায়ী হিসাবে সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি,তারা যেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করেন।
শ্যামপুর ইউনিয়নের বাজিতপুর গ্রামের আম ব্যবাসায়ী মামলোত হোসেন জানান, এবছর আম উৎপাদনে খরচ অনেক বেশী।কারণ উৎপাদন উপকরদির দাম বেশী।যেমন ১২‘শ টাকার কীটনাশক এ বছর ১৫‘শ টাকায় কিনতে হয়েছে। স্প্রে মেশিন বাবদ গত বছর হয়েছে ১৬‘শ টাকা। এ বছর খরচ হয়েছে দুই হাজার টাকা। গত বছর একজন শ্রমিকের মূল্য ছিল ২৫০ টাকা। এ বছর দিতে হয়েছে ৩৫০ টাকা। সে হিসাবে প্যাকেট সহ এক মণ আম উৎপাদনে খরচ হয়েছে সাড়ে ১২শ টাকা থেকে ১৩শ টাকা।প্যাকেট ছাড়া একমণ আম উৎপাদনে খরচ হয়েছে পাঁচ থেকে ৬ শ টাকা। সে হিসাবে বিক্রী দর কম হওয়ায় বিশেষ করে যারা সরাসরি আম চাষী তারা লোকসান করছে। যেমন আমার আশি^না আমে প্রচুুর লোকসান হচ্ছে।কারন আশ্বিনা আমের দর বর্তমানে সাড়ে চারশ থেকে ছয় শ টাকা মন। শুধু এ দ্ইু জনই নয় কানসাট আম বাজারে সরেজমিনে ঘুরে প্রায় ২৫জন আম ব্যবসায়ীও আম চাষীদের সাথে কথা বলে একই চিত্র পাওয়া গেছে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, শিবগঞ্জে বিশেষ করে হাজার হাজার আম চাষী আমের উৎপাদন খরচ পাচ্ছে না।জানা গেছে বর্তমানে কানসাট আম বাজারে ফজলী আম মণ প্রতি ১২শ থেকে ১৪‘শ টাকা, প্যাকেট করা ফজলি আম মণ প্রতি ১৭‘শ থেকে ১৯‘শ টাকা আশ্বিনা আম মণ প্রতি সাড়ে চার শ থেকে সাড়ে ছয় ‘শ টাকা, লখনা মণ প ্রতি ১৮শ খেে ২৫শ টাকা,প্যাকেট করা ন্যাংড়া আম মণ প্রতি ২৫থেকে ২৭শ টাকা,প্যাকেট করা রুপালী, বারি ৪ আম মণ প্রতি ২২‘শ থেকে ২৮‘ শ টাকা, প্যাকেট করা রুপালী ও বারি ৪ আম মণ প্রতি ৩৫‘শ থেকে চার হাজার টাকা মণ প্রতি বিক্রী হচ্ছে।
বিশিষ্ট আম ব্যবসায়ী ও আম উদ্যোক্তা ইসমাইল হোসেন শামীম খান বলেন, পুরাতন আম বাগান ও পুরতান জাতের আম উৎপাদন করায় শিবগঞ্জের হাজার হাজার আমচাষীরা লাভবান হতে পারছে না। আধুনিক আম বাগান ও আধুনিক জাতের আম ছাড়া আম ব্যবসায়ী ও আম চাষীরা লাভবান হতে পারছে না।যারা আধুনিক আম বাগান তৈরী করে আধুনিক জাতের আম উৎপাদন করেছে তারাই লাভবান হচ্ছে।তাই আম চাষীরাকে আধুনিক জাতের আম উৎপাদনে উৎসাহ দিতে হবে।