সংবিধানের দোহায় না দিয়ে নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকার গঠন এবং অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে সংবিধান সংশোধনের আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোঃ তাহের।
তিনি শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে বাংলাদেশ জাামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আয়োজিত দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান সহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও আলেম-উলামার মুক্তি এবং নির্বাচনকালীন কেয়ারকেটার সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। দীর্ঘ ১০ বছর পর পুলিশের অনুমতি নিয়ে প্রকাশ্য এই সমাবেশ করলো জামায়াত।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটার ড. মুহা. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালায় এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ক্বারী মাওলানা বেলাল হোসাইনের কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগীয় সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন। এছাড়া মহানগর জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
ডা. আব্দুল্লাহ মোঃ তাহের বলেন, সরকার নিজেদের রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করার জন্য সংবিধানের দোহাই দিলেও আমাদের সংবিধানে অবাধ গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা ও জনগণের জানামালের নিরাপত্তার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে জনগণকে সেসব অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। অজানা কারণে সরকার এখন নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা বললেও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য দলনিরপেক্ষ সরকারের কোন বিকল্প নেই। একই দরকার সকলের জন্য লেভেল প্লেইং ফিল্ড। আওয়ামী লীগ নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা বলে ১৫৪ আসনে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচন ও দিনের ভোট রাতে করার মাধ্যমে সংবিধানের মারাত্মক লঙ্ঘন করেছে। তিনি সরকারকে টালবাহানা পরিহার করে গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তনের আহবান জানান। অন্যথায় সরকারকে জনগণ ক্ষমা করবে না।
তিনি বলেন, আমরা সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ের কথা প্রায়ই শুনে থাকি। কিন্তু বাংলাদেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করতে হলে সোনার মানুষ দরকার। জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী চাত্রশিবিরের সেই সোনার মানুষ তৈরি করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। জামায়াত-শিবিরের লোকেরা কোন প্রকার অপরাধের সাথে যুক্ত নন। শিবিরের কোন ছেলের বিরুদ্ধে কখনো ধর্ষণ, চাঁদাবাজী বা ইভটিজিং-এর অভিযোগ পাওয়া যায় না। মূলত, দেশকে কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে হলে সৎ, যোগ্য ও চরিত্রবান নেতৃত্বের কোন বিকল্প নেই। তিনি ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় জামায়াতের হাতকে শক্তিশালী করার আহবান জানান।
তিনি আরো বলেন, সরকার জামায়াতকে রাজনৈতিক ও আদর্শিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়েছে চরম দলন ও পীড়নের পথ বেছে নিয়েছে। সে ধারাবাহিকতায় বিশ^বরেণ্য মোফাসসিরে কুরআন, নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম, পরিচ্ছন্ন রাজনীতিক ও বর্ষীয়ান আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রমহান, নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী সহ শত শত আলেম-উলামাকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তিনি অবিলম্বে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান সহ সকল রাজবন্দীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন। অন্যথায় জনগণই তাদেরকে মুক্ত করে ছাড়বে-ইনশাআল্লাহ।