বর্তমান জাতীয় সংসদ ‘সম্পূর্ণভাবে অকার্য্কর সংসদ’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে বৈঠকের পর বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ৫০ বছরপূর্তির বিশেষ অধিবেশনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি এই মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, গতকালকে (শুক্রবার) পার্লামেন্টে অনেক বক্তৃতা করলেন। এমন বক্তৃতা করলেন যে, দিস ইজ দ্য বেস্ট পার্লামেন্ট। ওখানে তো হিসাব করলে খুঁজে পাবেন না, কয়টা মূলতবি প্রস্তুাব ওখানে আছে, কয়টা জনগুরুত্ব সম্পন্ন বিষয় নিয়ে ওখানে দিনের কর্মসূচি মূলতবি করে আলোচনা হয়েছে-খুঁজে পাবেন না এবং যে কথাগুলো জনগনের দাবি হিসেবে উঠে আসে মাঝে-মধ্যে সে বিষয়গুলো নিয়েও ওখানে আলোচনা হয় না।
ওখানে একজন এক নেইবো অদ্বিতীয়া.. ওখানে সেটাই হয় সব সময়। সংসদ কি অবস্থায় আছেন আপনারা ভালো জানেন। আমাদের মনে হয়, এই সংসদ সম্পূর্ণভাবে অকার্যকর ছিলো। এই সংসদ তো গ্রহণযোগ্যই ছিলো না জনগনের কাছে, এটা নির্বাচিত নয়, অনির্বাচিত সংসদ।
সংসদের বিশেষ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের ভাষনের দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা রাষ্ট্রপতিকে সন্মান করি.. তিনি রাষ্ট্রপতি। কিন্তু সাংবিধানিকভাবেই তার হাতে খুব বেশি ক্ষমতা নাই। আমাদের অতীত তো সুখকর নয়। আমরা মনে করছি যে, তিনি তার গতানুগতিকভাবে সরকারের লিখে দেয়া যে বক্তব্য সেই বক্তব্য তিনি পাঠ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘তারপরেও আমি বলব যে, ওখানে একটা কথা আছে যেটা আমার ভালো লেগেছে ব্যক্তিগতভাবে… তিনি বলেছেন যে, গণতন্ত্র উন্নয়ন সার্বজনীন হয় না। একথাটা ভালো। আরেকটা কথা তিনি বলেছেন যে, সংঘাত দিয়ে, প্রতিহিংসা দিয়ে কখনো গণতন্ত্র প্র্যাকটিস করা যায় না-এই কথাগুলো ভালো।
কিন্তু যারা প্র্যাকটিস করছেন তারা নিসন্দেহে বুঝতে পারছে যে, গণতন্ত্রের প্র্যাকটিস তো সেখানে নেই। বরং কি করে গণতন্ত্রকে ধবংস করা যায় সেটা তারা প্র্যাকটিস করছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের যে সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে জনগনকে সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে সেই সব প্রতিষ্ঠানগুলো ফিট না।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার যদি চায় যে, সংঘাত এড়িয়ে তারা সামনের দিকে যাবেন তাহলে প্রথম কাজটা করতে হবে বিরোধী দলগুলো যেটা চাচ্ছে সেই দাবি পুরন করতে হবে। অর্থাৎ পদত্যাগ করে আলোচনার ব্যবস্থা করতে হবে।
পদত্যাগ না করলে আপনারা সংলাপে যাবেন কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তাদেরকে বিশ্বাস করার প্রশ্নই উঠতে পারে না। আগে পদত্যাগ করতে হবে তারপরে সংলাপ এবং ঘোষণা দিতে হবে যে আমি পদত্যাগ করব।
জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়কারী ন্যাশনাল পিপলস পার্টি(এনপিপি) চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদের নেতৃত্বে বৈঠকে ডেমোক্রেটিক লীগ(ডিএল) সাইফুদ্দিন মনি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার একাংশের খন্দকার লুতফর রহমান, এসএম শাহাদাত, বিকল্পধারা বাংলাদেশ এর অধ্যাপক নুরুল আমিন ব্যাপারী, গণদলের এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, বাংলাদেশ ন্যাপের এমএন শাওন সাদেকী, সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টির সুকৃতি মন্ডল, এনপিপির মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা ছিলেন।
বিএনপি মহাসচিবের সাথে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান।