বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের মুসলিম উম্মার কল্যাণ কামনায় আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষ হয়েছে। এতে দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মানুষ অংশ নেন। এসময় টঙ্গীর তুরাগ তীরে ইজতেমা ময়দান ছাড়াও মানুষের উপস্থিতি আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে বিভিন্ন সামাজিক ও গণমাধ্যমে সরাসরি প্রচার দেখে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মোনাজাতে অংশ নেন বলে খবর পাওয়া গেছে। মোনাজাতের সময় ব্যাপক লোকসমাগমের কারণে আশপাশের বিভিন্ন সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
গত শুক্রবার আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তিন দিনব্যাপী প্রথম পর্বের ইজতেমার কার্যক্রম। এতে তাবলিগ জামাতের মুরব্বি যোবায়ের অনুসারী ছাড়াও সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন। তিন দিন দেশি-বিদেশি তাবলিগ মুরব্বিদের বয়ান শোনা ও ইবাদত-বন্দেগির ময়দানে সময় কাটান মুসল্লিরা। রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে এ পর্বের সমাপ্তি হলো। তবে চারদিন বিরতি দিয়ে আগামী শুক্রবার থেকে আবার দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা শুরু হবে। এতে সা‘দ কান্ধলভীর অনুসারীরা অংশ নেবেন বলে জানা গেছে।
এদিকে পবিত্র হজের পরে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় এই ধর্মীয় জমায়েত উপলক্ষে নেওয়া হয় কড়া নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক প্রস্তুতি। আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে ইজতেমা সংলগ্ন মহাসড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণসহ করা হয় বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা।
রোববার সকাল ৯টা ৫৮ মিনিট থেকে ১০টা ২০ মিনিট পর্যন্ত চলা আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন তাবলীগ জামায়াতের শীর্ষ মুরব্বি ও কাকরাইল মসজিদের ইমাম মাওলানা মোহাম্মদ জোবায়ের।
২২ মিনিটব্যাপী মোনাজাতে মাওলানা জোবায়ের প্রথম মিনিট মূলত পবিত্র কোরআনে বর্ণিত দোয়ার আয়াতগুলো উচ্চারণ করেন। শেষ মিনিট দোয়া করেন বাংলা ভাষায়। মুঠোফোন ও স্যাটেলাইট টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারের সুবাদে দেশ-বিদেশের আরও লাখ লাখ মানুষ একসঙ্গে হাত তোলেন আল্লাহর দরবারে। অনেকে বিমানবন্দর গোল চত্বর কিংবা উত্তরা থেকে আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন।
আজ আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে টঙ্গী, গাজীপুর, উত্তরাসহ চারপাশের এলাকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, মার্কেট, বিপণিবিতান, অফিসসহ সবকিছু বন্ধ রাখা হয়।
ইজতেমার আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে মুসল্লিদের বাড়ি ফেরার সুবিধার্থে রেলওয়ে বিভাগের পক্ষ থেকে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়। সব ট্রেনের যাত্রাবিরতি রাখা হয় টঙ্গি স্টেশনে।
এর আগে শনিবার মধ্যরাত থেকে মোনাজাত শেষ হওয়া পর্যন্ত ইজতেমা সংলগ্ন ঢাকা ময়মনসিংহ-মহাসড়কের চান্দোনা চৌরাস্তা থেকে আব্দুল্লাপুর, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মীরের বাজার থেকে টঙ্গী এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের আশুলিয়া থেকে কামারপাড়া পর্যন্ত যানবাহন নিয়ন্ত্রিত রাখা হয়।
আখেরি মোনাজাতের আগে ফজরের পর হেদায়েতি বয়ান করেন ভারতের মাওলানা আব্দুর রহমান।